1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পুটিনের বন্ধুকে কেন বেছে নিলেন ট্রাম্প?

১৪ ডিসেম্বর ২০১৬

ডোনাল্ড ট্রাম্প সেক্রেটারি অফ স্টেট হিসেব যাকে বেছে নিলেন, তিনি এক্সন কেম্পানির প্রধান হলেও, তাঁর কোনো রাজনৈতিক বা কূটনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই৷ কিন্তু বিদেশনীতি আর ব্যবসার মধ্যে ফারাক আছে, বলে মনে করেন মিওদ্রাগ জরিচ৷

https://p.dw.com/p/2UF2l
পুটিনের সঙ্গে রেক্স টিলারসন
ছবি: picture alliance/dpa/Alexey Druginyn Mandatory Credit/R. Novosti

নতুন চাকরিতে যোগ দেওয়ার আগেই টিলারসনকে নিয়ে বিপুল সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে৷ এক্সন মোবিল করপোরেশনের ৬৪ বছর বয়সি সিইও-র সরকারি কাজকর্মের কোনো অভিজ্ঞতা নেই, যদিও স্বৈরশাসকরা তাঁকে সহস্তে মেডেল পরিয়ে দিয়েছেন৷ ফ্লরিডার রিপাবলিকান সেনেটর মার্কো রুবিও টুইট করেছেন যে, তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পুটিনের এক বন্ধুকে দেখতে চান না৷ অ্যারিজোনার রিপাবলিকান সেনেটর জন ম্যাককেইন-ও টিলারসনের ক্রেমলিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সমালোচনা করেছেন৷ নিউ জার্সির ডেমোক্র্যাট সেনেটর বব মেনেন্ডেজ এই সিদ্ধান্তকে বলেছেন ‘‘উদ্ভট’’৷ অন্যান্যরাও এই সমালোচনায় যোগ দিয়েছেন৷ সব মিলিয়ে সেনেটে কনফার্মেশন হিয়ারিং-এ ভবিষ্যৎ সেক্রেটারি অফ স্টেটকে বেগ পেতে হতে পারে৷ অনুমোদন নিশ্চিত বলে মনে করার কোনো কারণ নেই৷

ডোনাল্ড ট্রাম্প দলের সঙ্গে আরেকটি কাজিয়ার ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও টিলারসনকে বেছে নিয়েছেন৷ কিন্তু কেন?

চারজন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সুপারিশ

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দু'জনে দু'জনকে চিনতেন কিনা সন্দেহ৷ টেক্সাসের মানুষ টিলারসন রক্ষণশীল এবং রিপাবলিকান, তা সত্ত্বেও তিনি প্রাইমারি পর্যায়ে ট্রাম্প ছাড়া অন্যান্য প্রার্থীদেরই সমর্থন করেছেন, এমনকি আর্থিক অনুদানও দিয়েছেন৷ ট্রাম্প যে টিলারসনকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বিবেচনা করতে পারেন, এ পরামর্শ আসে বাইরে থেকে৷ জেমস বেকার ও কন্ডোলিসা রাইসের মতো সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা টিলারসনের জোরদার সমর্থক ছিলেন ও আছেন৷ ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠরা বলেন যে, প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট আর বহুজাতিক তেলের কোম্পানির সিইও-র মধ্যে রসায়ন গোড়া থেকেই ইতিবাচক ছিল৷

উভয়েই বিদেশনীতিকে একটি ব্যবসায়িক প্রচেষ্টা হিসেবে দেখেন৷ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে সেটা অংশত সত্যও বটে৷ কিন্তু পররাষ্ট্রনীতির সবটাই কিছু ব্যবসা নয়৷ যে সব ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনো আর্থিক লাভালাভ নেই – যেমন মানবাধিকার – সেখানে কি হবে? বিশ্বব্যাপী মানবমর্যাদা রক্ষার জন্য যারা সক্রিয়, তাদের ভাগ্যে বিশেষ বন্ধু জোটে – একনায়কদের মধ্যে তো নয়ই৷ দশকের পর দশক ধরে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা তাঁদের পশ্চিম ইউরোপীয় সতীর্থদের সঙ্গে ঠিক তাই করেছেন৷ এবং তারা যে সফলও হয়েছেন, সেটা বিশ্বে গণতান্ত্রিক দেশগুলির ক্রমবর্ধমান সংখ্যা দেখলেই বোঝা যায়৷

রেক্স টিলারসনের নিয়োগের ফলে কি সেটা বদলে যাবে? প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ ও সুবিধাজনক বাণিজ্য চুক্তি কি মানবাধিকারের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে? ন্যাটোর প্রতি মার্কিন প্রতিশ্রুতি ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সমুদ্রপথগুলির সুরক্ষা কি শুধু ব্যয়হ্রাসের খাতিরে বাতিল করা হবে? অ্যামেরিকা কি পশ্চাদপসারণ করবে? বিশ্বের বর্তমান ব্যবস্থাপনার কি অন্ত ঘটবে?

মিওদ্রাগ জরিচ
ডয়চে ভেলের ওয়াশিংটন ব্যুরো চিফ মিওদ্রাগ জরিচছবি: privat

পশ্চিমের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের অবসান?

পশ্চিমের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বলতে আমরা যা বুঝি, তার অন্তের সূচনা ঘটবে: রাষ্ট্রসমাজের এমন একটি সুবিন্যস্ত ব্যবস্থা যা শুধু আন্তঃ-অতলান্তিক দেশগুলিকেই নয়, আরো অনেক মহাদেশের অনেক দেশকে নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি এনে দিয়েছে৷ কিন্তু সবচেয়ে বেশি সমৃদ্ধি এনে দিয়েছে খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে৷

ভবিষ্যতের দৃশ্যপট নিয়ে জল্পনা-কল্পনা শুরু করার সময় এখনও আসেনি, যদিও ইউরোপীয়রা তা করতে ভালোবাসেন৷ যুক্তরাষ্ট্রের মুখ্য বাণিজ্যিক সহযোগী হিসেবে ইউরোপকে আস্থা বজায় রেখে চলতে হবে৷ অ্যামেরিকা তখনই বাস্তবিক একটি পরাশক্তি, যখন যুক্তরাষ্ট্র তার ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে একযোগে কাজ করে৷

জাঁদরেল আর কোটিপতিতে ভরা ট্রাম্প মন্ত্রীসভা দেখে ইউরোপীয়রা যতই কণ্টকিত হোন না কেন, মনোনীত পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনকেও অন্তত একটা সুযোগ দেওয়া উচিত৷

মিওদ্রাগ জরিচ/এসি

প্রিয় পাঠক, আপনার কিছু বলতে চাইলে নীচে মন্তব্যের ঘরে লিখুন৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান