পরিবেশবান্ধব বিমান কেমন হবে?
বিমানে চড়ছেন মানেই আপনি পরিবেশের কিছুটা ক্ষতি করছেন৷ তাহলে কি বিমান ভ্রমণ ছেড়ে দেবেন! না, তবে সমাধান তখনই হবে যখন পরীক্ষামূলকভাবে তৈরি ইলেকট্রিক বিমানগুলো পুরোদমে চালু হবে৷ কেমন হবে ভবিষ্যতের সেই বিমান? চলুন, দেখে আসি-
ছোট, হালকা এবং দূষণমু্ক্ত বিমান
নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে চলা বিমান কার্বন ডাই অক্সাইড এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয় এমন গ্যাস বা কণা– যেমন নাইট্রোজেন অক্সাইড নির্গমন করে না৷ এসব বিমান জীবাশ্ম জ্বালানিতে চলা বিমানের চেয়ে ছোট, হালকা এবং কার্যকরী হয়৷ ২০১৫ সাল থেকে স্লোভেনিয়ার স্টার্ট-আপ বিমান পরিবহন সংস্থা পিপিস্ট্রেল তাদের আলফা ইলেক্ট্রো মডেলের বিমান দিয়ে তা ইতিমধ্যে প্রমাণ করছে৷
ছোট বিমান নিয়ে নতুন আশা
বেশিরভাগ কোম্পানি আঞ্চলিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় ইলেকট্রিক বিমান ব্যবহারের কথা ভাবছে৷ ইসরায়েলি স্টার্ট-আপ প্রতিষ্ঠান এভিয়েশন তাদের নয় আসন বিশিষ্ট ‘নাইন সিটার’ বিমান দিয়ে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে৷ তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী তৈরি অ্যালিস বিমানটির প্রটোটাইপ ঘণ্টায় সাড়ে ছয়শ’ মাইল বা এক হাজার কিলোমিটার বেগে উড়তে পারে৷ প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ২০১৯ সাল নাগাদ তারা বাণিজ্যিকভাবে এই বিমান চালু করতে পারবে৷
সরাসরি ওঠানামা
জার্মান কোম্পানি লিলিয়ামের চালু করা ফ্লাইং ট্যাক্সি ২০১৭ সালের এপ্রিলে প্রথম সফলভাবে উড্ডয়ন করে৷ পাঁচ আসন বিশিষ্ট এই বিমানটি ওড়ার সময় রানওয়েতে না চলেই সরাসরি উড়তে পারে৷ আবার নামার সময় সরাসরি নামতে পারে৷ এটি ১৯০ মাইল যেতে পারে৷ লন্ডন থেকে প্যারিস যেতে এর এক ঘণ্টার বেশি সময় এর লাগে না৷
পুরনো এবং নতুনের মিশ্রণ
কিছু বিমান তৈরির প্রতিষ্ঠান প্রথমেই ইলেকট্রিক বিমান তৈরির দিকে না গিয়ে হাইব্রিড বিমান তৈরির কথা ভাবছে৷ ২০১৭ সালের নভেম্বরে এয়ারবাস, রোলস রয়েস এবং সিমেন্স বাণিজ্যিকভাবে হাইব্রিড-ইলেকট্রিক বিমান তৈরির ঘোষণা দেয় ৷ তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, তৈরি ই-ফ্যান এক্স মডেলের বিমানটিতে ৩টি গ্যাস টারবাইন এবং একটি ইলেকট্রিক মোটর থাকবে৷
পরিবেশবান্ধব হওয়ার চেষ্টা ইজিজেটের
ব্রিটেনের সাশ্রয়ী বিমান পরিবহন সংস্থা ইজিজেট আরও বেশি পরিবেশবান্ধব হওয়ার চেষ্টা করছে৷ অ্যামেরিকার স্টার্ট আপ কোম্পানি রাইট ইলেকট্রিকের সাথে সর্বোচ্চ ১৫০ যাত্রী বহন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বিমান তৈরির ব্যাপারে সমঝোতা স্মারকে সই করেছে৷ তবে এটি নিশ্চিত নয়, কবে নাগাদ ওই বিমানের একটি পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন দেখতে পাওয়া যাবে৷
বিদ্যুতায়িত ভবিষ্যৎ
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ইলেকট্রিক বিমানে ২০ বছরের মধ্যেই পুরোদমে চালু হয়ে যাবে৷ বেশ কিছু বিমান তৈরির সংস্থা ১৫০ থেকে সাড়ে ৬০০ মাইল যেতে সক্ষম৷ কিন্তু ইতিহাসের যে-কোনো সময়ের চেয়ে প্রযুক্তি এখন সবচেয়ে দ্রুত গতিতে ৷ কে জানে অদূর ভবিষ্যতেই হয়তো আমরা নবায়নযোগ্য শক্তিতে চলা বিমান দিয়ে পুরো পৃথিবী ভ্রমণ করতে পারবো৷