পশ্চিমবঙ্গের ভোটে কে কোথায় দাঁড়িয়ে
পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোট আসন্ন। হাই-ভোল্টেজ লড়াইয়ে প্রধান দুই প্রতিপক্ষ তৃণমূল ও বিজেপি। বাম-কংগ্রেস কি কিছু করতে পারবে?
ভোটের দামামা
এপ্রিল-মে মাসে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা পশ্চিমবঙ্গে। সব দলই প্রচারে নেমে গেছে। প্রধান দুই প্রতিপক্ষ তৃণমূল এবং বিজেপি। তবে যত দিন যাচ্ছে, শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করছে বাম এবং কংগ্রেস।
তৃণমূলের জোর
২০১১ সালে ক্ষমতায় এসেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল। সেই থেকে পশ্চিমবঙ্গের একাধিক নির্বাচনে ৪০ শতাংশের উপরে ভোট পেয়েছে তারা। গত বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল পরিমাণ আসন পেয়েছিল তৃণমূল।
বিজেপির শক্তি
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে প্রধান বিরোধী শক্তি হয়ে ওঠে। তারাও ৪০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়েছে। এবারের নির্বাচন ব্যাপক প্রচার শুরু করেছে বিজেপি। রাজ্য জুড়ে চলছে রথযাত্রা।
ধর্মীয় মেরুকরণের নির্বাচন
বিশেষজ্ঞদের অনেকেই বলছেন, পশ্চিমবঙ্গে এবার ধর্মীয় মেরুকরণের নির্বাচন হবে। বিজেপি ধর্মীয় তাস খেলছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তার উত্তর দিতে গিয়ে ধর্মীয় মেরুকরণ বৃদ্ধি করছেন।
শাহ-মোদীর লক্ষ্য
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে পশ্চিমবঙ্গের রণনীতি তৈরি করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ। ৪০টিরও বেশি সভা করেছিলেন তাঁরা। এবারের ভোটেও একই ভাবে প্রচারের পরিকল্পনা করেছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় নেতাদের এনে প্রচারের ঝাঁজ বাড়াতে চাইছে তারা। সঙ্গে চলছে তৃণমূলের নেতাদের বিজেপিতে নিয়ে আসার কাজ।
বারবার আসছেন শাহ
অমিত শাহ এখন বারবার পশ্চিমবঙ্গে আসছেন। ভোটের দিন ঘোষণার আগে তিনি প্রচারের জমি তৈরি করছেন। পরে মোদী প্রচারের ঝড় তুলবেন। আসছেন নাড্ডাও। তাছাড়া অন্য রাজ্যের নেতাদেরও নিয়ে আসা হবে পশ্চিমবঙ্গে।
রবীন্দ্রনাথ, নেতাজি ও বাঙালিয়ানা
মোদী, শাহ, নাড্ডার মুখে বারবার শোনা যাচ্ছে রবীন্দ্রনাথ, নেতাজির নাম। উঠে আসছে বাংলা ও বাঙালিয়ানার প্রশংসা। তৃণমূল লড়াইটাকে বাঙালি বনাম অ-বাঙালিতে পরিণত করার চেষ্টা করছিল। তার জবাবে, বাঙালি-প্রেম দেখাতে চাইছেন মোদী-শাহরা।
মমতার পাল্টা
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাই একশ। রাজ্য জুড়ে সভা শুরু করে দিয়েছেন তিনি। নির্বাচন স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোর সময় সময় পরামর্শ দিচ্ছেন মমতাকে। গত কয়েক মাসে দুয়ারে সরকার এবং সকলের জন্য স্বাস্থ্যবীমা জনমনে সাড়া ফেলেছে।
বাম-কংগ্রেস জোট
কংগ্রেস এবং বামের ভোট গত ১০ বছরে চোখে পড়ার মতো কমেছে। ২০১৬ সালে তাদের জোট বিশেষ কাজে আসেনি। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ২০২১ সালে তাদের জোট আগের চেয়ে ভালো ফল করবে। বিজেপি এবং তৃণমূলের ভোট বাম-কংগ্রেস জোট সমান ভাবে কাটতে পারলে ফলাফলে তার যথেষ্ট প্রভাব পড়বে।
সমীক্ষার ফলাফল
এখনো পর্যন্ত যতগুলি ভোটের আগের সমীক্ষা হয়েছে, তাতে অল্প হলেও এগিয়ে আছে তৃণমূল। তবে বিজেপি ঘাড়ের উপর নিঃশ্বাস ফেলছে। লড়াই হাড্ডাহাড্ডি। প্রশান্ত কিশোরের স্ট্র্যাটেজি কি তৃণমূলের ভোট-মার্জিন বাড়াতে পাড়বে?
আসরে ফুরফুরা শরিফ
এরই মধ্যে ইসলামিক প্রতিষ্ঠান ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি নিজের দল তৈরি করেছেন। তিনি বিজেপি এবং তৃণমূল কাউকেই সমর্থন করছেন না। বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের আলোচনা চলছে।