1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাতিল হল ইউনূস সেন্টারের সম্মেলন

সমীর কুমার দে ঢাকা
২৮ জুলাই ২০১৭

এক বিবৃতিতে ইউনূস সেন্টার থেকে জানিয়েছে, পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় ‘সোশ্যাল বিজনেস ডে'-র সম্মেলন শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়ে গেল৷

https://p.dw.com/p/2hJty
ছবি: Getty Images

তবে শুক্রবার রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে বিদেশি অতিথিরা বেশ কিছু আলোচনা-চক্রে অংশ নেন৷ শনিবার তাঁদের ইউনূস সেন্টারে আরো কিছু আলোচনায় অংশ নেয়ার কথা রয়েছে৷ 

এর আগে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৫০টি দেশের প্রায় ৫০০ জন বিদেশি অতিথিসহ দু'হাজারেরও বেশি মানুষকে নিয়ে ইউনূস সেন্টার আয়োজিত এই সম্মেলনটি বাতিল হবার কথা বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়৷ তবে বিবৃতির শেষ লাইনে কিছু ‘সেশন' আয়োজনের চেষ্টা করা হবে বলেও জানানো হয়েছিল৷

‘এত বিদেশি অতিথি চলে এসেছেন, তাঁদের কীভাবে কাজে লাগানো যায় সেই চেষ্টাটাই করেছি’

ইউনূস সেন্টারের মিডিয়া মূখপাত্র সাব্বির আহমেদ ওসমানি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা আগের দিন বিবৃতিতে লিখে দিয়েছিলাম যে কিছু ‘সেশন' আমরা আয়োজনের চেষ্টা করছি৷ আসলে যেহেতু এত বিদেশি অতিথি দেশে চলে এসেছেন, তাঁদের কীভাবে কাজে লাগানো যায় সেই চেষ্টাটাই করেছি আমরা৷ এর অংশ হিসেবে হোটেল লা মেরিডিয়ানের কনফারেন্স লাউঞ্জে ঘরোয়া পরিবেশে আমরা আলাপ-আলোচনা করেছি৷  কারণ আমাদের অধিকাংশ অতিথি এই হোটেলেই আছেন৷ নিরাপত্তার বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েই এটা করা হয়েছে৷ আলোচনা-চক্রে ২৪৩ জন বিদেশি অতিথি অংশ নিয়েছেন৷ অনুষ্ঠানের শুরুতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্বাগত বক্তব্য দেন৷ পরে মূল বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব এবং জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়ন বিষয়ক সমন্বয়ক টোমাস গাস৷ এছাড়া বিশ্ব অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট জোয়েল বোজোও বক্তব্য রাখেন৷ পুরো অনুষ্ঠানটি ফেসবুকে লাইভ করা হয়েছে৷ কারণ যাঁরা এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি তাঁরাও এর মাধ্যমে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেছেন৷

সোশ্যাল বিজনেস ডে' সম্মেলনের মাত্র চার দিন আগে নিরাপত্তা চেয়ে চিঠি পাঠানোর কারণে অনুমতি দেয়নি পুলিশ৷ তবে ইউনূস সেন্টার বলছে, তারা ১৯ জুলাই ঢাকার এসপির কাছে নিরাপত্তা চেয়ে চিঠি দিয়েছিলেন৷ পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, ২৪ তারিখে তারা চিঠি পেয়েছেন৷ ফলে হাতে সময় ছিল না৷ অথচ পুলিশের ঢাকার এসপি শাহ মিজান শাফিউর রহমান ডয়চে ভেলেকে বলেছেন যে, তিনি ১৯ তারিখেই চিঠি পেয়েছিলেন৷ এবং ২০ তারিখে সেটা তিনি পাঠিয়ে দেন পুলিশ সদরে৷ মাঝে শুক্রবার ও শনিবারের ছুটি থাকায় আইজিপির কাছে পৌঁছাতে দেরী হয়৷ তিনি বলেন, ‘‘ইউনূস সেন্টার এটা নিয়ে গাফিলতি করেছে৷ তারা একজন অবসরপ্রাপ্ত মেজরকে পাঠিয়েছিল৷ তিনি কোনো তথ্যই দিতে পারেন না৷ পরে ২৪ তারিখে তাদের একজন ফোন করে কী করতে হবে সেটা জানতে চান৷ তাঁকে সবকিছু বুঝিয়েও দেয়া হয়৷ এরপর ২৭ জুলাই তারা জানায় যে, এই অনুষ্ঠানটা তারা আর আশুলিয়ায় করছে না৷''

‘ইউনূস সেন্টার এটা নিয়ে গাফিলতি করেছে’

ইউনূস সেন্টারের বক্তব্য অনুযায়ী, নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য পুলিশ সুপারের কাছে বরাবর আবেদন করা হয়েছিল ১৯ জুলাই৷ একই দিন ইউনূস সেন্টার থেকে ইপিজেড ফায়ার সার্ভিস বরাবর আবেদন করা হয়েছিল অগ্নিনির্বাপক নিরাপত্তার জন্য৷ ট্রাফিক পরিদর্শকের কাছেও আবেদন করা হয়েছিল ঐ একই দিন৷ পরদিন, অর্থাৎ ২০ জুলাই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক, ইমিগ্রেশন বরাবর আবেদন করা হয়েছিল বিদেশি অতিথিদের নামসহ একটি তালিকা যাতে দেওয়া হয়৷ শুধু এবার নয়, এর আগে যে ৬টি সামাজিক ব্যবসা সম্মেলন ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে সবগুলোতেই নির্দিষ্ট দিন আগে চিঠি দিয়ে নিরাপত্তা চাওয়া হয়েছে৷ অন্যান্য বছর নিরাপত্তা দেয়া হলেও এবার অদৃশ্য কারণে এটা দেয়া হয়নি৷ এবার পুলিশ অল্প সময়ের কথা বলছে৷ কিন্তু আগেও এই ক'দিনের ব্যবধানেই চিঠি দেয়া হয়েছে৷ তখন তারা কিছু বলেনি কেন?

পুলিশের নিরাপত্তার অজুহাত এবং সম্মেলনটি হতে না পারা প্রসঙ্গে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এতে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে৷ এই ধরনের আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান দেশে বেশি করে হওয়া উচিত৷ দেশের ভাবমূর্তি তো এমনিতেই সংকটে৷ তার মধ্যে এই ধরনের ঘটনা বর্হিবিশ্বে খারাপ বার্তা দেবে৷'' অল্প কয়েকদিন আগে নিরাপত্তা চাওয়ায় পুলিশ নিরাপত্তা দিতে পারেনি৷ তা এমনটা কেন হলো? – এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘এগুলো কোনো যুক্তির কথা না৷ পুলিশ তো দেশে আছেই৷ তাছাড়া একটা কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠান হবে৷ সেখানে তো কোনো হামলার ঝুঁকি নেই৷ তাহলে নিরাপত্তার নামে এই বাড়াবাড়ি কেন? দেশে তো এখন এমন কোনো পরিস্থিতিও নেই যে, বিদেশিদের নিয়ে অনুষ্ঠান করলে ঝামেলা হতে পারে৷ তাহলে?''

‘নিরাপত্তার নামে এই বাড়াবাড়ি কেন’

এ বছরের সামাজিক ব্যবসা দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘সম্পদ কেন্দ্রীকরণ বন্ধ করা কি সম্ভব?' সম্পদ কেন্দ্রীকরণের ঝুঁকি এবং সম্পদ কেন্দ্রীকরণের প্রবণতাকে কীভাবে উলটো দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া যায় – সেটাই ছিল সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয়, যা নিরাপত্তাজনিত কারণের ফলে ঠিকমতো অনুষ্ঠিত করা গেল না৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য