নয় ছবিতে চীনের ৭০ বছর
১ অক্টোবর ঘটা করে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার ৭০ বছর পূর্তি পালিত হচ্ছে৷ ছবিঘরে গত ৭০ বছরের কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা তুলে ধরা হচ্ছে৷
মাও সে তুং, জাতির জনক
১৯১১ সালে চিং রাজবংশের পতনের পর গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছিল৷ এরই মধ্যে ১৯২১ সালে কমিউনিস্ট পার্টি গঠিত হয়৷ এই পার্টির চেয়ারম্যান মাও সে তুং ১৯৪৯ সালের ১ অক্টোবর গণপ্রজাতন্ত্রী চীন গঠনের ঘোষণা দেন৷ এর মধ্য দিয়ে চীনের মানুষের মধ্যে একতা ও শান্তি আসবে বলে মানুষ আশা করেছিল৷
লেখায় পরিবর্তন
১৯৫৬ সালে কমিউনিস্ট পার্টি প্রাচীন যুগ থেকে চলে আসা লেখার ধরনে পরিবর্তন এনেছিল৷ স্বাক্ষরতার হার বাড়িয়ে চীনকে আধুনিক যুগের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার আশা করেছিল দলটি৷ ইউনেস্কো বলছে, ১৯৮২ সালে চীনে সাক্ষরতার হার ছিল ৬০ শতাংশের বেশি৷ ২০১৮ সালে তা ৯৬ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে৷
তিব্বতে বিদ্রোহ
১৯৫৯ সালে তিব্বতের রাজধানী লাসায় চীনবিরোধী ও কমিউনিস্টবিরোধী বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল৷ এর এক সপ্তাহ পর তিব্বতের রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতা ১৪তম দলাই লামা ভারতে পালিয়ে যান৷ তিব্বত এখনো বেইজিংয়ের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে৷ দলাই লামার প্রতি সমর্থনসূচক চিহ্ন দেখালে এখনো গ্রেপ্তার, নির্যাতনের শিকার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে৷
সাংস্কৃতিক বিপ্লব
মাও সে তুং ১৯৬৬ সালে দশ বছরব্যাপী সাংস্কৃতিক বিপ্লব শুরু করেছিলেন৷ মূলত শিক্ষার্থীদের দিয়ে ‘রেড গার্ড’ নামের একটি আন্দোলন শুরু করিয়েছিলেন তিনি৷ কমিউনিস্ট পার্টির চিন্তাভাবনার সঙ্গে যে লেখক, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদরা অমত প্রকাশ করতেন তাদের জনসম্মুখে অপমান করা হতো৷ সেসব সহ্য করতে না পেরে অনেকে আত্মহত্যা করেছেন৷
মাও সে তুংয়ের দুই দিক
আধুনিক চীনে মাও সে তুংকে নায়ক হিসেবে দেখা হয়৷ কারণ, তিনি চীনকে বিশ্বে একটি সম্মানজনক পর্যায়ে নিয়ে গেছেন বলে মনে করেন অনেক চীনা৷ তাই মাও সে তুংয়ের মমি করা দেহ দেখতে যান তাঁরা৷ তবে ষাটের দশকে বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় অনেক মানুষের হত্যাকারী হিসেবে মাও সে তুংকে দেখে থাকে পশ্চিম৷
ডেং শিয়াওপিংয়ের নিয়ন্ত্রিত সংস্কার
শিয়াওপিংয়ের নীতির কারণে অর্থনৈতিকভাবে চীন আজ এ পর্যায়ে এসেছে৷ তিনি শেনজেনের মতো বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করেছিলেন, যেখান থেকে কোম্পানিগুলো দেশের বাইরে পণ্য রপ্তানি করতে পারতো৷ তবে তা করা হতো নিয়ন্ত্রিতভাবে৷
জনপ্রিয়তায় ভয়
১৯৯২ সালে ‘ফালুন গং’ নামে একটি ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক শরীর চর্চার চল শুরু করেছিলেন লি খুংচি৷ দিন দিন এর জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকায় ভয় পেয়ে গিয়েছিল কমিউনিস্ট পার্টি৷ তাই ১৯৯৯ সালে এই চর্চার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ফালুন গংয়ের কয়েক হাজার অনুসারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল৷
এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার সংযোগ
২০১৩ সালে চীনা প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং ‘দ্য বেল্ট অ্যান্ড রোড’ কর্মসূচি শুরু করেছিলেন৷ এর আওতায় এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে৷ চীনা ঋণ নিয়ে নিজ দেশের অবকাঠামো উন্নয়নের সুযোগ তৈরি হওয়ায় উন্নয়নশীল দেশগুলো এই কর্মসূচি নিয়ে সন্তুষ্ট৷ তবে এর মাধ্যমে দেশগুলো চীনা ঋণের ফাঁদে পড়ছে বলেও চিন্তিত অনেকে৷
মহাকাশেও সফল হতে চায় চীন
এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার হাতে মহাকাশের বেশিরভাগ সাফল্য ধরা আছে৷ তবে ২০৩০ সাল নাগাদ সেখানেও সুপার পাওয়ার হয়ে উঠতে চায় চীন৷ চলতি বছরের জানুয়ারিতে চাং’এ-৪ নামে দেশটির একটি প্রোব চাঁদের দূরবর্তী একটি অংশে পৌঁছেছে বলে সরকারি টেলিভিশনে জানানো হয়৷