1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
সমাজযুক্তরাজ্য

পদত্যাগ করলেন বরিস জনসন

৭ জুলাই ২০২২

চাপের কাছে নতিস্বীকার করে পদত্যাগ করলেন বরিস জনসন। তবে দলের নতুন নেতা নির্বাচন পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে কাজ চালিয়ে যাবেন।

https://p.dw.com/p/4DmRE
পদত্যাগের কথা জানাচ্ছেন জনসন।
পদত্যাগের কথা জানাচ্ছেন জনসন। ছবি: Phil Noble/REUTERS

একের পর এক মন্ত্রী ও কর্মকর্তা পদত্যাগ করার পর সিদ্ধান্ত বদল করে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ইস্তফা দিলেন। তিনি দলের নেতার পদ ছেড়ে দিয়েছেন। জনসন জানিয়েছেন, পার্লামেন্টারি পার্টি নতুন নেতা ও নতুন প্রধানমন্ত্রী চাইছে। 

 প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে এসে জনসন জানিয়ে দিয়েছেন, নতুন নেতা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেল। এক সপ্তাহের মধ্যে পুরো কর্মসূচি সামনে আসবে। নতুন নেতা নির্বাচন হওয়া পর্যন্ত তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। জনসন বলেছেন, বিশ্বের সেরা পদ ছেড়ে দিতে হওয়ায় তিনি দুঃখিত। বিবিসি জানাচ্ছে, আগামী অক্টোবরে দলের বার্ষিক সম্মেলনে নতুন নেতা দায়িত্ব নেবেন। 

জনসন জানিয়েছেন, তিনি মন্ত্রীদের বোঝাবার চেষ্টা করেছিলেন, সরকার যাতে চলে তার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সফল হননি। নিজের পদত্যাগের কথা ঘোষণা করার সময় জনসন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তার সাফল্য়ের কথাও শুনিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ব্রেক্সিট, করোনার মোকাবিলা, সবচেয়ে আগে লকডাউন তুলে নেয়া, রাশিয়ার আগ্রাসনের পর ইউরোপের নেতৃত্ব দেয়ার কাজ তিনি করেছেন। তবে সেই সঙ্গে এটাও স্বীকার করে নিয়েছেন, অনেক পরিকল্পনা তিনি রূপায়ণ করতে পারলেন না। তার জন্য তিনি দুঃখিত। তবে তার আশা, নতুন প্রধানমন্ত্রী সেই কাজ শেষ করবেন। আর তিনি নতুন নেতাকে সাহায্য করবেন। 

কে নেতা হতে পারেন?

নেতৃত্বের দৌড়ে এগিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস এবং সদ্য পদত্যাগী অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক। বেন ওয়ালেস দলের এমপি-দের কাছে যথেষ্ট জনপ্রিয়। 

ঋষি সুনাককে জনসনই অর্থমন্ত্রী করেছিলেন। তারপর তার দ্রুত উত্থান হয়েছে। ঋষির ঠাকুর্দা ভারতের পাঞ্জাব ছেড়ে যুক্তরাজ্যে বসবাস শুরু করেছিলেন। 

নিয়মানুযায়ী, প্রথমে রক্ষণশীল দল দুইজন প্রতিদ্বন্দ্বী বেছে নেবে। তারপর তাদের মধ্যে থেকে একজনকে নেতা বাছা হবে। তিনিই পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবেন।

আগের ঘটনা

বুধবার জনসনের দুই গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী সাজিদ জাভেদ এবং ঋষি সুনাক মন্ত্রীপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। তারপরেও জনসন পার্লামেন্টারি কমিটিতে জানিয়েছিলেন, তিনি ইস্তফা দেবেন না। কিন্তু তারপর একের পর এক মন্ত্রী ও কর্মকর্তা পদত্যাগ করতে শুরু করেন। তার প্রতি এই অনাস্থার প্রকাশ দেখে চাপের মুখে পড়ে জনসনও অবশেষে সিদ্ধান্ত বদল করলেন। সবমিলিয়ে মোট ৫৭ জন মন্ত্রী ও কর্মকর্তা পদত্যাগ করেছেন।

এর আগে জনসন বলেছিলেন, ''আমি এখন ইস্তফা দিচ্ছি না। কারণ, দেশ এখন নির্বাচন চায় না। আমি সেই সব বিষয়ের উপর নজর দিচ্ছি যা দেশের জন্য জরুরি। ইউরোপে গত ৮০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় যুদ্ধের দিকে আমি মনোনিবেশ করছি।''

পার্লামেন্টারি কমিটিতে জনসন বলেছেন, ''আমি সব সমস্যার মুখোমুখি হতে চাই, পালিয়ে যেতে চাই না।''

এরপর তিনি আবাসন মন্ত্রী মাইকেল গভকে ডেকে পাঠিয়ে ইস্তফা দিতে বলেন। ব্রেক্সিট নিয়ে মাইকেল গভ সরকারের তরফে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন। কিন্তু বুধবার তিনি বলেন, দেশ ও দলের স্বার্থে জনসনের পদত্যাগ করা উচিত।

জনসনের পার্লামেন্টের সচিব জেমস ডাডরিজ স্কাই নিউজকে জানান, ''মাইকেল গভকে বরখাস্ত করেছেন জনসন।  প্রধানমন্ত্রী রীতিমতো চনমনে আছেন এবং তিনি লড়াই চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর।''

কী পরিস্থিতি?

করোনাকালে বিধি ভেঙে জনসন পার্টি করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। তার জন্য একটি ক্ষেত্রে তিনি জরিমানাও দিয়েছেন। সম্প্রতি তিনি এমন একজনকে চিফ হুইপ করেছেন, যার বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে। তা জেনেও জনসন তাকে চিফ হুইপ করায় দলে প্রচুর জলঘোলা হয়েছে। 

পদত্যাগ করার পর সাবেক মন্ত্রী সাজিদ জাভেদ পার্লামেন্টে বলেন, তিনি ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি বরাবর টিম প্লেয়ার হিসাবে কাজ করে এসেছেন। কিন্তু যখন ক্যাপ্টেন ভালো হয়, তখন টিমও ভালো হয়। গত কয়েক মাস ধরে যা হচ্ছে, তাতে টিমে থাকা আর তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না।

জিএইচ/এসিবি (রয়টার্স, এপি, এএফপি)