পাল্টা প্রস্তাব খালেদা জিয়ার
২১ অক্টোবর ২০১৩বাংলাদেশের বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সেন বেগম খালেদা জিয়া সোমবার বিকেলে ঢাকার একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আরো বলেন যে, ঐ ১০ জন উপদেষ্টার পাঁচজন নির্ধারণ করবে ক্ষমতাসীন দল আর বাকি পাঁচজন নিধারণ করবে বিরোধী দল৷ তবে এই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের প্রধানসহ ১১ জনকে চাইলে সংসদের মাধ্যমে নির্বাচিতও করা যাবে, ঠিক যেভাবে রাষ্ট্রপতি এবং সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্যদের নির্বাচন করা হয় সেভাবে৷
খালেদা জিয়া তাঁর এই প্রস্তাব নিয়ে সরকারকে আলাপ-আলোনার আহ্বান জানান৷ তিনি যুক্তি হিসেবে বলেন, ১৯৯৬ এবং ২০০১ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টারা সর্বজন প্রশংসিত এবং তাঁরা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য দু'টি নির্বাচন উপহার দিতে পেরেছেন৷ ঐ দু'টি নির্বাচনের একটিতে বিএনপি এবং আরেকটিতে আওয়ামী লীগ জয়ী হয়৷
খালেদা জিয়ার কথায়, প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার সর্বদলীয় সরকারের যে প্রস্তাব দিয়েছেন তা অস্পষ্ট৷ তাতে সরকার প্রধান কে হবেন আর কোন দলের কতজন প্রতিনিধি থাকবনে, তা স্পষ্ট নয়৷ এর মাধ্যমে বর্তমান সরকার ক্ষমতা কুক্ষিগত করার কৌশল করছে৷
তিনি বলেন, দেশের রাজনৈতিক দল, সাধারণ মানুষ এবং সুশীল সমাজ একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়৷ তাই প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে৷ দেশের মানুষ কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চায় না৷ প্রধানমন্ত্রী যে সংবিধানের দোহাই দিচ্ছেন, সেই সংবিধান তারা একতরফাভাবে সংশোধন করেছে৷ সুতরাং, সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে তারা দেশের মানুষের ভোটাধিকার এবং গণতান্ত্রিক অধিকারকে বাধাগ্রস্থ করছে৷
খালেদা জিয়া প্রতিজ্ঞা করেন যে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তাঁর, তাঁর পরিবার ও দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর যে অন্যায় অবিচার হয়েছে তার প্রতিশোধ তিনি নেবেন না৷ বরং রাজনীতিতে অশালীন ভাষার ব্যবহার বন্ধ করে সুস্থ সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনবেন৷ শুধু তাই নয়, তাদের সরকার কোনো দলীয় সরকার হবে না, হবে জনগণের সরকার৷ সেখানে বিরোধী দলসহ সবার মতামত নেয়া হবে৷ তারা ভবিষ্যতের দিকে তাকাবেন৷ অতীত আশ্রয়ী কোনো চিন্তা করবেন না৷ এছাড়া, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক এবং দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করার কথাও বলেন বিরোধী দলীয় নেত্রী৷
এদিকে, সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ বলেছেন, সব দল যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে তাহলে সেই নির্বাচন শুধু দেশের মানুষ নয়, দুনিয়ার কোথাও গ্রহণযোগ্য হবে না৷ সব দল নির্বাচনে অংশ না নিলে জাতীয় পার্টিও নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে জানান তিনি৷ তিনি বলেন, রবিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে জোটের ভিতরে বা বাইরে থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়নি৷ এ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে তিনি স্তম্ভিত হয়েছেন বলে জানান এরশাদ৷