1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

প্রকৃতি যেভাবে জীবন বদলে দেয়

২৯ জুলাই ২০১৮

জার্মানির তরুণদের বাধ্যতামূলক শিক্ষা শেষ করার পর এক বছর প্রকৃতি নিয়ে কাজ করার সুযোগ আছে – যে অভিজ্ঞতা তাদের সারাজীবন কাজে লাগে৷ ডয়চে ভেলের কারিন ইয়েগের এমন একদল তরুণের সাথে একটি দিন কাটিয়েছিলেন৷

https://p.dw.com/p/32Aj0
Freiwilliges Ökologisches Jahr (FÖJ) in der Biologischen Station Bonn
ছবি: DW/K.Jäger

জার্মানিতে যেসব শিক্ষার্থী বাধ্যতামূলক শিক্ষা শেষ করেছে এবং যাদের বয়স ২৭ এর নীচে তাদের স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে সামাজিক কোনো ক্ষেত্রে বা পরিবেশগত ক্ষেত্রে কাজ করার সুযোগ আছে৷ পরবর্তী জীবনে অনেকে এই ক্ষেত্রগুলোকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে পারে৷ যদিও এটাকে স্বেচ্ছাসেবী কাজ বলা হয়, শিক্ষার্থীরা কিন্তু এর জন্য অর্থ পেয়ে থাকে৷

এ বিষয়ে আরও জানতে কারিন একটি তরুণ স্বেচ্ছাসেবী দলের সাথে একদিনের জন্য যোগ দিয়েছিলেন৷ দলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন ভিবকে ব্যোরনের৷ তাঁর নেতৃত্বে দলটি বন শহরের সিবেনগেব্যার্গ এলাকায় কাজ করেছে৷

Freiwilliges Ökologisches Jahr (FÖJ) in der Biologischen Station Bonn
এক তরুণের সঙ্গে ভিবকে ব্যোরনেরছবি: DW/K.Jäger

পরিবেশ রক্ষা

সাপের প্রতি কারিনের ভয়াবহ রকমের ভীতি রয়েছে৷ তাই তিনি পথ চলছিলেন মাটির দিকে দৃষ্টি রেখে৷ প্রত্যেকের হাতে ছিল ঝোপ পরিষ্কার করার একধরণের লাঠি৷ এদের মধ্যে টিম আর জ্যাকের মাথায় ছিল হেলমেট, যাতে বিষাক্ত কোনো লতাপাতা তাদের চোখকে স্পর্শ করতে না পারে৷ অতীতে অতিরিক্ত সার ব্যবহারের জন্য গাছ-গাছড়ার অনেক প্রজাতি প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে৷ তবে অনেক জায়গায় হঠাৎ তাদের গজিয়ে উঠতে দেখা যায়৷ কিন্তু মাটি উর্বর না হওয়ায় তারা প্রাণে বাঁচে না৷ প্রতি গ্রীষ্মে অন্তত দুইবার এই স্বেচ্ছাসেবীরা এমন উদ্ভিদগুলোকে খুঁজে বের করে তাদের তৃণভূমিতে নিয়ে যায়, যেখানকার মাটি বেশ উর্বর৷ যেমন রবিনিয়া সিউডোআকাশিয়া গাছ৷ এটি মূলত যুক্তরাষ্ট্রের বৃক্ষ৷

ব্যোরনের জানালেন, ‘‘যুদ্ধের পর এই গাছের চারা রোপন করা হয়েছিল এখানে, এগুলো খুব দ্রুত বাড়ে৷ এই গাছের কাঠ থেকে আসবাব বানানো যায়৷'' পাখির বাসা রক্ষা করতে এখানে কেবল অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে গাছ কাটা হয়৷ এখানে প্রচুর ঘাস ফড়িং আছে৷ এদের সবুজ রঙের জন্য আলাদা করে চেনা মুশকিল৷ এছাড়া পায়ের নিচে অসংখ্য শামুক ধীরে ধীরে হেঁটে বেড়াচ্ছে৷ আর যেখানে রঙিন ফুলের সমাহার, সেখানে দেখা মেলে সাদা আর বাদামি রঙের প্রজাপতিদের৷ স্বেচ্ছাসেবী ইউলি বললেন,‘‘আমরা কেবল যে বিলুপ্ত উদ্ভিদদের চিনতে শিখি তাই নয়, কিছু বিলুপ্ত প্রায় উভচর প্রাণীদেরও চিনতে শিখি আমরা৷ এমন কোনো উভচরের সন্ধান পেলে তাদের এমন পুকুরে ছেড়ে দেয়া হয়, যেখানে তারা প্রজনন করতে পারে৷''

কারিন ব্যোরনেরকে জিজ্ঞেস করেছিলেন এখানে সাপ আছে কিনা? ব্যোরনের জানালেন, ‘‘অবশ্যই, যখন আমি কোনো সাপ দেখি সেটাকে সৌভাগ্য মনে করি৷'' এরপর দলটি আপেল বাগানে গিয়ে গাছ থেকে আপেল ছিঁড়ে আনে এবং সেই আপেলগুলোর জুস বানায়৷

সারাজীবনের শিক্ষা

ভেরেনা বাণিজ্যিক খামার তৈরিতে আগ্রহী নন৷ বরং তিনি চান প্রকৃতিকে রক্ষা করতে৷ যদিও এখানে মাত্র তিন মাস কাটাতে পারবেন তারা৷ কিন্তু হাতে কলমে যে শিক্ষা তারা পাচ্ছেন সেটা ভোলবার নয়৷

এই দলের প্রত্যেকেরই মনে হয়, প্রকৃতিকে রক্ষায় তাদের কিছু না কিছু ভূমিকা রয়েছে৷ এই উদ্দীপনা তাদের কাজের উৎসাহ আরও বাড়িয়ে দেয়৷ যেমন টিম বললেন, ‘‘নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে আমি এখান থেকে প্রচুর জেনেছি, যা স্কুলে থাকাকালীন আমি কখনো শিখিনি৷''

জীবন্ত গ্রহ: পোকামাকড় মরছে, এরপর কি আমরাও?

ইউলি জানালেন, ‘‘বছরের শুরুতে যখন এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলাম তখন রাতে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়তাম৷ কিন্তু এখন অভ্যস্ত হয়ে গেছি৷ নিজেকে অনেক প্রাণোজ্জ্বল মনে হয়৷ এমন কি সপ্তাহ শেষেও আমার অনেক কাজ করতে ইচ্ছে করে৷ ''

এক বছর পর এই কর্মসূচি শেষ হয়ে যাবে৷ সেটা ভাবতেই অনেকের মন কিছুটা খারাপ হয়ে যায়৷ তবে তারা এটা ভেবে খুশি যে, জীবনের নতুন একটা অধ্যায় তারা শুরু করতে যাচ্ছে৷ ইউলি বললেন, ‘‘আমরা যারা এখানে ছিলাম খুবই ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে গিয়েছিলাম, তাই তারা আমার হৃদয়ে থাকবে৷''

সন্ধ্যা নেমে গেছে৷ দলটির ভাগ্য ভালো হলে একটু পরেই হয়ত কিছু সরীসৃপ তাদের গর্ত থেকে বেরিয়ে আসবে৷

কারিন ইয়েগের/এপিবি

প্রতিবেদনটি সম্পর্কে আপনাদের মন্তব্য লিখুন, নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য