পাকিস্তানে দাবদাহ
পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশে সাতশ’র বেশি মানুষ নিদারুণ গরমে হিট স্ট্রোক হয়ে মারা গেছেন৷ ডাক্তার-নার্স রোগী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন৷ হাসপাতালগুলোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে৷ মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে৷
‘গত দশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ’
তাপমাত্রা উঠেছে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, অর্থাৎ ১১৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট অবধি৷ দক্ষিণের দু’কোটি বাসিন্দার শহর করাচিতে গত কয়েক দিনের গরমে প্রাণ হারিয়েছেন সাতশ’র বেশি মানুষ৷ আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এই হিট ওয়েভ নাকি বিগত দশ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ৷
মৃতের সংখ্যা বাড়ছে
মৃতের সংখ্যা আরো বাড়বে, বলে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, কেন না প্রায় চার হাজার মানুষকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়েছে৷ সামরিক বাহিনী এবং বেসামরিক ত্রাণ সংস্থার ডাক্তাররা অস্থায়ি চিকিৎসা শিবির সৃষ্টি করে সেখানে ডিহাইড্রেশন ও হিট স্ট্রোকের রোগীদের শুশ্রূষা করছেন৷
রোজার মাস
পাকিস্তানের প্রায় ২০ কোটি অধিবাসীর অধিকাংশই মুসলমান এবং তাদের অনেকেই রমজানের মাসে রোজা রাখছেন৷ সন্ধ্যায় ইফতারের আগে তাঁদের জলগ্রহণের সুযোগ নেই৷
প্রবীণেরা
গরমের সঙ্গে সঙ্গে এসেছে মরশুমের নানা ব্যাধি: জ্বর, জলশূন্যতা এবং পেটের রোগ৷ রোগীদের অধিকাংশই দরিদ্র পরিবারের বৃদ্ধ-বৃদ্ধা৷ স্বচ্ছলেরা বাড়ির জন্য ট্যাংকার থেকে জল নিচ্ছেন৷
না জল, না বিদ্যুৎ
শহর ঘণ্টার পর ঘণ্টা নিষ্প্রদীপ, ফ্যান কিংবা এসি চালানোর কোনো উপায় নেই৷ রাষ্ট্রীয় জল নিগম জানিয়েছে, বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার ফলে করাচিতে পানি সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে, কেননা জল পাম্প করে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে না৷ ফলে কিছু করাচিবাসী সাগরের জলে নেমে ঠান্ডা হওয়ার চেষ্টা করছেন৷
আর কতোদিন?
পাকিস্তানের আবহাওয়া অফিস আগামীতে ঠান্ডা বাতাস এবং ঝড়বাদলের পূর্বাভাস দিয়েছে, কেননা আরব উপসাগরে একটি নিম্নচাপ এলাকা সৃষ্টি হচ্ছে৷
সরকারি ছুটির দিন
প্রাদেশিক সরকার সরকারিভাবে ছুটির দিন ঘোষণা করেছেন, যা-তে মানুষজন ঘর ছেড়ে বাইরে না বের হন৷ দাবদাহে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের অনেকেই খেটে খাওয়া মানুষ, বাইরে কাজ না করে তাঁদের উপায় নেই৷ মঙ্গলবার কিছু মানুষ পরস্পরের উপর জল ছিটিয়ে ‘হিট স্ট্রোক’-এর হাত থেকে বাঁচার চেষ্টা করেছেন৷ মসজিদের পানিও এক ধরনের পরিত্রাণ৷
প্রতিবেশি ভারত
ভারতে একমাস আগের ‘হিট ওয়েভ’-এ প্রাণ হারিয়েছিলেন দু’হাজারের বেশি মানুষ৷ সেখানেও তীব্র গরমে যারা প্রাণ হারান, তাঁদের অধিকাংশ ছিলেন বাস্তুহারা, কিংবা বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, সেই সঙ্গে কনস্ট্রাকশন কাজের কুলি-মজদুর৷ দক্ষিণের তেলেঙ্গানা ও অন্ধ্রপ্রদেশের কিছু কিছু এলাকায় তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়৷