1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্রেক্সিট নাটকে নতুন মোড়

২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

মঙ্গলবার ব্রিটেনের সংসদে প্রধানমন্ত্রী ব্রেক্সিট নিয়ে বেশ কিছু ছাড় দিলেন৷ এমনকি ব্রেক্সিটের সময়সীমা বাড়ানোর প্রশ্নেও সংসদকে অনুমোদনের সুযোগ দিতে চান তিনি৷ এই আশ্বাসের ফলে বিরোধীদের কৌশল নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷

https://p.dw.com/p/3E69q
চারিদিক থেকে চাপের মুখে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে
ছবি: picture-alliance/PA Wire/House of Commons

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে যতই রাশ টেনে ধরতে চাইছেন, তাঁর অবস্থান ততটাই দুর্বল হয়ে উঠছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে কোনো উল্লেখযোগ্য ছাড় পাওয়ার আশা কার্যত অসম্ভব হওয়া সত্ত্বেও তিনি সংসদে ব্রেক্সিট চুক্তি অনুমোদনের জন্য আরও সময় চেয়েছিলেন৷ এ অবস্থায় তাঁর উপর আর ভরসা করতে পারছে না প্রায় কোনো মহল৷ বুধবার সংসদে একাধিক প্রস্তাবে ভোটাভুটির পর প্রধানমন্ত্রী আরও দুর্বল হয়ে পড়বেন, এমনটা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে৷

এমন প্রেক্ষাপটে প্রবল চাপের মুখে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার সংসদে এক ভাষণে সংসদ সদস্যদের আশ্বস্ত করতে কয়েকটি অঙ্গীকার করেছেন৷ ১২ই মার্চের মধ্যে সংশোধিত ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ভোটাভুটির প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি মে বলেন, এই প্রস্তাব সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থন না পেলে তিনি নতুন এক প্রস্তাব পেশ করবেন৷ তার আওতায় সংসদ বিকল্প হিসেবে চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের পক্ষে বা বিপক্ষে রায় দিতে পারবে৷ সংসদ চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের বিপক্ষে অবস্থান নিলে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ১৪ই মার্চ আরেকটি প্রস্তাবের মাধ্যমে ব্রেক্সিটের সময়সীমা স্বল্প সময়ের জন্য বাড়ানোর প্রস্তাব রাখবেন৷ সেই প্রস্তাব অনুমোদিত হলে তিনি ইইউ-র কাছে সেই মর্মে আবেদন করবেন৷ তবে মে সংসদ সদস্যদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ব্রেক্সিটের সময়সীমা জুন মাসের গণ্ডির মধ্যে না রাখলে ব্রিটেনকে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচনে অংশ নিতে হবে৷ 

টেরেসা মে এতকাল ঘরে-বাইরে তাঁর বিরোধীদের মধ্যে ঐক্যের অভাবের ফলে যে সুবিধা ভোগ করছিলেন, সেই পরিস্থিতিও বদলাতে শুরু করেছে৷ ‘মাই ডিল অর নো ডিল' – অর্থাৎ চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিটের ভয় দেখিয়ে ইইউ-র সঙ্গে সম্পাদিত তাঁর চুক্তি অনুমোদন করাতে বদ্ধপরিকর ছিলেন মে৷ কিন্তু বিরোধী লেবার দল অবশেষে জড়তা ঝেড়ে ফেলে দ্বিতীয় গণভোটের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছে৷ সংসদ স্থায়ীভাবে ইইউ-র শুল্ক ব্যবস্থায় থাকার বিকল্প প্রস্তাব অনুমোদন না করলে লেবার দল একাধিক বিকল্পের মধ্যে গণভোটের সম্ভাবনাও আর উড়িয়ে দিচ্ছে না৷ তবে দলের এক মুখপাত্র সোমবার বলেন, দেশের রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকটের ফলে দুই-তিন সপ্তাহ পর কী হবে, তা বলা কঠিন৷

এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী আগামী ১২ মার্চ ‘সংশোধিত' ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ভোটাভুটির যে পরিকল্পনা করেছেন, তা বানচাল হয়ে যেতে পারে – এমনটা স্পষ্ট হয়ে উঠছিল৷ কারণ সে ক্ষেত্রে চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিটের ভয় আর কাজ করতো না৷ সংসদ সদস্যদের সামনে অন্য বিকল্পও খুলে যেত৷ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের পর বুধবার বিরোধীরা তাঁদের পরিকল্পনায় কোনো পরিবর্তন ঘটায় কিনা, সেদিকে সবার নজর থাকবে৷ লেবার দলের নেতা ইভেট কুপার বুধবার ব্রেক্সিটের সময়সীমা বাড়াতে যে প্রস্তাব পেশ করবেন বলে স্থির করেছেন, তা অনুমোদিত হলে গোটা পরিস্থিতি বদলে যাবে৷ 

বর্তমান অস্থিরতা কাটাতে ব্রেক্সিটের সময়সীমা পেছানোর অনুরোধ এলে ইইউ তাকে স্বাগত জানাবে, এমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে৷ তবে প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে সংসদে চুক্তি অনুমোদনের জন্য আরও দুই বা তিন মাস সময় চাইলে ইইউ বেঁকে বসতে পারে৷ মার্চ মাসে চুক্তি অনুমোদিত হলে একমাত্র তা কার্যকর করার জন্য দুই মাস বাড়তি সময় দিতে প্রস্তুত ব্রাসেলস৷ অথবা বিচ্ছেদ এবং ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে এক সার্বিক চুক্তির স্বার্থে ২১ মাসের বিলম্বের প্রস্তাবও ইইউ মহলে উঠে আসছে৷

বলা বাহুল্য, সে ক্ষেত্রে ব্রিটিশ রাজনীতি জগত নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে৷ কট্টর ব্রেক্সিটপন্থিরা এমন প্রস্তাবের জোরালো বিরোধিতা করতে পারেন৷ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টেরেসা মে-র পদত্যাগ, দুই প্রধান রাজনৈতিক দলে বিভাজন, আগাম সাধারণ নির্বাচনসহ একাধিক সম্ভাবনার দ্বার খুলে যাবে৷ গণভোটের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও নতুন করে বিতর্ক দেখা দিতে পারে৷

এসবি/জেডএইচ (রয়টার্স, এএফপি)