1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রাচীন গির্জার ভগ্নস্তূপে অভিনব বসতবাড়ি

২৫ জুন ২০২১

ছিল গির্জার ধ্বংসস্তূপ, হয়ে গেল বসতবাড়ি৷ স্পেনের উত্তরে প্রকৃতির মাঝে এমন অভিনব বাসা সৃষ্টি করেছেন এক ডিজাইনার৷ মূল কাঠামো যতটা সম্ভব অক্ষত রেখে তিনি বিস্ময়কর ডিজাইন অনুযায়ী সবকিছু সাজিয়ে তুলছেন৷

https://p.dw.com/p/3vWxW
ছবি: DW

এক ঘর থেকে অন্য ঘরে যেতে হলে যদি জমি থেকে ১০ মিটার উপরের স্ল্যাকলাইন ধরে ঝুলে পড়তে হয়, তাহলে তাস কারেয়াগার কাছে পৌঁছে যাওয়া যায়৷ তিনি শিল্পীও নন, যাজকও নন, বরং এক মাল্টিমিডিয়া ডিজাইনার৷ তিনি ষোড়শ শতাব্দীর একটি অব্যবহৃত গির্জাকে মাচায় রূপান্তরিত করেছেন৷ স্পেনের উত্তরে বিলবাও শহরের কাছে সোপুয়ের্তার পাহাড়ি এলাকায় সেটি অবস্থিত৷ তাস বলেন, ‘‘এখানে আমরা প্রকৃতির কোলে জঙ্গলের মাঝে রয়েছি৷ সেটা আমাকে সবচেয়ে বেশি মুগ্ধ করে৷ সেইসঙ্গে অনবদ্য এই ভবন তো রয়েছেই৷ সকালে উঠে উঁচু সিলিং, বাঁকানো দেয়াল ও পুরানো প্রাচীর দেখতে পাই৷ ফলে এখানে আমার জীবন অভিনব বলা চলে৷’’

গির্জার ধ্বংসস্তূপে বসতবাড়ি

ভেতরের অংশে গির্জার অবয়ব স্পষ্ট চোখে পড়ে৷ আজ সেখানে উপাসনার বদলে তাস কারেয়াগা তার বান্ধবী ও কুকুরের সঙ্গে বাস করেন৷ আগে যেখানে গির্জার বেদি ছিল, আজ সেখানে রান্নাঘরের টেবিল শোভা পাচ্ছে৷ মেরি মা ও ক্রসের বদলে দেয়ালে নানা রকম শিল্পকর্ম ঝোলানো আছে৷ তাস কারেয়াগা মনে করিয়ে দেন, ‘‘এখানে যা দেখা যাচ্ছে, সে সব আসলে ১৫৩০ সালে তৈরি৷ যা কিছু ছিল, তা যতটা সম্ভব অপরিবর্তিত রাখা আমাদের কাছে জরুরি ছিল৷ সিলিংয়ের ফ্রেসকো এবং বিভিন্ন যুগের রংয়ের বিভিন্ন স্তর এখনো চোখে পড়ে৷’’

তাস কারেয়াগা নিজেই ভেতরের অংশ ডিজাইন করেছেন৷ খাবার টেবিলের মতো কিছু আসবাব তিনি নিজের হাতেই বানিয়েছেন৷ কিছু আসবাব তিনি বেশ মজা করে সাজিয়েছেন৷ যেমন ওয়াইনের বোতল রাখার জায়গা দেখলে প্রার্থনার জায়গা মনে হতে পারে৷

গত শতাব্দীর সত্তরের দশকের শেষ দিক থেকেই এই গির্জা ব্যবহার করা হয় নি৷ ফলে মূল দেয়াল ছাড়া অনেক অংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল৷ বিলবাও শহরের ক্যাথলিক কর্তৃপক্ষ তাস কারেয়াগার কাছে ভগ্নস্তূপটি বিক্রি করে দেয়৷ ২০১৬ সাল থেকে তিনি কয়েকজন স্থপতি বন্ধুর সঙ্গে সংস্কারের কাজ শুরু করেন৷ প্রকল্প শেষ করতে প্রায় তিন বছর সময় লেগেছিল৷ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তাস বলেন, ‘‘গির্জার মধ্যে পাথর ও কাঠের টুকরো পড়ে ছিল৷ সবই প্রায় ভেঙে পড়া ছাদের অংশ৷ জানতে পারলাম, দেয়ালটি প্রায় ৫০০ বছর পুরানো হলেও বেশ মজবুত রয়েছে৷ গম্বুজ ও ঘণ্টা ঘর ভেঙে দিতে হলো৷ বাকি অংশ যথেষ্ট নিরাপদ ও স্থিতিশীল ছিল৷’’

DW Euromaxx 24.04.2021 // KW 16
এই গির্জার ধ্বংসস্তূপ ঠিক করে বাড়ি বানান তাস কারেয়াগাছবি: DW

গির্জার প্রায় এক চতুর্থাংশ জুড়ে তিনি দুটি তলা সৃষ্টি করতে কাঠের কাঠামো গড়ে তুলছেন৷ মাঝে কোনো দেয়াল নেই৷ তিনটি মাত্র সরু ধাতুর দড়ির মাধ্যমে শোবার ঘরটি বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে৷ একমাত্র অতিথিদের জন্য চার দেয়ালের ব্যবস্থা রয়েছে৷ রূপান্তরিত বেল টাওয়ারেই রয়েছে গেস্ট রুম৷

নিজের কাজের ঘর থেকে তাস গোটা গির্জা দেখতে পান৷ বিপরীত দিকে আর একটি ঘর রয়েছে৷ কিন্তু একমাত্র স্ল্যাকলাইনের দড়ির উপর ব্যালেন্স করে সেখানে পৌঁছানো সম্ভব৷ তিনি বলেন, ‘‘সেই ঘরটি এখনো তৈরি হচ্ছে৷ শোবার ঘর না লাইব্রেরি হবে, তা এখনো জানি না৷ তাছাড়া কোন প্রবেশপথ তৈরি করবো, আমাদের সেটাও ভাবতে হবে৷ ততদিন পর্যন্ত ১০ মিটার উঁচু স্ল্যাকলাইন ছাড়া সেখানে পৌঁছানোর উপায় নেই৷ সবার পক্ষে সেটা সহজ নয়৷’’

তাস কারেয়াগা দাপ্তরিক কাজের মাঝে শরীরচর্চার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন৷ নিজের তৈরি মিনিব়্যাম্প তার খুব পছন্দের৷

ক্রিস্টিয়ান ভাইবেসান/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য