1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রতিবন্ধিতা নিয়ে ‘নেতিবাচক’ শব্দ ব্যবহারের অভিযোগে মামলা

১১ আগস্ট ২০২১

টেলিভিশনে একটি নাটক এবং আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কে ‘নেতিবাচক, ভ্রান্ত ও ক্ষতিকর' ধারণা প্রকাশের অভিযোগে দুটি মামলা হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/3yqsE
মেহজাবিন চৌধুরী ও আফরান নিশোছবি: Shamsul Haque Ripon

বশির আল হোসাইন নামের একজন প্রতিবন্ধী অধিকার কর্মী বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে মামলা দুটি দায়ের করেন৷ বশির মামলার আর্জিতে বলেছেন, নেতিবাচক শব্দ ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইনের ‘স্পষ্ট লঙ্ঘন' হয়েছে৷

বাদীর অন্যতম আইনজীবী জীবনান্দ চন্দ জয়ন্ত ডয়চে ভেলের কন্টেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বশির আল হোসাইনের জবানবন্দি শুনে অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আবু বকর ছিদ্দিকী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-কে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন৷

প্রথম মামলার বিষয়বস্তু ‘ঘটনা সত্য' নামের একটি নাটক নিয়ে, যা চ্যানেল আইয়ের ঈদুল আজহার আয়োজনে ২৩ জুলাই প্রচার করা হয়েছিল৷ আর দ্বিতীয় মামলার বিষয়বস্তু চ্যানেল আইয়ের আলোচনা অনুষ্ঠান ‘টু দ্য পয়েন্ট'৷ আলোচনা অনুষ্ঠানের ১১ জুলাইয়ের পর্বে একজন আলোচকের কথায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়ে ‘নেতিবাচক ধারণা'র প্রকাশ ঘটেছে বলে বশির আল হোসাইনের অভিযোগ৷

নাটক নিয়ে মামলায় আসামি করা হয়েছে চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ, নাটকের চিত্রনাট্যকার মঈনুল সানু, পরিচালক রুবেল হাসান, অভিনয় শিল্পী আফরান নিশো ও মেহজাবিন চৌধুরীকে৷

আর আলোচনা অনুষ্ঠান নিয়ে মামলায় আসামি করা হয়েছে ফরিদুর রেজা সাগর, শাইখ সিরাজ, অনুষ্ঠান পরিকল্পনাকারী জাহিদ নেওয়াজ খান, প্রযাজক রাজু আলিম, উপস্থাপক সোমা ইমলাম এবং আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকা ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনকে৷

মামলা দুটির বাদী বশির আল হোসাইন, সকল সাক্ষী এবং আইনজীবী মোহাম্মদ রেজাউল করিম সিদ্দিকী সকলেই প্রতিবন্ধী ব্যক্তি বলে জানান বাদীপক্ষের অন্যতম আইনজীবী জীবনান্দ চন্দ জয়ন্ত৷ আইনজীবী বলেন, "প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ এর ৩৭(৪)/ ৪০ ধারায় মামলা দুটো হয়েছে৷ আমার জানা মতে বাংলাদেশে এই ধারায় মামলা এই প্রথম৷”

চ্যানেল আইয়ের ঈদের আয়োজনে ‘ঘটনা সত্য' নাটকটি প্রচারের পর প্রযোজন সংস্থা সেন্ট্রাল মিউজিক অ্যান্ড ভিডিও (সিএমভি)-র ইউটিউব চ্যানেলে তা প্রকাশ করা হয়েছিল৷ কিন্তু বিশেষ শিশুদের নিয়ে ‘অবৈজ্ঞানিক বার্তা' প্রচারের অভিযোগ ওঠার পর তুমুল বিতর্কের মধ্যে নাটকটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়৷

মামলার আর্জিতে বলা হয়েছে, ‘ঘটনা সত্য'নাটকে দেখানো সংলাপে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও তাদের বাবা মা ও পরিবারকে ‘ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে'৷ 

আর দ্বিতীয় মামলায় বাদীর অভিযোগ ‘টু দ্য পয়েন্ট' অনুষ্ঠানে আর্জেন্টিনা বনাম ব্রাজিলের খেলা প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনের একটি মন্তব্যকে ঘিরে৷

মামলার আর্জিতে বলা হয়, "ওই টকশোতে সুমন বলেন, ‘আমার নিজের ছেলেটারে প্রতিবন্ধী বানাইয়া রাইখা আমি এখন আর্জেন্টিনার ছেলে এবং ব্রাজিলের ছেলে নিয়া লাফাচ্ছি৷… লাফানো ঠিক আছে৷ আমরা অনেক ছোটবেলা থেকে ম্যারাডোনার ভক্ত, কিন্তু নিজের ছেলেটারে এভাবে প্রতিবন্ধী বানাবো?”

দেশের ফুটবল খেলার মানের অবনতি, দুর্বল ব্যবস্থাপনা, ব্যর্থতা ও অবস্থার সঙ্গে তুলনা করে ‘প্রতিবন্ধী বানাইয়া রাইখা' এবং ‘এভাবে প্রতিবন্ধী বানাবো' শব্দবন্ধ ব্যবহারের মাধ্যমে গণমাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কে ‘নেতিবাচক, ভ্রান্ত ও ক্ষতিকর' ধারণা দেওয়া হয়েছে বলে বাদীর অভিযোগ৷

এ বিষয়ে চ্যানেল আই-এর চিফ নিউজ এডিটর জাহিদ নেওয়াজ খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "চ্যানেল আইতে যে নাটকটি প্রচার করা হয়েছে তাতে আপত্তিকর অংশটি ছিল না৷ সেটা ইউটিউবে আছে, আর সেই ইউটিউব চ্যানেলটি চ্যানেল আইয়ের নয়৷… এখানে আমাদের কোনো দায় নাই৷”

আর আলোচনা অনুষ্ঠান নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, "ব্যারিস্টার সুমন লাইভে যেটা বলেছেন, সেক্ষেত্রে… একটা কথা একজন বলে ফেললে কী করার আছে? আর প্রতিবন্ধীদের সে অবজ্ঞা করে বলেছে এটা তো নয়৷ বিষয়টা  প্রপারলি  হচ্ছে না, কেবল এটাই বোঝাতে চেয়েছেন সুমন৷” তবে অভিযোগের বিষয়ে আইনজীবী সুমনের বক্তব্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পারেনি৷

চ্যানেল আইয়ে প্রচারের সময় নাটকে ‘আপত্তিকর অংশ ছিল না' বলে যে বক্তব্য এসেছে, সে বিষয়ে বাদীর আইনজীবী জয়ন্ত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "এটা ভুল কথা৷ আমাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে যে, প্রতিবন্ধীর অংশটা বাদ না দিয়েই নাটকটি প্রচার করেছিল চ্যানেল আই৷”      

এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম) 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য