পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের টুকিটাকি
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের একটি অন্যতম ও জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। একদিকে ঝাউবনের সবুজের সমারোহ, অন্যদিকে বিস্তীর্ণ নীল জলরাশির পাশাপাশি অপরূপ সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত মনকে আনন্দে পরিপূর্ণ করে দেয়।
‘‘আপু, ছবি তুলবেন?’’
পতেঙ্গা সৈকতের প্রবেশমুখেই দেখা গেল আলোকচিত্রীদের জটলা। জানা যায়, প্রায় দুই শতাধিক আলোকচিত্রী দর্শনার্থীদের ছবি তুলতে কাজ করেন। আগে আলোকচিত্রীদের বিরুদ্ধে দর্শনার্থীদের হয়রানি করার অভিযোগ থাকলেও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে এখন অনেকটাই তা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
নোঙর করা জাহাজ
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে দাঁড়ালে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রবেশের জন্য নোঙর করা অবস্থায় থাকা বিশাল সব বাণিজ্যিক জাহাজ দেখতে পাওয়া যায়। সূর্যাস্তের পর অসংখ্য জাহাজের মিটমিটে আলো এক নৈসর্গিক দৃশ্যের জন্ম দেয়।
ঘোড়ার গাড়ি
পতেঙ্গা সৈকতে ঘুরতে গেছে কিন্তু ঘোড়ার গাড়িতে চড়েনি এমন দর্শনার্থী খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। সৈকতের এ মাথা থেকে ওমাথা ঘোরার জন্য জনপ্রতি ৫০ টাকা এবং দলবল নিয়ে ঘুরতে চাইলে ২০০ টাকা ভাড়া দিতে হয়।
একটু জিরিয়ে নেয়া
সৈকতে বেড়ানোর পর ক্লান্ত হয়ে গেলে যে কেউ তীরে সাজানো ছাতার নীচে বসতে পারেন। তবে এজন্য ঘণ্টা প্রতি দর্শনার্থীদের ৫০ টাকা গুনতে হবে।
সমুদ্রের পানিতে গোসল
শীতকালে অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্রগুলোর মতো পতেঙ্গা সৈকতেও থাকে মানুষের প্রচণ্ড ভিড়। পরিবারসহ অনেকেই ঘুরতে এসে গোসলের জন্য নেমে পড়েন পানিতে।
প্রথমবারের মতো বন্ধুদের নিয়ে
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থেকে উচ্চমাধ্যমিকে পড়ুয়া শফিউল আলম গিয়েছিলেন ১২ জন বন্ধু নিয়ে। তিনি জানান, এবারই তার প্রথমবার পতেঙ্গায় যাওয়া। ভ্রমণটিকে স্মরণীয় করে রাখতে রোদচশমা এবং গিটার ভাড়া করে বেশ কিছু ছবি তোলেন তিনি।
স্পিডবোটে নেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা
পতেঙ্গা সৈকতে এসে স্পিডবোটে করে ঘোরেন অনেক পর্যটক। কিন্তু প্রায় ৫০টি স্পিডবোট থাকলেও কোনোটিতেই পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট নেই। অতিরিক্ত গতির কারণে স্পিডবোটগুলোতে দুর্ঘটনা ঘটতেও শোনা যায় বলে জানান দর্শনার্থীরা।
পড়ন্ত বিকেলে ঘুরতে আসা
চট্টগ্রাম শহর থেকে দক্ষিণে মাত্র ১৪ কিলোমিটার গেলেই পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত। শহরের এতো কাছে এতো বড় পর্যটনকেন্দ্র পাওয়া কঠিন। তাই স্থানীয়রা অনেকেই বন্ধুবান্ধব অথবা পরিবারসহ বিকেলের সময়টা সুন্দরভাবে কাটানোর জন্য সেখানে ঘুরতে যান বলে জানান অনেকেই।
সূর্যাস্ত দেখা
সমুদ্র সৈকতের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ তীরে দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত দেখা। অনেককেই অধীর আগ্রহে এ জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। চট্টগ্রামের হাটহাজারী থেকে যাওয়া নাসিরউদ্দীন খান জানান, নিজের চোখে সূর্যাস্ত দেখার যে আনন্দ, সেটা ছবি বা অন্য মাধ্যমে দেখে পাওয়া যায় না।
ভিড় থাকে সন্ধ্যার পরেও
পতেঙ্গা সৈকত থেকে শহরে যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় অনেককেই নির্বিঘ্নে সন্ধ্যার পরেও সৈকতে অবস্থা করতে দেখা যায়। একজন জানালেন, আগে এখানে আসার রাস্তা বেশ খারাপ ছিল। দিনদিন পর্যটকের সংখ্যা বাড়ার কারণে রাস্তা মেরামত করা হয় এবং সৈকতের সার্বিক নিরাপত্তা আগের চেয়ে ভালো বিধায় দেরি করলেও তেমন সমস্যা হয় না।