প্যারিসে অভিনব, পরিবেশবান্ধব গণশৌচাগার

প্যারিসের ফুটপাত আর রেল স্টেশনের আশপাশ দিয়ে চলাচলকারীদের অনেকদিন ধরেই প্রস্রাবের দুর্গন্ধ সহ্য করতে হচ্ছে৷ এগুলো পরিষ্কার রাখতে শহর কর্তৃপক্ষের নানান উদ্যোগ থাকলেও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না৷ এই পরিস্থিতির জন্য মাতালরাই অন্যতম দায়ী৷

প্যারিস জুড়ে এমন প্রায় সাড়ে চারশ শৌচাগার আছে৷ এগুলো ‘স্যানিসেৎ’ নামে পরিচিত৷ এক জনের ব্যবহারের পর এই শৌচাগার স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিষ্কার হয়ে যায়৷

শহরকে দুর্গন্ধমুক্ত রাখতে যে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালানো হয়, তাতে একদিকে যেমন পানির অপচয় হয়, তেমনি এই কাজে যে ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা হয়, তা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর৷

প্যারিসের এক রেলস্টেশনে ‘উরিত্রতোয়া’ নামে দুটি পরিবেশবান্ধব গণশৌচাগার পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে৷ উপরের ছবিটি ভালো করে খেয়াল করে দেখুন লাল অংশে প্রস্রাব করার জন্য একটি জায়গা আছে৷ আর খড় রাখা যে বাক্সটি দেখতে পাচ্ছেন, সেটি আসলে লাল অংশটির নীচে থাকে৷ অর্থাৎ প্রস্রাব গিয়ে ঐ খড়ের বাক্সে পড়ে৷

বাক্সে থাকা খড় প্রস্রাবের সঙ্গে মিশে কম্পোস্ট তৈরি হয়৷ এই কম্পোস্ট দিয়েই উরিত্রতোয়ায় গাছের চাষ করা যাবে৷ এছাড়া পার্ক কিংবা বাগানেও ব্যবহার করা যাবে৷ খড়ের আরেকটি সুবিধা আছে৷ এতে উচ্চমাত্রার কার্বন থাকায় দুর্গন্ধ অনেক কম হয়৷

দুই আকারের উরিত্রতোয়া রয়েছে৷ বড়টিতে প্রায় ৬০০ জন মূত্রত্যাগ করতে পারবেন৷ একেকজনের ক্ষেত্রে সাড়ে চারশ মিলিলিটার ধরে এই হিসাব করা হয়েছে৷ আর ছোটটি তিনশজনের মূত্র ধারণে সক্ষম৷ একেকটি উরিত্রতোয়ার দাম পড়বে প্রায় তিন হাজার ইউরো৷

শৌচাগার প্রস্রাবে ভরে গেলে উরিত্রতোয়াতে থাকা ইলেক্ট্রনিক মনিটরিং সেন্সর সবচেয়ে কাছে থাকা একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে সংকেত পাঠাবে৷ এতে করে জ্বালানি খরচ করে শৌচাগার পূর্ণ হলো কিনা, তা দেখতে যেতে হবে না৷ অর্থাৎ এই দিক থেকেও উরিত্রতোয়া পরিবেশবান্ধব৷

ছবির দুজন - লঁর লেব ও ভিক্টর মাসিপ - এই অভিনব শৌচাগারের উদ্ভাবক৷ ভবিষ্যতে নারীদের জন্যও এমন পাবলিক টয়লেট তৈরির কথা ভাবছেন তাঁরা৷ তবে তার আগে পরীক্ষা সফল হয় কিনা এখন তা-ই দেখার পালা৷