1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
দুর্নীতিভারত

নিয়োগে ৩৫০ কোটির দুর্নীতি, যুব নেতার ২০ কোটির সম্পত্তি

পায়েল সামন্ত কলকাতা
১৪ মার্চ ২০২৩

তৃণমূলের আর এক যুব নেতার বিপুল সম্পত্তির হদিশ মিলল। আদালতে ইডি-র দাবি, সবমিলিয়ে নিয়োগ দুর্নীতর অঙ্ক পৌঁছে গিয়েছে ৩৫০ কোটি টাকায়।

https://p.dw.com/p/4Odgj
ছবি: Subrata Goswami/DW

পশ্চিমবঙ্গে স্কুল নিয়োগ দুর্নীতিতে একের পর এক নতুন নাম উঠে আসছে। এদের কেউ কেউ সরাসরি শাসক দলের সঙ্গে যুক্ত। হুগলির যুব নেতা কুন্তল ঘোষকে আগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকা তোলার অভিযোগ। এবার জালে হুগলিরই আর এক তৃণমূল যুব নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি হুগলি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ।

স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, ছোটখাটো মোবাইল দোকানের ব্যবসা ছিল শান্তনুর। দেড় দশক আগে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থায় চাকরি পান। প্রযুক্তিগত কাজের সহযোগী হিসেবে শান্তনুর  মাসে অনধিক ৫০ হাজার টাকা বেতন পাওয়ার কথা। তাই সাদামাটাই ছিল তার জীবনযাত্রা।

তৃণমূলে যোগ দেয়ার পর দ্রুত উত্থান হয় শান্তনুর। ইডি সূত্রের খবর, এখনো পর্যন্ত তার ২০ কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে। এর মধ্যে রয়েছে বিলাসবহুল রেস্তোরাঁ, একাধিক বহুমূল্যের ফ্ল্যাট ও জমি, অতিথি নিবাস। 

এর মধ্যে কয়েকটি সম্পত্তি রয়েছে স্ত্রী প্রিয়ঙ্কা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যৌথ মালিকানায়। প্রিয়ঙ্কাকে চলতি সপ্তাহে তলব করেছে ইডি। সামান্য চাকরি করে কীভাবে শান্তনুর এই বিপুল সম্পত্তি হল, তার তল পেতে চান তদন্তকারীরা। সোমবার শান্তনুকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে পেশ করা হলে বিচারক তাকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত ইডি হেফাজতে পাঠিয়েছেন।

শান্তনুকে ইডি আদালতে পেশ করার সময় তার দলেরই নেতা কুন্তল ঘোষের দিকে আঙুল তুলেছেন। শান্তনুর দাবি, ''তদন্তকে বিপথে চালানোর চেষ্টা করছে কুন্তল। ও এই দুর্নীতির 'মাস্টারমাইন্ড'। কুন্তল যে টাকা তুলেছে তা বাইরে পাচারের চেষ্টা করছে।''

কুন্তল আবার দাবি করেছিলেন, তিনি শান্তনুকে এক কোটি টাকা দেন। যদিও শান্তনু সেকথা খারিজ করে দিয়েছেন। তার বক্তব্য, ''আমি কোনো টাকা নিইনি কুন্তলের কাছ থেকে।'' তৃণমূলের দুই নেতা একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলায় অস্বস্তি বেড়েছে শাসক দলের।

তৃণমূলপন্থী পর্যবেক্ষক ভাস্কর সিংহরায় ডয়চে ভেলেকে বলেন, ''কোর্টে পেশ করার সময় কে কী বলছেন, তার কোনো ভিত্তি নেই। তদন্তকারী সংস্থা বিষয়টি খতিয়ে দেখে সাক্ষ্যপ্রমাণ সহ আদালতে পেশ করলে তা গুরুত্ব পাবে।''

কুন্তল ও শান্তনুর বিরোধ সম্পর্কে সাবেক পুলিশকর্তা নজরুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ''নিজের অপরাধ লঘু করতে অন্যের নাম বলতে পারেন। কিন্তু তাতে অপরাধ ঢাকা যাবে না। কাদের আশ্রয়ে এই বাড়বাড়ন্ত সেটা দেখতে হবে।''

শান্তনুর কাছ থেকে চাকরিপ্রার্থীদের তালিকা, ছবি মিলেছে। তার দুটি মোবাইল ঘিরে রহস্য ঘনীভূত হয়েছে। ইডির দাবি, মোবাইলে এমন কিছু তথ্য রয়েছে যা 'সোনার খনি'। কিন্তু যে চ্যাট হিস্ট্রি শান্তনু মুছে দিয়েছেন, সেই তথ্য উদ্ধার করতে চাইছে ইডি।

সোমবারের শুনানিতে ইডির আইনজীবী বলেছেন, ''দুর্নীতির অঙ্ক সাড়ে ৩০০ কোটিতে পৌঁছে গিয়েছে। পুরুলিয়ার ছোট টিলা থেকে এই দুর্নীতি পৌঁছে গিয়েছে এভারেস্টের চুড়োয়।'' 

এই প্রসঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতির একাধিক মামলার আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ডয়চে ভেলেকে বলেন, ''যে সম্পত্তি আপনারা দেখছেন, তা শান্তনুর নয়। তিনি এখানে শিখণ্ডী। এই সম্পত্তি আর এক বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের।''