1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গানবাজনায় মানবিকতার ছোঁয়া

১১ নভেম্বর ২০২১

অনেক শিল্পশাখার মতো সংগীতেরও কোনো সীমা নেই৷ তবে পানির নীচে, সমুদ্রগহ্বরে গানবাজনা করা মোটেই সহজ কাজ নয়৷ ডেনমার্কের এক গোষ্ঠী সেই অসাধ্যসাধন করছে এবং মানবতার বার্তাও ছড়িয়ে দিচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/42qVO
Dänemark - Unterwassermusik Aquasonic
ছবি: Getty Images/AFP/J, Nackstrand

একটি মঞ্চের উপর পাঁচটি অ্যাকোয়েরিয়াম দেখলে আশ্চর্য না হয়ে উপায় নেই৷ ‘বিটুইন মিউজিক' নামের ডেনিশ ব্যান্ড পানির নীচেই গানবাজনা করে অসাধারণ এক সাউন্ড এক্সপেরিমেন্টের সাহস দেখিয়েছে৷ ব্যান্ডের গায়িকা নেনা বেক সেই অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলেন, ‘‘পানির নীচে গান গাইলে শ্বাস ছাড়ার উপায় নেই৷ কারণ ছোট্ট এক এয়ার বাবলের মধ্য দিয়ে গান গাইতে হচ্ছে৷ সব বুদবুদ বার করে দিলে মাইক্রোফোনে প্রচণ্ড শব্দ হবে৷ তাই ছোট্ট বুদবুদ বার করে সামান্য শব্দ করে সেটি আবার শুষে নিতে হবে৷ এভাবেই গান গাওয়া যায়৷''
ডেনমার্কের ওরহুস শহরে নেনা এক পারফরম্যান্সের জন্য মহড়া করছেন৷ সংগীতশিল্পীরা দেড় মিনিট পর্যন্ত পানির নীচে থাকতে পারেন৷ তারপর তাঁদের নিঃশ্বাস নিতে হয়৷ নেনা অবশ্য বলেন, ‘‘আসলে যখন ইচ্ছে হয় তখনই মাথা তুলি৷ আমাকে নীচেই থাকতে হবে এমন কোনো চাপ নেই৷ আমার মতে, সবসময়ে উপরে উঠে বাতাস নেবার সুযোগ থাকা জরুরি৷''
ড্রামের মতো বাদ্যযন্ত্রের ক্ষেত্রে পানির চাপ বাধা সৃষ্টি করে৷ কোন বাদ্যযন্ত্র পানির নীচে আদৌ বা কতটা ভালো কাজ করে, তা হাতেনাতে খতিয়ে দেখতে ‘বিটউইন মিউজিক' গোষ্ঠীর সদস্যরা অসংখ্য পরীক্ষানিরীক্ষা করেছেন৷ ‘বিটুইন মিউজিক' গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা লায়লা স্কোমেন বলেন, ‘‘আমরা এক সুইমিং পুল ভাড়া করে সেখানে গং ও বেহালা বাজিয়ে দেখেছিলাম৷ ছোট্ট বাদ্যযন্ত্র হিসেবে বেহালা সত্যি সংগীত সৃষ্টি করায় আমরা বেশ অবাক হয়েছিলাম৷ বেহালার স্ট্রিং বা তারের উপর একটানা চাপ ও গতি থাকায় সেটা সম্ভব হয়৷ ছোট্ট সাউন্ড সৃষ্টি হয়, শুনলে মনে হয় যেন বহু পুরানো কোনো রেকর্ডিং বাজছে৷ কারণ পানির নীচে মিডল রেঞ্জের ধ্বনি সৃষ্টি হয়৷''
‘ড্রাউন্ড রেকুইয়েম' নামের সংগীত সৃষ্টি করতে এই গোষ্ঠী ২০২০ সালে প্রথমবার খোলা সমুদ্রে সংগীত পরিবেশনের সাহস দেখিয়েছিল৷ ‘ইউনাইটেড ফর রেসকিউ' নামের উদ্যোগ সেই কাজে সহযোগিতা করেছিল৷ ভূমধ্যসাগরে ডুবে মরা অসংখ্য শরণার্থীর স্মরণে ইউরোপীয় জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেছিলেন সংগীতশিল্পীরা৷
আন্ডারওয়াটার ড্রামার হিসেবে মর্টেন পৌলসেন গ্রিসের ক্রিট দ্বীপের উপকূলে শুটিংয়ের চ্যালেঞ্জের কথা মনে করতে পারেন৷ মর্টেন বলেন, ‘‘যে পানিতে এই শরণার্থীরা ডুবে যাচ্ছেন, আমরা সেই একই পানিতে রয়েছি৷ আমাদের মনে সেই বোধ ছিল৷ বেশ কিছুকাল ধরে ইউরোপে শরণার্থীদের অভিজ্ঞতা, শরণার্থীদের পরিস্থিতি মাথায় রেখে সেই পানিতে পারফর্ম করতে গিয়ে অনেক আবেগ জেগে উঠছিল৷ সেটা ছিল এক কঠিন অভিজ্ঞতা৷''
‘বিটউইন মিউজিক' গোষ্ঠীর কয়েকটি বাদ্যযন্ত্র আলাদা করে পানির নীচে ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছে৷ গোটা বিশ্বে একমাত্র নেনা বেকই তথাকথিত রোটাকর্ডা বাজাতে পারেন৷ ব্যারেল অরগ্যানের মতো দেখতে বাদ্যযন্ত্রটি পানির নীচে যে ধ্বনি সৃষ্টি করতে পারে, পানির উপরে তা সম্ভব নয় বললেই চলে৷ নেনা বলেন, ‘‘এটি মূল যন্ত্রের কাঠামোর সঙ্গে এসেছিল৷ আমরা অসংখ্য গিটারের স্ট্রিং বাজিয়ে দেখেছি৷ তারপর এই স্ট্রিং পেলাম৷ যারা খুব বেশি ঘামে, তাদের জন্য এটি তৈরি হওয়ায় এতে সহজে মরচে ধরে না৷''
‘বিটউইন মিউজিক' গোষ্ঠীর সর্বশেষ ভিডিওর জন্য সমুদ্রতটে অ্যাকোয়েরিয়ামগুলি আনা হয়েছে৷ সেই আধার এক মধ্যবর্তী জগত সৃষ্টি করে৷ মনে হয় যেন পানির জীব হিসেবে সেগুলি সমুদ্রের অংশ৷
ইয়ানা ওর্টেল/এসবি

পানির নীচে সংগীত

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য