1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

পড়াশোনার জন্য মাসে অন্তত ৮০০ ইউরো প্রয়োজন জার্মানিতে

২৯ আগস্ট ২০১১

এই টাকা দিয়ে পড়াশোনা, থাকা এবং খাওয়া কোনভাবে চালানো যায়৷ দিতে হয় প্রতি মাসে স্বাস্থ্যবিমার টাকা৷ এর মধ্যে থেকেই টাকা কিছু জমাতে হবে কারণ প্রতি সেমেস্টারের জন্য টিউশন ফি রয়েছে৷

https://p.dw.com/p/12PCd
ছাত্রছাত্রীদের সাবধানে টাকা খরচ করতে হয়ছবি: picture-alliance/dpa

জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমেস্টার ফি বিভিন্ন রকম৷ কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬০০ ইউরো, কোথাও ৫০০ ইউরো৷ তবে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল প্রতি মাসে ছাত্র বা ছাত্রীর হাতে এই টাকা কে তুলে দেয়? প্রতিটি বাবা-মায়ের পক্ষে কি সম্ভব এত টাকা প্রতি মাসে একটি সন্তানের পেছনে খরচ করার? আসল কথা হল এই টাকা দেয়ার সামর্থ্য অনেক বাবা-মারই নেই৷

BdT Studenten protestieren
টিউশন ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ছাত্র বিক্ষোভছবি: AP

সাভাসের বয়স ২৬ বছর৷ গুমার্সবাখে সে মাশিনেনবাও বা মেশিন তৈরির বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করছে৷ সাভাসের আরো তিন ভাই-বোন রয়েছে৷ এদের মধ্যে দু'জন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে৷ বাবা-মা সাভাসকে আর্থিকভাবে সাহায্য করতে পারছে না৷ আর এ কারণেই সাভাসকে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করতে হচ্ছে৷ সে জানায়, ‘‘আমি পড়াশোনার পাশাপাশি কয়েকটি কাজ করি৷ বৃদ্ধদের দেখাশোনার কাজ করি একটি ওল্ড হোমে৷ এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের সাহায্য দপ্তর ‘আসটা'তেও আমি কাজ করি৷ এভাবেই আমি টাকা যোগাড় করি৷ গ্রীষ্মকালীন ছুটির সময় আরো অনেক বেশি কাজ করি৷ তখন আমি টাকা জমাই যাতে করে আমার পড়াশোনায় কোন বিরতি না পড়ে৷ আমি একবারে পড়াশোনা শেষ করতে চাই৷ এই টাকা থেকে আমাকে হেল্থ ইন্স্যুরেন্সের টাকাও দিতে হয়৷''

জার্মানিতে সাভাসের মত আরো ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে৷ প্রতি চারজনের মধ্যে তিনজন ছাত্র-ছাত্রীকেই পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করতে হয়৷ এভাবেই পড়াশোনার খরচ উঠে আসে৷ সাভাসের মত অনেকেই কয়েকটি কাজ করছে কারণ একটি কাজ যথেষ্ঠ নয়৷ সাভাসের কথায়, ‘‘অবশ্যই এটা খুব কঠিন৷ কারণ আমাকে সবার আগে নিজের খরচের কথা ভাবতে হয়৷ কীভাবে পড়াশোনার খরচ উঠে আসবে সেই চিন্তা করতে হয়৷ তবে সবসময় প্রয়োজনমত টাকা হাতে আসে না৷ তখন পড়ানোর কাজ করতে হয়৷ জুনিয়র সেমেস্টারের ছেলে-মেয়েদের পড়াই৷ আমি গত দশ বছর ধরে কাজ করছি৷ কখনো পড়ানোর কাজ করেছি কখনো ফ্যাকাল্টির বিভিন্ন কাজ করে দিয়েছি৷''

Studentische Weihnachtsjobs: Jennifer Bohne, die gebrannte Mandeln verkauft
দোকানে কাজ করে কিছু উপার্জন করার সুযোগ রয়েছেছবি: DW

জার্মান ছাত্র-ছাত্রীদের কাজের বিষয়ে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই যেটা বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের বেলায় রয়েছে৷ একজন বিদেশি ছাত্র বা ছাত্রী বছরে ৯০ দিনের বেশি কাজ করার অনুমতি পায় না৷ এর বেশি কাজ করলে সে আর ছাত্র বা ছাত্রী থাকতে পারে না৷ সেই তুলনায় জার্মান ছাত্র-ছাত্রীদের সারা বছরই কাজ করার সুযোগ রয়েছে৷ আখিম মায়ার বিশ্ববিদ্যলয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের সাহায্যকারী অফিস স্টুডেন্টেনভ্যার্কে কাজ করছেন৷ এ প্রসঙ্গে তিনি বললেন, ‘‘পড়াশোনার খরচ কীভাবে চালানো হবে – এই প্রশ্নটা বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য খুবই সমস্যার সৃষ্টি করে৷ বিশেষ করে যে সব ছাত্র-ছাত্রী এখানে পড়াশোনা শেষ করেছে তারা এখানেই ফুলটাইম কাজ খোঁজে৷ এর কারণ আছে কারণ তারা এখানেই পড়াশোনা করেছে৷ আমরা তাদের শিক্ষা দিয়ে তৈরি করেছি৷ তবে এর পাশাপাশি আরো বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হয় বিদেশি ছাত্র-ছাত্রীরা৷''

তবে কাজ পাওয়ারও সমস্যা রয়েছে৷ কেউ যদি কাজ পেয়েও যায় তাকে ক্লাসের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কাজে আসতে হবে নয়তো ক্লাস মিস হবে৷ কারণ কোন অবস্থাতেই কাজটা পড়াশোনা পথে বাধা হয়ে দাঁড়ালে চলবে না৷ ইটালির ছাত্র জিয়ানকে বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হয়েছিল কাজ পাওয়ার জন্য৷ জিয়ান জানায়, ‘‘আমি বিভিন্ন কল সেন্টারে কাজ করেছি৷ ইন্টারনেট ক্যাফেতে কাস্টমার সার্ভিসে ঘন্টার পর ঘন্টা কাস্টমারদের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি৷ প্রায় আড়াই বছর পড়াশোনার পাশাপাশি আমাকে বিভিন্ন ধরণের কাজ করতে হয়েছে৷ আমি বলবো সবকিছুরই ভাল এবং খারাপ দিক রয়েছে৷ আমার ভাগ্য ভাল যে আমি আমার ইচ্ছেমত কাজের সময় ঠিক করে নিতে পেরেছি৷ পরীক্ষার আগে বেশি করে কাজ করেছি যেন পরীক্ষার সময় কাজ করতে না হয়৷ সেমেস্টার শুরুর পরপরই সমানতালে চলেছে পড়াশোনা এবং কাজ৷ যখন কাজের চাপ তীব্র ছিল তখন আমার বেশ কিছু ক্লাস মিস হয়েছে ফলে সেই বিষয়গুলোর পরীক্ষাও দিতে পারেনি৷ সেসব পরীক্ষা পরবর্তী সেমেস্টারে দিতে হয়েছে৷''    

প্রতিবেদন: মারিনা জোয়ারদার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য