1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রতিদিন তিন হাজার মৃত্যুর সম্ভাবনা অ্যামেরিকায়

৫ মে ২০২০

নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট বলছে ১ জুন থেকে অ্যামেরিকায় প্রতিদিন তিন হাজার মানুষের মৃত্যু হতে পারে।

https://p.dw.com/p/3bmBL
ছবি: Getty Images/AFP/S. Avila

ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্ছে ইউরোপ। ইটালিতেও ধীরে ধীরে উঠছে নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু অ্যামেরিকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অর্থনীতি সচল রাখার প্রয়োজনে এর মধ্যেই জীবনযাপন স্বাভাবিক ছন্দে ফিরিয়ে আনার ডাক দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, এর ফলে জুনের প্রথম দিন থেকে গড়ে তিন হাজার লোকের মৃত্যু হবে অ্যামেরিকায়। আরও অন্তত দুই লাখ মানুষ আক্রান্ত হবেন। যদিও এ ধরনের কোনও রিপোর্টের কথা অস্বীকার করেছে হোয়াইট হাউস

মঙ্গলবার সকালে বিশ্ব জুড়ে করোনায় মৃত্যু আড়াই লাখ ছাড়িয়ে গিয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে ৩৬ লাখ ৪৬ হাজারে। অ্যামেরিকার পাশাপাশি ব্রাজিলেও গত এক সপ্তাহে করোনার প্রকোপ অনেকটা বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে আক্রান্তের হার ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্রাজিলে করোনায় এখনও পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ পাঁচ হাজার। মৃত্যু হয়েছে সাত হাজার ২৮৮ জনের। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আক্রান্ত এবং মৃত্যুর হার আরও বাড়বে।

করোনা: সংকটের শেষ মহাসংকটের শুরু

তবে অ্যামেরিকার অবস্থা কঠিনতর হবে বলে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। রিপোর্টে বলা হয়েছে, লকডাউন যদি কমিয়ে আনা হয় তা হলে ১ জুন থেকে প্রতিদিন অন্তত তিন হাজার মানুষের মৃত্যু হবে অ্যামেরিকায়। আরও অন্তত দুই লাখ লোক আক্রান্ত হবেন। যদিও হোয়াইট হাউস নিউ ইয়র্ক টাইমসের ওই রিপোর্টটিকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। হোয়াইট হাউসের দাবি, তাদের হাতে এমন কোনও রিপোর্ট আসেনি। বরং অ্যামেরিকায় করোনা পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত অ্যামেরিকায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১২ লাখ ১২ হাজার ৮০০। মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার মানুষের। মাস খানেক আগে একটি রিপোর্ট দাবি করেছিল, করোনায় অ্যামেরিকায় এক থেকে দুই লাখ মানুষের মৃত্যু হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জুন মাসের গোড়াতেই সেই সংখ্যা ছুঁয়ে ফেলবে অ্যামেরিকা।

ডনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য অনেক বেশি চিন্তিত চীনকে নিয়ে। নভেম্বরে নির্বাচনের আগে চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্কে রাশ টানতে মরিয়া তিনি। আজ, মঙ্গলবারই একটি নির্দেশিকা দেওয়ার কথা তাঁর। যেখানে মেডিকেল সেক্টরে চীন থেকে আমদানি করা জিনিসের ব্যবহার কমিয়ে মার্কিন উৎপাদনের উপর জোর দেওয়ার কথা বলা হবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। শুধু মেডিকেল ক্ষেত্রেই নয়, অন্যান্য জিনিসের ক্ষেত্রেও অ্যামেরিকা যাতে চীনের উপর নির্ভরশীল না থাকে এবং চীন থেকে আমদানি কার্যত বন্ধ করে দেওয়া যায়, সে বিষয়ে জোর দিচ্ছেন ট্রাম্প। বস্তুত, করোনা ভাইরাস নিয়ে অ্যামেরিকা এবং চীনের যে শব্দযুদ্ধ শুরু হয়েছিল, তা যে আরও ব্যাপক আকার নেবে, আগেই তা আন্দাজ করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। ট্রাম্পের পদক্ষেপ বুঝিয়ে দিচ্ছে, করোনা পরবর্তী সময়ে এই যুদ্ধ আরও বাড়বে।

চীনও চুপ করে নেই। সোমবার মার্কিন সচিবের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছে বেইজিং। চীনের বক্তব্য, উহানের পরীক্ষাগার থেকে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে অ্যামেরিকা যা প্রচার করছে তা ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। অ্যামেরিকা এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনও প্রমাণ দাখিল করতে পারেনি।

ইউরোপ অবশ্য ক্রমশ স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে। জার্মানি আগেই নিষেধাজ্ঞা কমানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছিল। এ বার ইটালি এবং ফ্রান্সও সে পথে হাঁটতে শুরু করেছে। ১১ মে-র পর থেকে ফ্রান্সে ধীরে ধীরে লকডাউন ওঠার কথা। ইটালিতেও সে প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নতুন করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আফ্রিকার দেশগুলি নিয়ে। সেখানে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে বলে আগেই সতর্ক করা হয়েছিল। উদ্বেগজনক পরিস্থিতি ক্যামেরুনে। সেখানে এক দিকে করোনা ভয়াবহ চেহারা নিয়েছে, অন্যদিকে অর্থনীতি সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে। বিশেষত, তেলের দাম কমে যাওয়ায় ক্যামেরুনের অর্থনীতি সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে অর্থ সাহায্য করে কী ভাবে ক্যামেরুনকে মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনা যায়, তা নিয়ে বিশ্ব ব্যাঙ্ক এবং অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা আলোচনা শুরু করেছেন।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি, এএফপি)