1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিচ্ছে বিশেষ রাডার

২৮ মার্চ ২০২২

২০২১ সালে ভয়াবহ বন্যায় জার্মানির কিছু অঞ্চলে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা ও হতাহতের সংখ্যা ভবিষ্যৎ সম্পর্কে গভীর দুশ্চিন্তা সৃষ্টি করেছে৷ আখেন শহরের এক গবেষক নির্ভরযোগ্য পূর্বাভাস দিতে বিশেষ রাডার ব্যবস্থা গড়ে তুলছেন৷

https://p.dw.com/p/496ZI
Thumbnail Eco India
ছবি: DW

২০১৮ সালে ইয়ুলিয়ান হোফমান যখন সাইকেলে করে আখেন শহরের কেন্দ্রস্থলে যাচ্ছিলেন, তখন আকাশে ঘন কালো মেঘ ঘনিয়ে এসেছিল৷ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘রাডারে প্রবণতা দেখেই সাইকেলে করে ইনস্টিটিউট থেকে বেরিয়ে পড়লাম৷ প্রথমে অল্প কিছু খানাখন্দে পানি জমেছিল৷ তারপর মাত্র আধ ঘণ্টার মধ্যে শহরের কেন্দ্রস্থলের বড় অংশ পানির নীচে চলে গেল৷''

হাইড্রলিক ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে হোফমান আখেন শহরের দমকল বাহিনীর মাক্সিমিলিয়ান ন্যুসলারের সঙ্গে দেখা করেছেন৷ তিনি সেদিন শহরের চত্বরে উদ্ধারের কাজে সক্রিয় ছিলেন৷

গোটা অঞ্চলে একাধিক শহর ও গ্রাম কয়েক মিনিটের মধ্যে বন্যার কবলে পড়েছিল৷ দমকল বাহিনীর পক্ষে সবাইকে টেলিফোনে জবাব দেওয়া আর সম্ভব হচ্ছিল না৷ ন্যুসলার বলেন, ‘‘এমন ভয়াবহ বৃষ্টিপাত কী করতে পারে, এই ছবিতেই তা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে৷ আমরা এখন যে কাইজারপ্লাৎসে দাঁড়িয়ে রয়েছি, সেখানকার পথঘাট পানিতে ভেসে গিয়েছিল৷ গাড়ি চালকরা বিহ্বল হয়ে পড়েছিলেন৷ এমন পরিস্থিতিতে আগে থেকেই পথঘাট বন্ধ করা সম্ভব নয়৷ কোথায় ঠিক কত পরিমাণ বৃষ্টি হবে, তা কেউ জানে না৷''

প্রবল বৃষ্টির কথা আগে জানাবে রাডার

প্রবল বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিতে হোফমান যে বিশেষ রাডার তৈরি করেছেন, জার্মানির মধ্যে একমাত্র আখেন শহর সেটি কাজে লাগিয়ে ঝুঁকির ভিত্তিতে সতর্কতা জারি করছে৷ সেই কাজ করতে গবেষকরা সবার আগে ড্রোনের সাহায্যে গোটা শহরের মানচিত্র সৃষ্টি করেছেন৷ প্রবল বৃষ্টিপাতের সিমিউলেশনে দেখা গেছে, কীভাবে গোটা শহরের বৃষ্টির পানি সবচেয়ে নীচু অংশে বয়ে আসে৷ কাইজারপ্লাৎসই সেই জায়গা৷

শহরের প্রান্তে এক বাণিজ্যিক এলাকার আবহাওয়ার রাডার থেকে এই পাইলট প্রকল্পের জন্য তথ্য আসে৷ আবহাওয়াবিদ হিসেবে ইয়োহানেস ফিটেন বলেন, ‘‘আমার পেছনেই একটি আবহাওয়া রাডার দেখা যাচ্ছে৷ এটি একটি আবহাওয়া পরিমাপের যন্ত্র, যা দিয়ে বৃষ্টির মূল্যায়ন করতে গোটা এলাকার উপর নজর রাখা হয়৷ বৃষ্টির সঙ্গে সংঘাত ঘটিয়ে সংকেত আবার রাডারে ফিরে আসে৷''

