1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পিপিই নিয়ে এখন আর মাথাব্যথা নাই!

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১৯ নভেম্বর ২০২০

করোনার শুরুতে বাংলাদেশে পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছিলো৷ এটা নিয়ে দুর্নীতিও হয়৷ আর চিকিৎসকেরা বলেছিলেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত সবারই পিপিই দরকার৷

https://p.dw.com/p/3lYGg
ঢাকার হাসপাতাল
ছবি: Harun Ur Rashid Swapan/DW

এমনকি এই পিপিইর অভাবে চিকিৎসকরা স্বাস্থ্যসেবা থেকে বিরত থাকার কথাও বলেছিলেন৷ তাদের কথা ছিলো কোভিড এবং নন-কোভিড যে ধরনের চিকিৎসাই হোক না কেন স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিতদের পিপিই আবশ্যক৷ তাদের যুক্তি ছিলো পরীক্ষার আগে যেহেতু বোঝার উপায় নেই যে কে কোভিড আর কে নন-কোভিড রোগী তাই চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত সবার পিপিই দরকার৷ শুধু তাই নয়, যারা সাধারণ মানুষকে সরাসরি বিভিন্ন ধরনের সেবা দেন তাদেরও পিপিই দরকার৷ এন-৯৫ মাস্কসহ এক সেট পিপিইর দাম তখন ছিলো ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা৷

কিন্তু এখন পরিস্থিতি পাল্টে গেছে৷ সাধারণ স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক নার্সরা তো পিপিই ব্যবহার করছেনই না৷ এমনি কোভিড চিকিৎসায় পিপিই ব্যবহারে অনীহা দেখা যাচ্ছে চিকিসক-নার্সদের মধ্যে৷ আর কোভিড চিকিৎসায় নিয়োজিত অন্য স্বাস্থ্যকর্মীরা বলতে গেলে পিপিই ব্যবহার ছেড়েই দিয়েছেন৷ এ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরেরও তেমন কোনো মাথাব্যথা নেই৷

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বুধবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে কোনো জেনারেল ওয়ার্ডের চিকিৎসক নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মী কেউই পিপিই পরিধান করছেন না৷ কেবল পিপিই নয় সামাজিক দূরত্ব মানা নিয়েও প্রশ্ন করা যায়৷ তবে তারা মাস্ক পরছেন৷ ওয়ার্ডগুলোতে রোগীর দর্শনার্থীদের অনেককেই দেখা যায় মাস্ক ছাড়া৷

ঢাকা মেডিকেলের নতুন ভবনটি কোভিড রোগীদের চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত৷ সেখানে ওয়ার্ডগুলোর সামনে প্রচুর দর্শনার্থীর ভিড়৷ একটি ওয়ার্ডে ঢুকে দেখা যায় সেখানে নার্সরা পিপিই ব্যবহার করলেও চিকিৎসক পিপিই পরিধান করেননি৷ তবে তিনি মাস্ক, গ্লোভস ব্যবহার করেছেন৷

এখন শুধু কোভিড চিকিৎসায় নিয়োজিতরাই পিপিই ব্যবহার করছেন: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন শুধুমাত্র কোভিড হাসপাতালও ও কোভিড ওয়ার্ড ছাড়া আর কেথাও পিপিই ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা নাই৷  কিন্তু কোভিড হাসপাতালেও এই বাধ্যবাধকতার ব্যাপারে অনেকেই উদাসীন৷ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, ‘‘করোনার শুরুতে রোগী চিকিৎসক সবার মধ্যেই একটা আতঙ্ক ছিলো৷ কিন্তু এখন ভয় কেটে গেছে৷ আমরা সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসকদের এখনও মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক রেখেছি৷ আর কোভিড ওয়ার্ডের জন্য পিপিই বাধ্যতামূলক৷ তবে কোভিড ওয়ার্ডের কেউ যদি পিপিই না পরেন তাহলে ঠিক করছেন না৷’’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরও মনে করে এখন আর সাধারণ রোগীর চিকিৎসায় নিয়োজিতদের পিপিই দরকার নাই৷ তাই তারা এখন আর সবাইকে এই পিপিই সরবরাহ করছে না৷ শুধু মাত্র সরকারি কোভিড হাসপাতালগুলোকেই পিপিই দিচ্ছে৷ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ‘‘আমরা কেন, কেউই তো কোভিডের শুরুতে অনেক কিছু জানত না৷ মানুষ না জেনে তখন বস্তা বস্তা ক্লোরোফেন খেয়ে শেষ করেছে৷ অক্সিজেন লাগার কথাও জানত না৷ এখন আমরা অনেক কিছু জানছি৷ তাই এখন শুধু কোভিড চিকিৎসায় নিয়োজিতরাই পিপিই ব্যবহার করছেন৷ বাকিদের দরকার নাই৷’’

এখন কোভিড আতঙ্ক অনেক কেটে যাওয়ায় সাধারণ রোগীর চিকিৎসায় নিয়োজিত কেউ পিপিই পরছেন না: ডা. নিরুপম দাস

অবশ্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের এই কথার সঙ্গে কোনো কোনো চিকিৎসক দ্বিমত করেন৷ তারা বলেন, এখন কোভিড ও নন-কোভিড রোগী মিশে গেছে৷ তাই চিকিৎসা সেবা যে ধরনেরই হোক না কেন, যারাই দেবেন তাদেরই পিপিই ব্যবহার করা উচিত৷ চিকিৎসকেরা তো এখনো আক্রান্ত হচ্ছেন৷ চিকিৎসক ফাউন্ডেশনের প্রধান সমন্বয়কারী ডা. নিরুপম দাস বলেন, ‘‘এখন কোভিডের আতঙ্ক অনেকটাই কেটে যাওয়ায় সাধারণ রোগীর চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসক নার্সরা পিপিই পরছেন না৷ কিন্তু পরতে হবে৷ নিরাপত্তার জন্যই পরতে হবে৷ কারণ এখন কোভিড ও নন-কোভিড রোগী মিশে গেছে৷ তাই সতর্কতা আরো বেশি প্রয়োজন৷ তবে কেউ না পরলে কী করার আছে?’’

তিনি জানান যে, কোভিড হাসপাতালেও এখন স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিতদের কেউ কেউ সব ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করেন না৷ গাউন ব্যবহারে অনীহা আছে৷

বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ আবার বাড়ছে৷ এই শীতে করোনার দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণের আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ আর এই কারণে ঘরের বাইরে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে৷ বুধবার থেকে ঢাকাসহ সারাতেদশে মোবাইল কোর্ট কাজ শুরু করেছে৷ যারা মাস্ক ব্যবহার করছেন না তাদের জরিমানা করা হচ্ছে৷ একই সঙ্গে তারা মাস্ক বিতরণও করছেন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য