1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পশ্চিমবঙ্গ ভাগ নিয়ে বিজেপি-তে তীব্র মতবিরোধ

২৩ আগস্ট ২০২১

পশ্চিমবঙ্গ ভাগ করা নিয়ে বিজেপি-র মধ্যে অশান্তি ও বিরোধ তুঙ্গে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বার্লা ভাগের পক্ষে। কিন্তু বিরোধী নেতার সংখ্যা কম নয়।

https://p.dw.com/p/3zMnn
আগে বিরোধিতা করে এখন পশ্চিমবঙ্গ ভাগের কথা বলছেন দিলীপ ঘোষ। ছবি: Imago Images/Pacific Press Agency/S. Paul

বিধানসভা নির্বাচনের আগে থেকেই বিজেপি-র উত্তরবঙ্গের নেতাদের একাংশ পৃথক রাজ্যের দাবি তুলেছেন। এই দাবির সব চেয়ে সোচ্চার সমর্থক হলেন জন বার্লা। তিনি এখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কিন্তু মন্ত্রী হওয়ার পরেও তিনি তার মত থেকে সরে আসেননি।

শনিবার উত্তরবঙ্গে তার মুখে আবার শোনা গেছে পশ্চিমবঙ্গ ভাগ করার দাবি। আর তার পাশে বসা রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও বলেছেন,''এখন জঙ্গলমহল বা উত্তরবঙ্গ আলাদা হতে চাইলে তার সব দায়-দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে জিইয়ে রেখে মুখ্যমন্ত্রী চুক্তি সই করেছিলেন, তখন কেন প্রশ্ন ওঠেনি? আমরা আওয়াজ তুললেই বিচ্ছিন্নতাবাদী?''

কিছুদিন আগে পর্যন্ত দিলীপ ঘোষ বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গ ভাগ হওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই। দলের সিদ্ধান্ত হলো, রাজ্য ভাগ হবে না। সেই তিনিই তার আগের অবস্থান থেকে সরে এসে কী করে রাজ্যভাগকে সমর্থন করলেন, তা নিয়ে বিজেপি-র রাজ্য নেতারাই হয়রান। দাবি দিলীপরা করছেন, রাজ্য ভাগ হলে তা করবে কেন্দ্রীয় সরকার, তা হলে রাজ্য সরকার কীভাবে এর জন্য দায়ী থাকবে, তার কোনো যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা রাজ্য বিজেপি সভাপতি দেননি। তবে বার্লা চলে যাওয়ার পর দিলীপ আবার বলেছেন, শ্যামাপ্রসাদের বাংলাকেই আমরা সোনার বাংলা করব।

এরপর রাখির দিন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথ রাখিবন্ধন উৎসব পালন করেছিলেন। বাংলার সংস্কৃতি অন্য রকম। জন বার্লা বা দিলীপ ঘোষরা কী বলেছেন, আমি জানি না! তবে এই বাংলা কখনওই ভাগ হবে না।'' দক্ষিণবঙ্গের যে কোনো বিজেপি নেতা ও কর্মীর মতও তাই। দক্ষিণবঙ্গের মানুষের ভাবাবেগও তাই। এমনকী উত্তরবঙ্গের মানুষও বাংলা থেকে ভাগ হতে চেয়ে সেরকম কোনো আন্দোলন করছে না। তা হলে বিজেপি-র উত্তরবঙ্গের কতিপয় নেতা কেন বারে বারে এই ধরনের দাবি করছেন? প্রশ্ন উঠছে, বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কি এই দাবি সমর্থন করছে?

বিজেপি সূত্র জানাচ্ছে, দলের সাংসদ বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বার বার একই দাবি তুলছেন এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সেটা দেখেও কিছু বলছে না, তার মানে তারা এই ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দেখতে চাইছেন। গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি যেমন উত্তরবঙ্গ থেকে প্রচুর আসনে জিতেছিল, বিধানসভায় তা হয়নি। বিধানসভায় তৃণমূল উত্তরবঙ্গে লোকসভার তুলনায় অনেক ভালো করেছে। ফলে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে আসন ধরে রেখে তা আরো বাড়াবার উপায়ও খুঁজতে হবে বিজেপি-কে। সে জন্য তারা বিভিন্ন বিষয় সামনে আনতে চাইছে।

তৃণমূলের মুখপত্র ও রাজ্যসভার চিফ হুইপ সুখেন্দু শেখর রায় এর আগে ডিডাব্লিউকে বলেছেন, তৃণমূল সর্বশক্তি দিয়ে রাজ্যভাগ রুখবে। কিছুতেই আর পশ্চিমবঙ্গ ভাগ হতে দেয়া হবে না। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর আনন্দবাজারকে বলেছেন, ‘‘বিজেপি নেতারা উত্তরবঙ্গে থাকলে এক রকম বলছেন, কলকাতায় বসে আবার অন্য রকম! ভোটের স্বার্থেই এই দ্বিচারিতা চালাচ্ছে বিজেপি। আগে তৃণমূলও ভোটের জন্য গ্রেটার কোচবিহার, কামতাপুরীর কথা বলে একই জিনিস করেছে। রাজ্যভাগের চক্রান্ত কোনও ভাবেই বাংলার মানুষ মানবেন না।''

প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ''এটাও বিজেপির কৌশলের একটা অঙ্গ। তারা দুই ধরনের কথাই বলে রাখছে এবং কেন্দ্রীয় নেতারা চুপ। রাজ্য ভাগের বিষয়টি গুরুতর। তাই কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের উচিত, এব্যাপারে তাদের মতামত জানানো। বিষয়টি ঝুলিয়ে না রাখা।''

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, আনন্দবাজার)