1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে

১ এপ্রিল ২০১৮

মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করার অভিযোগ উঠলো উত্তরবঙ্গের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে৷ ইতিমধ্যেই তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছে কলকাতায়৷ তাঁর সঙ্গে রাজনীতির যোগ থাকার অভিযোগও উঠেছে৷

https://p.dw.com/p/2vFJd
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবিছবি: Imago/Hindustan Times

অভিযোগ আগেও ছিল৷ দু-একবার বিষয়টি নিয়ে আলোড়নও হয়েছে৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি৷ ফলে অভ্যাসটি থেকেই গিয়েছে৷ আরো একবার যা প্রমাণিত হলো৷ অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের উত্তরে ময়নাগুড়ির সুভাষনগর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দিয়েছিলেন৷ ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে৷ উচ্চমাধ্যমিকের সমস্ত দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে ওই প্রধান শিক্ষককে৷

২৩ বছর আগে ময়নাগুড়ির সুভাষনগর হাইস্কুলে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন হরিদয়াল রায়৷ কিছুদিনের মধ্যেই প্রধান শিক্ষকের পদ লাভ করেন তিনি৷ অভিযোগ, সে সময় সুভাষনগর হাইস্কুলের অবস্থা খুব ভালো ছিল না৷ এলাকায় স্কুলটির বিশেষ নামডাকও ছিল না৷ কিন্তু হরিদয়াল কাজে যোগ দেওয়ার পর থেকে ক্রমশ স্কুলটি নাম করতে শুরু করে৷ মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের মেধা তালিকায় নাম আসতে শুরু করে ছাত্রদের৷ অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, তাহলে কি অসৎ উপায়েই ছাত্রদের কাছে প্রশ্ন ফাঁস করে দিয়ে এমন সাফল্য পেতেন হরিদয়াল?

অভিযোগ, এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় হরিদয়ালের প্রশ্ন ফাঁস করার বিষয়টি হাতেনাতে ধরা পড়ে যায়৷ বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছুদিন জলঘোলাও হয়৷ অভিযোগ, এলাকার তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল হরিদয়ালের৷ তিনি নিজেও তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের অংশ ছিলেন৷ যদিও প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর এলাকার তৃণমূল নেতৃত্ব হরিদয়ালের সঙ্গে নিরাপদ দূরত্ব তৈরি করেছে৷ নেতৃত্বের দাবি, দোষ প্রমাণ হলে হরিদয়ালের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত৷ বস্তুত, একই কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ তিনি জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার হরিদয়ালকে শিক্ষারত্ন পুরস্কার দিয়েছিল৷ অভিযোগ প্রমাণ হলে সেই সম্মানও কেড়ে নেওয়া হবে৷

ইতিমধ্যেই হরিদয়ালকে কলকাতায় মাধ্যমিক বোর্ডের দফতর মধ্যশিক্ষা পর্ষদে ডেকে পাঠানো হয়েছে৷ সেখানে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে খবর৷

শিক্ষাবিদরা অবশ্য অন্য প্রশ্ন তুলছেন৷ তাঁদের প্রশ্ন, একা হরিদয়ালকে শাস্তি দিলেই সমস্যার সমাধান হবে তো? তাঁদের ধারণা, রাজ্য জুড়ে এমন অনেক হরিদয়াল ছড়িয়ে আছেন৷ অর্থ এবং সম্মানের লোভে যাঁরা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে চলেছেন দিনের পর দিন৷ কিন্তু রাজনৈতিক সংস্রব থাকার কারণে তাঁদের দোষ ধরা পড়ে না৷ হরিদয়াল হাতেনাতে ধরা না পড়লে তাঁর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হতো না বলেই তাঁদের সন্দেহ৷

অন্যদিকে হরিদয়াল তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন৷ তাঁর দাবি, তিনি রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার৷

ভারতের উত্তরপ্রদেশ এবং বিহারে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া নতুন কোনো ঘটনা নয়৷ প্রতি বছরই এ ধরনের অভিযোগ সেখানে ওঠে৷ কিছুদিন আগে এ নিয়ে বহু সমালোচনাও হয়েছিল দেশজুড়ে৷ পশ্চিমবঙ্গেও এ ধরনের অভিযোগ বেশ কয়েকবার উঠেছে৷ প্রশ্ন ফাঁস হয়ে যাওয়ার কারণে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার কোনো কোনো বিষয়ে দু'বার করে পরীক্ষা নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে অতীতে৷ বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা না নিলে এবং সিস্টেমের ভেতরের ভূত তাড়াতে না পারলে এ ঘটনা চলতেই থাকবে৷

এসজি/এসিবি (আনন্দবাজার পত্রিকা, পিটিআই)