1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পরমাণু চুক্তি পরিত্যাগ করার হুমকি দিল ইরান

১৫ আগস্ট ২০১৭

ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানি মঙ্গলবার সংসদে বলেন যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র উত্তরোত্তর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আরোপ করলে, ইরান ‘কয়েক ঘণ্টার মধ্যে' পরমাণু চুক্তি পরিত্যাগ করতে পারে৷

https://p.dw.com/p/2iEVH
Iran Hassan Rohani
ছবি: Getty Images/AFP/A. Kenare

ইরানি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ঐ ভাষণে রোহানি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে বলেন, ‘‘শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ও জোরজবরদস্তি ব্যর্থ হওয়ার অভিজ্ঞতা ওদের আগের প্রশাসনগুলিকে আলাপ-আলোচনায় বসতে বাধ্য করেছে৷ ওরা যদি (আগের) সেই অভিজ্ঞতায় ফেরৎ যেতে চায়, তাহলে খুব স্বল্প সময়ে – কয়েক সপ্তাহ কিংবা মাস নয়, বরং কয়েক ঘণ্টা কি দিনের মধ্যে আমরা আরো জোরালো ভাবে আমাদের পূর্বতন অবস্থানে প্রত্যাবর্তন করব৷''

ট্রাম্প আসা যাবৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শুধু ইরানের জন্যই নয়, বরং ওয়াশিংটনের মিত্রদেশগুলির পক্ষেও এক অনির্ভরযোগ্য সহযোগী বলে প্রমাণিত হয়েছে, বলেন রোহানি৷ ‘‘সাম্প্রতিক কয়েক মাসে বিশ্ব দেখেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিভাবে জিসিপিওএ (পরমাণু চুক্তি)-র আঙ্গিকে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতিসমূহ একটানা ও বারংবার ভঙ্গ করা ছাড়াও, একাধিক আন্তর্জাতিক চুক্তি উপেক্ষা করেছে ও (যুক্তরাষ্ট্রের) মিত্রদের দেখিয়েছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভালো সহযোগী কিংবা আপোশের জন্য নির্ভরযোগ্য অংশীদার নয়,'' রোহানি মন্তব্য করেন৷ 

পরমাণু চুক্তি পরিত্যাগ করার পর ইরান কী ধরনের পারমাণবিক বা ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি কার্যকরি করার ক্ষমতা রাখে, রোহানি তাঁর ভাষণে সে কথার কোনো উল্লেখ করেননি৷ অপরদিকে রোহানি তাঁর হুমকিকে কিছুটা নরম করেন এই বলে যে, ইরান পরমাণু চুক্তিতে প্রদত্ত প্রতিশ্রুতিসমূহের প্রতি বিশ্বস্ত থাকতে আগ্রহী৷

মার্কিন কংগ্রেসের বিল ও জাতিসংঘের প্রস্তাব

আগস্ট মাসের গোড়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরান, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে উত্তরোত্তর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা সংক্রান্ত মার্কিন কংগ্রেসের বিলটিতে স্বাক্ষর করেন৷ ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি ও মানবাধিকার পরিস্থিতি ছিল এই বিলের লক্ষ্য৷

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতে ইরানের ব্যালিস্টিক মিসাইল পরীক্ষা জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবটিকে ভঙ্গ করেছে৷ ২০১৫ সালে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য ও জার্মানি, এবং ইরানের মধ্যে যে পরমাণু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, জাতিসংঘের প্রস্তাবটিতে তা অনুমোদন করা হয়েছে৷ প্রস্তাবে ইরানের প্রতি আণবিক বোমা বহণে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র সংক্রান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হলেও, সে ধরনের গতিবিধি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়নি৷

US-Präsident Donald Trump
গত সপ্তাহে ট্রাম্প বলেন, ইরান পরমাণু চুক্তির আদর্শ অনুসরণ করে চলছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন না৷ছবি: Reuters/J. Ernst

ইরানের ব্যালিস্টিক মিসাইল পরীক্ষা জাতিসংঘের প্রস্তাব লঙ্ঘন করেছে, এই কারণ দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে  ইরানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আরোপ করে – যার ফলশ্রুতি স্বরূপ মার্কিন ট্রেজারি জুলাই মাসের শেষে ছ'টি ইরানি শিল্পসংস্থার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আরোপ করে, কেননা এই সংস্থাগুলি ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বিকাশে সাহায্য করেছে৷ বস্তুত ইরান এমন একটি রকেট পরীক্ষা করেছিল, যা একটি কৃত্রিম উপগ্রহকে কক্ষপথে স্থাপন করতে সক্ষম৷

ইরানের মতে তার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি জাতিসংঘের প্রস্তাব ভঙ্গ করে না – অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে যে সব নতুন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা আরোপ করেছে, তা ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির বিরোধী৷

ট্রাম্প গত সপ্তাহে বলেন যে, ইরান পরমাণু চুক্তির আদর্শ অনুসরণ করে চলছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন না৷ অপরদিকে ইরান সংসদে রোহানির মন্তব্য সম্ভবত শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য নয়, বরং সেই সঙ্গে স্বদেশে কট্টরপন্থিদের ঠান্ডা করার একটা প্রচেষ্টাও বটে – বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা৷

এসি/ডিজি (রয়টার্স, এপি, এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য