পশ্চিমবঙ্গে শীতের পরিযায়ী পাখিরা
শীতকাল এলেই দেশবিদেশের পাখি এসে বাসা বাঁধে পূর্ব ভারতের জলা জমিতে। এক পলকে দেখে নেওয়া যাক তেমনই কিছু পাখি।
পরিযায়ী মাছরাঙা
পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ২৫টি জলাভূমিতে পরিযায়ী পাখিরা এসে ভিড় করে। মাঝে পাখি আশা কমে গেছিল। এবছর আবার প্রচুর পাখি এসেছে। বর্ধমানের চুপি চরে এসেছে সাদা ঠোঁটের মাছরাঙা।
হলুদ ওয়াগটেল
চীন, সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া থেকে শীতকালে প্রচুর পাখি আসে পূর্ব ভারতে। নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত তাদের দেখতে পাওয়া যায়। বর্ধমানের চুপি চরে এসেছে হলুদ ওয়াগটেল।
হোয়াইট ব্রেস্টেড ওয়াটারহেন
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিচিত পাখি হোয়াইট ব্রেস্টেড ওয়াটারহেন এসেছে কলকাতার খুব কাছে সাঁতরাগাছির ঝিলে।
রাফ
ইউরেশিয়ার পাখি রাফ এসে পৌঁছেছে বর্ধমানের চুপির চরে। পাখি গবেষকরা জানিয়েছেন, এই শীতে এই পাখির দল পূর্ব এশিয়ায় যেমন আসে, তেমনই চলে যায় আফ্রিকা, এমনকী অস্ট্রেলিয়াতেও।
রেড ল্যাপউইং
মূলত এশিয়ার এই পাখি এবার দেখা গেছে চুপির চরে। জলের ধারে বসে শিকার করতে দেখা যায় এই পাখিদের।
রেড ক্রেস্টেড পোচার্ড
হাঁস প্রজাতির এই পাখি মঙ্গোলিয়ায় দেখা যায়। এছাড়াও মধ্য এশিয়া এবং কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলেও এদের প্রচুর পরিমাণে দেখা যায়। শীতকালে তারা চলে আসে অপেক্ষাকৃত গরমের দেশে। এবছর চুপির চরে এই হাঁসও দেখতে পাওয়া গেছে।
বেগুনি হেরন
আফ্রিকা, মধ্য ও দক্ষিণ ইউরোপে এই পাখি পাওয়া যায়। শীতে তারা চলে এসেছে চুপির চরে।
লিটল করমোরান্ট
দক্ষিণ এশিয়ার এই পাখি মূলত সমুদ্রের ধারে থাকে। ভারতের সমুদ্র সৈকতেও এই পাখি প্রচুর দেখা যায়।
অল্প ডাকের হাঁস
ভারতীয় প্রজাতির এই হাঁস এবার প্রচুর পরিমাণে পাওয়া গেছে বোলপুরের বল্লভপুরে।
ধূসর মাথার হাঁস
গ্রে হেডেড সোয়াম্পহেন মধ্যপ্রাচ্য, ভারতীয় উপমহাদেশ, চীন এবং থাইল্যান্ডে দেখতে পাওয়া যায়। অসম্ভব সুন্দর এই পাখিটি এবার বসত জমিয়েছে বোলপুরের বল্লভপুরে।
গ্রেল্যাগ গুস
এও এক প্রজাতির হাঁস। ইউরোপের শীতেই মূলত বড় হয় এই পাখি। তবে শীতকালে তারা চলে আসে অপেক্ষাকৃত গরমে। বল্লভপুরে এবার মিলেছে এই পাখি।
পিনটেল হাঁস
এই ধরনের হাঁস প্রচুর পরিমাণে মেলে ইউরোপের উত্তরে এবং উত্তর অ্যামেরিকায়। হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে শীতের সময় তারা চলে আসে এশিয়ায়। বল্লভপুরে এবার প্রচুর পরিমাণে এই পাখি এসেছে।
ইউরেশিয়ান কুট
অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং উত্তর অ্যামেরিকার এই হাঁস এখন খেলে বেড়াচ্ছে বর্ধমানের বিলে।
কটন পিগমি গুস
এশিয়ায় এই প্রজাতির হাঁস দেখতে পাওয়া যায়। কুইনসল্যান্ড পর্যন্ত এই হাঁসের রাজত্ব। তবে শীতের সময় অপেক্ষাকৃত গরমই এরা পছন্দ করে।
কমন মুরহেন
পৃথিবীর আদিমতম স্থানগুলি পছন্দ এই প্রজাতির পাখির। রেন ফরেস্ট বা বৃষ্টি-অরণ্যে প্রচুর পরিমাণে এই পাখি দেখা যায়। বোলপুরে বেশ কিছু এই পাখি এবার দেখা গেছে।
চুপির চরে পাখিপ্রেমীরা
এবারের শীতে বহু পাখিপ্রেমী নৌকা নিয়ে এভাবেই বেরিয়ে পড়েছে চুপির চরে। ভোর থেকে তারা খুঁজে বেড়াচ্ছে নতুন প্রজাতির পাখি।
ঘরের ফেরার গান
বিকেলের ডাকে ঘরে ফিরছে বল্লভপুরের পাখিরা। ঝাঁক বেঁধে আবার মাইলের পর মাইল পাড়ি দিয়ে তারা ফিরে যাবে যে যার দেশে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, গত দুইবছরে পরিযায়ী পাখির সংখ্যা বেড়েছে। গত বছর শুধু পশ্চিমবঙ্গে এক লাখেরও বেশি পাখি এসেছিল। এবারে আরো বেড়েছে বলেই তারা মনে করছেন।