1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জীবনে ডিজিটাল মিডিয়া

১১ জানুয়ারি ২০১৭

স্মার্টফোন আজ শিশু-কিশোরদেরও নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে৷ অপরিণত বয়সে ডিজিটাল মাধ্যম তাদের কি ক্ষতি করছে? নাকি ভবিষ্যতের জন্য তাদের আরও প্রস্তুত করতে তুলছে? লাভ-লোকসানের ভারসাম্য রক্ষা করতে কী করা উচিত?

https://p.dw.com/p/2VVgY
প্রতীকী ছবি
ছবি: DW

ডিজিটাল মিডিয়ার লাভ-ক্ষতি

বার্লিনে গায়ার পরিবারে এটাই স্বাভাবিক দৃশ্য৷ শনিবার সকালে বাবা-মা সপরিবারে প্রাতরাশের তোড়জোড় করছেন৷ দুই ছেলে ও তাদের দূর-সম্পর্কের বোন যে যার স্মার্টফোন নিয়ে ব্যস্ত৷ ন'বছর বয়সেই তারা নিজস্ব ফোন হাতে পেয়েছে৷ মা সিমোনে পাপলার বলেন, ‘‘নিয়ন্ত্রণ যেন কিছুটা কমে যায়, অবচেতন মনে বিবেক দংশন হতে থাকে৷ হাতে স্মার্টফোন দিয়ে মনে হয়, কাজটা ঠিক করলাম তো? খারাপ কিছু ঘটে যাবে না তো, যা আমি ভাবতে পারি নি?''

অস্কার, মাটিল্ডা ও গুস্তাভ-এর জন্য স্মার্টফোন সবচেয়ে জরুরি৷ বিশেষ করে হোয়াটসঅ্যাপ-এর মতো মেসেজিং সার্ভিস সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে তারা৷ জার্মানির প্রায় ৭০ শতাংশ শিশু এভাবেই বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে৷ প্রায় ৫০ শতাংশ গেমস ও ইনস্টাগ্রাম-এর মতো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে৷ স্মার্টফোন না থাকলে আলোচনায় অংশ নেওয়াই অসম্ভব হয়ে পড়ে৷ যেমন মাটিল্ডা বলে, ‘‘আমাদের ক্লাসের ছেলে-মেয়েদের আলাদা চ্যাট-রুম আছে৷ তাতে অনেক লেখা হয়৷ প্রায় সারারাত লেখালেখি চলে৷ বিরক্তও লাগে৷ তখন ফ্লাইট মোডে চলে যেতে হয়৷ তবে আমি এই চ্যাটই সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করি৷''

৯ ও ১২ বছর বয়সিদের জন্য একটাই কড়া নিয়ম রয়েছে৷ খাবার সময় ধারেকাছে স্মার্টফোন রাখলে চলবে না৷ এছাড়া কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই৷ ছেলে-মেয়েরা কতক্ষণ ধরে ডিজিটাল মিডিয়া ব্যবহার করবে, তা নিয়ে প্রতিদিন নতুন করে দর কষাকষি চলে৷ পরিবারের কর্তা হিসেবে অলিভার গায়ার বলেন, ‘‘তাদের সামনে বিকল্প তুলে ধরাও জরুরি৷ বাড়ির বাইরে বেরিয়ে কিছু একটা করা দরকার৷ অর্থাৎ সময় কাটানোর ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব আগ্রহ ও আইডিয়াও আছে৷ সারাদিন বাইরে কাটিয়ে অথবা ফুটবল ট্রেনিং-এর পর বাড়ি ফিরে হাতে মোবাইল নিয়ে জিরিয়ে নিলে আপত্তির কোনো কারণ দেখি না৷''

স্মার্টফোন নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত সময় কাটালে মনোনিবেশ করতে অসুবিধা হতে পারে৷ এটি প্রায়ই বাবা-মার দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়৷ সারা লাঙে তাঁদের এই সংশয় বোঝেন৷ তিনি বাচ্চাদের মিডিয়া ব্যবহার নিয়ে বাবা-মাদের পরামর্শ দেন৷ তাঁর মতে, স্মার্টফোনের ভালো দিকও রয়েছে৷ মিডিয়া বিশেষজ্ঞ সারা লাঙে বলেন, ‘‘শিশু ও কিশোরদের নিয়ে প্রকল্পের ক্ষেত্রে প্রায়ই বড় সাফল্য দেখা যায় – বিশেষ করে মনোযোগ নিয়ে সমস্যা সত্ত্বেও তারা যখন প্রকল্পের কোনো বিষয় নিয়ে মন দিয়ে কাজ করে৷''

গায়ার পরিবার তাদের কম্পিউটারে গেম খেলা অথবা ইন্টারনেট সার্ফিং-এর সময় ছোটদের সুরক্ষার জন্য বিশেষ কোনো সফটওয়্যার কাজে লাগায় না৷ উদ্দেশ্য, শিশুরা নিজেরাই যাতে তাদের দায়িত্বজ্ঞান সম্পর্কে সচেতন হয়৷ তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, পরে এ বিষয়ে আলোচনা করে নিজেদেরই সীমারেখা স্থির করতে দেওয়া অত্যন্ত জরুরি৷ সারা লাঙে বলেন, ‘‘পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সুসমম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি, যাতে সমস্যা, ভয়, দুশ্চিন্তা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করে পরস্পরের সাহায্য চাওয়া যেতে পারে৷ তার জন্য শিশু ও কিশোরদের মন বুঝতে হবে৷ ডিজিটাল মিডিয়ার ক্ষেত্রে তাদের আচরণও বুঝতে হবে৷''

তবে অনেক বাবা-মার কাছে এই কাজ মোটেই সহজ নয়৷ শিশু ও কিশোরদের কাছে অনলাইন ও বাস্তব জগতের সীমা মিলেমিশে যায়৷ যেমন ‘পোকেমোন গো' গেম খেলার সময়ে৷ চ্যাট ও অ্যাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে তারা বাবা-মার থেকে এগিয়ে৷ তবে এর মধ্যে কিছু অ্যাপ গোটা পরিবারই ব্যবহার করে৷ স্মার্টফোনের দৌলতে আজ যোগাযোগ অনেক সহজ হয়ে উঠেছে৷ অলিভার গায়ার বলেন, ‘‘এটাই আজকের সংস্কৃতির অঙ্গ৷ বাবা-মা নিজেদের শিক্ষাগত অবস্থানের দোহাই দিয়ে সারাক্ষণ শুধু বই পড়তে বাধ্য করলে ছেলে-মেয়েদের আজকের প্রযুক্তি সম্পর্কে ধারণা থাকবে না৷ ফলে পরে চাকরি খোঁজার সময়ে তারা খুব অসুবিধায় পড়বে৷ অতএব বাধা দেওয়া মুর্খামির কাজ৷ তাদের সঙ্গ দিয়ে ভুল পথ থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করা উচিত৷''

ডিজিটাল মিডিয়া পরিবারগুলির উপর কর্তৃত্ব করছে, এমনকি পোষা কুকুরও রেহাই পাচ্ছে না৷

হেনড্রিক ভেলিং/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান