1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ট্রাম্পের হোয়াইট হাউস অবিশ্বাসের আস্তানা

৯ জুলাই ২০২০

তিনি ছিলেন ট্রাম্পের প্রাক্তন নিরাপত্তা উপদেষ্টা। ডয়চে ভেলেকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জন বোল্টন কিছু বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে।

https://p.dw.com/p/3f0OO
ছবি: picture-alliance/Y. Gripas

বছর শেষে অ্যামেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার রিপোর্ট বলছে, প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমছে। একই কথা বলছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তারই মধ্যে ডয়চে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের প্রাক্তন নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন জানালেন, প্রেসিডেন্ট হোয়াইটহাউসে কাউকেই বিশ্বাস করেন না।

বছরের গোড়াতেও দেশের সাধারণ মানুষের কাছে যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু একের পর এক অভিঘাত ক্রমশ তাঁকে দেশের মানুষের কাছে অপ্রিয় করে তুলেছে। এক দিকে করোনা পরিস্থিতি, তার জেরে লকডাউন এবং কাজ চলে যাওয়া, অন্য দিকে জর্জ ফ্লয়েড হত্যা-- সব মিলিয়ে রীতিমতো উদ্বেগে ট্রাম্প প্রশাসন। সাধারণ মানুষের বক্তব্য, কোনও কিছুই সামলে উঠতে পারছেন না প্রেসিডেন্ট। বিরোধীপক্ষও লাগাতার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন সম্প্রতি টুইট করে বলেছেন, 'ট্রাম্পের উচিত নিজের কাজ মন দিয়ে করা।'

এই পরিস্থিতিতেই ফের মুখ খুললেন প্রাক্তন নিরাপত্তা উপদেষ্ঠা জন বোল্টন। ১৮ মাস হোয়াইহাউসে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ছিলেন বোল্টন। সম্প্রতি একটি বইও লিখেছেন তিনি। যেখানে ট্রাম্পের একাধিক সমালোচনা করেছেন। প্রেসিডেন্টের ইমপিচমেন্ট শুনানি পর্বেও বার বার বোল্টনের নাম সামনে এসেছে। সেনেটে গিয়ে সাক্ষ্য দিতেও রাজি হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁর সাক্ষ্য নেওয়া হয়নি।

ডয়চে ভেলেকে বোল্টনজানিয়েছেন, ট্রাম্পের পড়ার বিশেষ অভ্যাস নেই। গুরুত্বপূর্ণ নথিও গোটাটা পড়ে দেখেন না তিনি। হোয়াইট হাউস অবশ্য দাবি করে, ট্রাম্পের কাছে সমস্ত তথ্য থাকে। কিন্তু বোল্টন তা মানতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, নিরাপত্তা বিষয়ক নথিও পুরোটা পড়ে দেখেন না ট্রাম্প। তিনি চলেন নিজের মেজাজে। তাঁর যা ভালো মনে হয়, সেটাই করেন। এ প্রসঙ্গেই উত্তর কোরিয়ার প্রধান কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন বোল্টন। জানান, ওই বৈঠকেও ট্রাম্প নিজেকে খুব তৈরি করে যাননি। তাঁকে যা যা নথি দেওয়া হয়েছিল, তার প্রায় কিছুই তিনি মন দিয়ে পড়েননি। এবং সে কারণেই কার্যত বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হয়েছিল তাঁকে। শেষ মুহূর্তে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, উত্তর কোরিয়ার ডিল মনে নিলে দেশে প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়তে হবে তাঁকে।

হোয়াইহাউসে তাঁর অভিজ্ঞতার কথাও জানিয়েছেন বোল্টন। তাঁর বক্তব্য, কর্মীদের অধিকাংশকেই বিশ্বাস করেন না ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, হোয়াইটহাউসের মধ্যে একটা অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি করে রাখেন তিনি। যাতে কেউ কাউকে বিশ্বাস না করেন। এটাই প্রেসিডেন্টের কাজের পদ্ধতি। এবং সে কারণেই কেউ ট্রাম্পের সমালোচনা করতে পারেন না। সমালোচনা করার অর্থ কাজ থেকে বিদায় নেওয়া। চাকরি চলে যাওয়ার ভয়ে কেউ আর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন না। ভুলও ধরিয়ে দেন না।

বোল্টনের বক্তব্য, চীনের রাষ্ট্রপ্রধান শি জিনপিং কিংবা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনকে ঈর্ষা করেন ট্রাম্প। তাঁদের একচ্ছত্র ক্ষমতাই এর কারণ বলে মনে করেন তিনি। এই প্রসঙ্গেই সৌদি আরবের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্কের প্রসঙ্গে নিজের মতামত জানিয়েছেন বোল্টন। তাঁর বক্তব্য, সৌদির সঙ্গে ট্রাম্প সুসম্পর্ক না রাখলে পুটিন সেখানে অস্ত্র বিক্রি করতেন। পুটিনের কাছ থেকে এমনটাই জেনেছেন তিনি। সে কারণেই সৌদি আরবের সঙ্গে অ্যামেরিকার সুসম্পর্ক রাখা জরুরি ছিল।

ইমপিচমেন্ট নিয়েও নিজের মতামত জানিয়েছেন বোল্টন। তাঁর বক্তব্য, যে কায়দায় ট্রাম্প নিজেকে ইমপিচমেন্টের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন, দেশের মানুষ তা খুব ভালো চোখে দেখেননি। তাঁর বক্তব্য, সেনেটে ইমপিচমেন্টের গোটা প্রক্রিয়াটাই পক্ষপাতপূর্ণ ছিল। সকলের চোখেই তা ধরা পড়েছে।

এসজি/জিএইচ (ডিডাব্লিউ)