1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পোপের বিরুদ্ধে অভিযোগ

১১ নভেম্বর ২০২০

গুরুতর অভিযোগ উঠল পোপের বিরুদ্ধে। সাবেক মার্কিন কার্ডিনালের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উপেক্ষা করেছিলেন তিনি।

https://p.dw.com/p/3l7e5
ছবি: AFP/M. Sambucetti

দুই বছর ধরে ভ্যাটিকানের অভ্যন্তরীণ তদন্ত চলছিল। তার ৪৪৯ পাতার রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ''সাবেক মার্কিন কার্ডিনাল থিওডর ম্যাকেরিকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগকে গুরুত্ব দেননি পোপ, কার্ডিনাল, বিশপরা। থিওডর যৌন সংসর্গ করছেন, সেই অভিযোগও তাঁরা উপেক্ষা করেছেন।'' রিপোর্টে বলা হয়েছে, ''সাবেক কার্ডিনালের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আসতেই থাকায় পোপ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হন।''

এই যৌন কেলেঙ্কারি ও তা নিয়ে স্বচ্ছতার অভাবের ফলে চার্চের বিশ্বাসযোগ্যতায় ধাক্কা লেগেছে। সে জন্যই তদন্ত করে এই দীর্ঘ রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। উদ্দেশ্য চার্চের বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনা।

এই রিপোর্টের সব চেয়ে বিস্ফোরক অংশ হলো থিওডরের উত্থান। পোপ দ্বিতীয় জন পল কে ২০১৪ সালে সন্ত বলে ঘোষণা করা হয়। কিন্তু তিনি ছিলেন থিওডরের সমর্থক। ২০০০ সালে প্রথমে থিওডরকে ওয়াশিংটন ডিসির আর্চবিশপ করা হয়। তারপর ২০০১ সালে তাঁকে কার্ডিনাল করা হয়। তার আগে থেকেই  থিওডরের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ আসছিল।

রিপোর্ট বলছে, ''জন পল সেই সব অভিযোগকে নয়, বরং থিওডরের কথায় বিশ্বাস করেছিলেন। তথ্য বলছে, পোপ দ্বিতীয় জন পলকে বিশ্বাসভাজন পরামর্শদাতারা থিওডরের কথায় বিশ্বাস করতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু তাঁদের পরামর্শ উপেক্ষা করে তিনি থিওডরকে উঁচু পদে বসিয়েছেন। তাঁর এই সিদ্ধান্তের ফল ভালো হয়নি। চার্চের সর্বোচ্চ স্তরে ধাক্কা লেগেছে। পোপের উপরও এই সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়েছে।''

নারীকে আঘাত করে ক্ষমা চাইলেন পোপ

থিওডরের বয়স এখন ৯০ বছর। তিনি এখনো অ্যামেরিকা ও বাইরের বিশ্বে রীতিমতো প্রভাবশালী ব্যক্তি। চার্চের জন্য অর্থসংগ্রহে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। যোড়শ বেনেডিক্ট ২০১৬ সালে থিওডরকে অবসর নিতে বাধ্য করেন। কিন্তু তিনিও তদন্তের নির্দেশ দেননি। বিষয়টি থিওডরের বিবেকের উপর ছেড়ে দেয়া হয়। বলা হয়, তিনি যেন চার্চের ভালোর জন্য বিদেশ সফর বিশেষ না করেন। পরে আরো তথ্যপ্রমাণ আসে। তারপর তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়।

শেষ পর্যন্ত ২০১৮ সালে পোপ ফ্রান্সিস তাঁর কার্ডিনাল পদ কেড়ে নেন। গত ৯০ বছরের মধ্যে প্রথমবার এই ধরনের কড়া শাস্তি কাউকে দেওয়া হলো।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, পোপ ফ্রান্সিস মনে করেছিলেন, তাঁর পূর্বসূরিই বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই তাঁর আর নতুন করে সিদ্ধান্ত নেয়ার দরকার নেই। পরে ২০১৭তে নিউ ইয়র্কের আর্চবিশপ যখন বলেন, থিওডর ১৮ বছর বয়সীকে যৌন নিগ্রহ করেছেন, তখন পোপ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হন।

অ্যামেরিকায় সারভাইভার্স নেটওয়ার্ক অফ দোজ অ্যাবিউসড বাই প্রিস্টস(এসএনএপি) নামে একটি গোষ্ঠী আছে। তারা বলেছে, এই রিপোর্ট ঠিক দিশানির্দেশ করেছে। কিন্তু ভ্যাটিকানকে এখন পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে হবে। যাঁরা থিওডরের বিষয়টি জানতেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

মার্কিন আইনজীবী জেফ অ্যান্ডারসন এই ধরনের নির্যাতিতদের সাহায্য করেন। তিনি জানিয়েছেন, ''রিপোর্ট অভূতপূর্ব। এই প্রথমবার যাজক নন, এমন এক আইনজীবীকে তদন্তের ভার দেয়া হয়েছিল। তিনি তথ্য জোগাড় করেছেন, সেগুলির যোগসূত্র খুঁজে বের করেছেন এবং অভিযুক্তের কার্যকলাপ ফাঁস করেছেন। কয়েক দশক ধরে বাচ্চারা নির্যাতিত হয়ে এসেছে।'' তাঁর মতে, ''এখন পোপকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি সব অপরাধীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন কি না। না হলে এক অপরাধীর ছায়ায় অন্যরা লুকিয়ে যাবে।''

জিএইচ/এসজি(এপি, ডিপিএ)