সেই তথ্য কাজে লাগিয়ে ইয়ুলিয়ান হোফমান নিখুঁতভাবে পূর্বাভাস দিতে পারেন৷ প্রবল বৃষ্টিপাত ঘটলে ঠিক কোন এলাকা জলমগ্ন হবে, তা বলতে পারেন তিনি৷ তিনি বলেন, ‘‘সিমিউলেশন দেখলে এবং মূল্যায়ন করলে সবটাই ভালোভাবে চোখে পড়ে৷ পানি কীভাবে পথ বেয়ে নেমে বাঁক নেয়, নীচে মোড়ের ট্রাফিক আইল্যান্ড বরাবর এগিয়ে স্থানীয় পর্যায়ের সবচেয়ে নীচু জায়গায় গিয়ে পৌঁছয়৷ সব বিষয় বিচার করা হয়৷ এটা শহরের পশ্চিমের রেল স্টেশন, এখানে আন্ডারপাস, যেটি ২০১৮ সালে সত্যি ডুবে গিয়েছিল৷ সেটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছিল৷''

Regenradar
ছবি: DW

গোটা বিশ্বেই চরম বৃষ্টিপাত আরও ঘনঘন ঘটছে৷ কিছু এলাকায় এমন বিপর্যয় এমনকি ৩০ শতাংশ বেড়ে গেছে৷ বাংলাদেশ ও ভারতের মতো দেশে বন্যার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি বেড়ে গেছে৷ এমন জায়গায় এই রাডার সহায়তা করতে পারে৷ ইয়ুলিয়ান হোফমান বলেন, ‘‘বর্ষাকালও অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হয়৷ সে সময়ে অনেক সময় জুড়ে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়৷ সে ক্ষেত্রেও এই মডেলকে অত্যন্ত কম সময়ের মধ্যে পূর্বাভাস দিতে হবে৷ কিছু রদবদল ঘটিয়ে অবশ্যই সেটা করা সম্ভব৷''

আপাতত হোফমান আখেন শহরের প্রয়োজন অনুযায়ী সিস্টেমটিকে আরও উন্নত করে তুলতে চান৷ সেই লক্ষ্যে তিনি পৌর কর্তৃপক্ষ ও দমকল বাহিনীর সঙ্গে নিয়মিত সংলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন৷ হোফমান বলেন, ‘‘ঘটনার পরে আমরা বলতে পারি, কোনো হাসপাতাল বা বসতবাড়ির ক্ষতি হয়েছে কিনা৷ কোন জায়গায় পানির স্তরের কতটা উচ্চতা, তাও বলা যায়৷''

আখেন শহরের দমকল বাহিনীর মাক্সিমিলিয়ান ন্যুসলার বলেন, ‘‘সত্যি অসাধারণ৷ বিশেষ করে সহজবোধ্য ভাষায় সে সবের মধ্যে সমন্বয় করা গেলে তো আরও ভালো হয়৷ অর্থাৎ আবহাওয়াবিদের জটিল বুলির বদলে সহজ ভাষা, যেমন – ‘প্রতি বর্গমিটারে ৫০ লিটার পানি জমা হতে পারে, যা আপনাদের বাসায় এতো সেন্টিমিটারের সমান'৷ দমকল কর্মী হিসেবে সেটা আমাদের খুব সাহায্য করতে পারে৷ সেইসঙ্গে আখেনের বাসিন্দারাও মানচিত্র ও পূর্বাভাসের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে পারবেন৷ সত্যি অসাধারণ!''

সব শহর একই রকম না হওয়ায় জলবায়ুর সঙ্গে মানিয়ে নেবার কোনো সাধারণ কৌশল সম্ভব নয়৷ আখেন শহরের বৃষ্টিপাত সংক্রান্ত রাডার বন্যা মোকাবিলার এক সার্বিক কৌশল সৃষ্টি করতে সাহায্য করবে৷

ভিবকে ফয়ারসেঙার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য