1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নির্বাচনকে সামনে রেখে পোশাক শিল্পে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা

২৭ ডিসেম্বর ২০১৮

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পখাতকে অস্থির করে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে৷ পোশাক খাতের নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নকে কেন্দ্র করেই বিশেষ একটি মহল এই চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ গার্মেন্টস মালিকদের৷

https://p.dw.com/p/3AgVo
Bangladesch Textilarbeiterinnen
ছবি: picture-alliance/Zuma Press/S.K. Das

গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ঘোষিত যে নতুন বেতন কাঠামোর ঘোষণা দিয়েছে সেটি বাস্তবায়িত হচ্ছে এই ডিসেম্বর থেকে৷ সেই কাঠামোকে প্রত্যাখান করে আন্দোলনে নামতে যাচ্ছিল বেশ কয়েকটি শীর্ষ স্থানীয় গার্মেন্টসের শ্রমিকরা৷ এটিকে বিরোধী দলীয় চক্রান্ত বলেই মনে করছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত অধিকাংশ গার্মেন্টস মালিক৷

রয়টার্স প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গার্মেন্টস মালিকরা মনে করছেন ২০১৪ সালের নির্বাচন বয়কটকারী রাজনৈতিক দলই এই অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে৷ সেসময় তাদের সৃষ্ট রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে অনেক বিদেশি ক্রেতা বাংলাদেশ থেকে পোশাক নেওয়া বন্ধ করে দেয়৷

তিন পোশাক রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের উল্লেখ করে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, গত এক সপ্তাহে ময়মনসিংহসহ ঢাকার বেশ কয়েকটি গার্মেন্টসে কর্মবিরতিতে যায় শ্রমিকরা৷

সেপ্টেম্বরে সুপারিশকৃত নতুন বেতন কাঠামো চলতি ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর থেকেই কার্যকর হয়েছে৷ গার্মেন্টস শ্রমিকরা ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসের ১ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে ডিসেম্বর মাসের যে বেতন পাবেন তা নতুন কাঠামো অনুসারে৷ ২৫ নভেম্বর গেজেট প্রকাশ করে সরকার৷ দেশের রফতানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি আগের তুলনায় দুই হাজার ৭০০ টাকা বাড়িয়ে নতুন ন্যূনতম মজুরি করা হয়েছে আট হাজার টাকা৷ যা গত ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়েছে৷ আগে এই মজুরি ছিল পাঁচ হাজার ৩০০ টাকা৷ ২০১৩ সালে প্রথম পোশাক শ্রমিকদের বেতন বৃ্দ্ধি করা হয়৷

তবে শ্রমিকদের দাবি, এটি যথেষ্ট নয়৷ ঢাকার একটি পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক মীম বলেন, ‘‘এই  মজুরি ন্যূনতম ১২ হাজার হওয়া উচিত৷ প্রতিনিয়ত আমাদের কাজের চাপ বাড়ছে কিন্তু সে অনুযায়ী বেতন বাড়ছে না৷''

এদিকে গার্মেন্টস সেক্টরের অস্থিরতাকে ঘিরে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে৷ পুলিশের মুখপাত্র মোহাম্মদ সোহেল রানা বলেন, ‘‘আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা প্রতিবেদন রয়েছে যে পোশাক খাতে অস্থিরতা সৃষ্টির পায়তারা চলছে৷ তবে এটিকে দমন করতে আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতা গ্রহণ করেছি৷''

বাংলাদেশ পোশাক শিল্প ও রফতানিকারক সংগঠন বিজিএমই-এর প্রেসিডেন্ট সিদ্দিকুর রহমান বলেন,  ‘‘পরিস্থিতি শান্ত রাখতেই শ্রমিকদের অনুরোধ করা হয়েছে৷ তাদেরকে এই প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে যে নির্বাচনের পরপরই পুনরায় সরকারকে বেতন কাঠামোতে পরিবর্তনের অনুরোধ জানানো হবে৷''

অ্যাডাম অ্যাপারেলসের মালিক মুকুল জানান, ‘‘বিরোধী দল ইচ্ছা করে এই সময় তৈরি পোশাক খাতে অস্থিরতা সৃষ্টি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে৷ ডিসেম্বর মাস সব সময় পোশাক খাতের  ‌ব্যস্ত সময়৷ এই সময় তার প্রতিষ্ঠান ফ্রান্স, জাপান ও পর্তুগালের বড় বড় অর্ডার নিয়ে কাজ করছে৷ এই মুহূর্তে বিরোধী দল চক্রান্ত করে কাজ ব্যহত করছে৷'' তিনি এও বলেন আমরা শুরু থেকেই সরকারকে বেতন বাড়ানোর চাপ দিয়ে আসছি৷ তারপরেও গত সোমবার আন্দোলনরত শ্রমিকরা তার গার্মেন্টসে হামলা চালায়৷

মুকুল গার্মেন্টসের মেশিন অপারেটর মোহাম্মদ মুরাদ জানান, ‘‘নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতার ভয় আগে থেকেই ছিল৷ তবে পরিস্থিতি এখনও খারাপ হয়নি৷''

এদিকে এ অস্থিরতা প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা ও গার্মেন্টস ব্যবসায়ী মাহমুদ হাসান খানকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান৷

 শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন,  ‘‘দাবি অনুযায়ী বেতন বাড়ানোর পরও অস্থিরতার কোনও কারণ দেখছি না৷ পোশাক খাতকে ঘিরে বরাবরই অস্থিরতার চেষ্টা করে আসছে বিরোধী দল৷ এবারও সেরকম কিছু করতে চেষ্টা করছে৷''

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের রফতানি আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ অর্জিত হয় এই পোশাক খাত থেকে৷

এফএ/এপিবি (রয়টার্স)