1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রতিশোধ নিয়েই ছাড়লেন ট্রাম্প

৩০ জুলাই ২০২০

জার্মানি সামরিক খাতে যথেষ্ট ব্যয় না করায় সে দেশ থেকে বড় সংখ্যায় মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করলো ট্রাম্প প্রশাসন৷ কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার পথে বাধা আসতে পারে৷

https://p.dw.com/p/3g91M
Kanzlerin Angela Merkel und Präsident Trump
ছবি: picture-alliance/AP Photo/E. Vucci

জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে মোটেই পছন্দ করেন না ট্রাম্প৷ সেই অপছন্দের বিষয়টি গোপনও করেন না৷ ম্যার্কেলও যে ট্রাম্প সম্পর্কে উচ্চ ধারণা পোষণ করেন না, একাধিকবার তা স্পষ্ট হয়ে গেছে৷ কিন্তু দুই সরকার প্রধানের মধ্যে ব্যক্তিগত রসায়নের কারণে দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত স্বার্থ জলাঞ্জলি দেওয়া হবে, এমনটা কেউ আশা করে নি৷ জুন মাসে ঘোষণার পর ট্রাম্প জার্মানি থেকে প্রায় ১২,০০০ মার্কিন সৈন্য সরিয়ে নেবার সিদ্ধান্ত নিয়ে অ্যামেরিকার স্বার্থের ক্ষতি করছেন, দলমত নির্বিশেষে এমন সমালোচনার ঝড় উঠছে৷ বুধবার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার আনুষ্ঠানিকভাবে সেই ঘোষণা করার পর বোঝা গেল, যে ট্রাম্প সেই সমালোচনায় কান না দিয়ে সত্যি নিজের হুমকি কার্যকর করছেন৷

এই মুহূর্তে জার্মানিতে প্রায় ৩৬,০০০ মার্কিন সৈন্য মোতায়েন রয়েছে৷ ১১,৯০০ সৈন্য সরিয়ে নিয়ে যাবার ফলে সংখ্যাটা ২৪,০০০-এ দাঁড়াবে৷ প্রতিরক্ষামন্ত্রী এসপার বলেন, এই পদক্ষেপ সত্ত্বেও সার্বিকভাবে সামরিক জোট ন্যাটোর শক্তি আরও জোরদার করা হবে এবং রাশিয়াকে বাধা দেবার ক্ষমতা বজায় রাখা হবে৷ সেইসঙ্গে অ্যামেরিকার ‘কৌশলগত নমনীয়তা' আরও উন্নত করা হবে৷ এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করার কোনো সময়সীমা তুলে ধরেন নি এসপার৷ তাঁর মতে, কিছু সিদ্ধান্ত আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কার্যকর হলেও বাকিগুলির জন্য অনেক সময় লাগবে৷

ট্রাম্প প্রশাসনের পরিকল্পনা অনুযায়ী জার্মানি থেকে প্রায় ৫,৬০০ সৈন্য সরিয়ে ন্যাটোর অন্যান্য কিছু সদস্য দেশে মোতায়েন করা হবে৷ ৬,৪০০ সৈন্য অ্যামেরিকায় ফিরিয়ে আনা হবে৷ এসপার আরও জানিয়েছেন, যে ইউরোপে মার্কিন কমান্ড ও বিশেষ অভিযানের সামরিক সদর দফতর জার্মানি থেকে বেলজিয়ামে স্থানান্তরিত করা হবে৷

জার্মানি থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা করে ট্রাম্প আবার সে দেশকে কাঠগড়ায় তুলে বলেন, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জার্মানি সামরিক ব্যয় না বাড়ানোর ফলে ন্যাটোর কোটি কোটি ডলার ক্ষতি হচ্ছে৷ জার্মানি এখন বলছে, মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ফলে সে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি হবে৷ কিন্তু এই সিদ্ধান্ত অ্যামেরিকার অর্থনীতির জন্য ভালো, বলেন ট্রাম্প৷

জার্মানি বহু বছর ধরে ফায়দা তুলে আসছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন৷ তবে জার্মানি তার প্রদেয় অর্থ দিলে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার আভাস দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের মধ্যে ন্যাটোর সদস্য দেশগুলির সামরিক ব্যয় জাতীয় গড় আয়ের কমপক্ষে দুই শতাংশ রাখার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, যদিও জার্মানি সহ অনেক দেশ এখনো সেই মাত্রায় ব্যয় বাড়ায় নি৷ এমনকি জার্মানি থেকে সৈন্য সরিয়ে মূলত যে দুই দেশে স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সেই ইটালি ও বেলজিয়ামের সামরিক ব্যয় জার্মানির থেকেও কম৷

ট্রাম্প প্রশাসনের এই বিতর্কিত সিদ্ধান্ত কার্যকর করার পথে বেশ কিছু বাধা রয়েছে৷ প্রথমত মার্কিন কংগ্রেসে বিরোধী ডেমোক্র্যাট দলের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান দলের অনেক সদস্যও দেশের স্বার্থে এমন ‘প্রতিহিংসামূলক' পদক্ষেপের বিরোধিতা করছেন৷ ফলে গোটা পরিকল্পনায় রদবদল করতে হবে পারে অথবা ট্রাম্প অটল থাকলে সেই প্রস্তাব অনুমোদন নাও পেতে পারে৷ তাছাড়া নভেম্বর মাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের পরাজয় হলে নতুন প্রশাসন বিষয়টি নতুন করে বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে৷ বাইডেন প্রশাসনও ন্যাটো সদস্যদের সামরিক ব্যয়ের প্রসঙ্গে একই অবস্থান নিলে মৌলিক পরিকল্পনা অপরিবর্তিত থাকতে পারে৷

এসবি/কেএম (ডিপিএ, এএফপি)