নিজ দেশেই শরণার্থী আফগানরা
দ্রুত রাজধানী কাবুলের দিকে এগোচ্ছে তালেবান৷ এক সপ্তাহেই দেশটির বেশ কয়েকটি প্রাদেশিক রাজধানীর পতন ঘটেছে৷ বিভিন্ন স্থানে আফগান সৈন্যদের সঙ্গে চলছে তালেবানের তুমুল লড়াই৷ সংঘর্ষ থেকে বাঁচতে রাজধানীতে পালাচ্ছেন অনেকে৷
এগিয়ে আসছে তালেবান
কুন্দুজ প্রদেশের রাজধানী আগেই দখল করেছিল তালেবান৷ কিন্তু বিমানবন্দরটির দখল নিতে পারছিল না সশস্ত্র গোষ্ঠীটি৷ এবার সেটিরও দখল গেল তালেবানের হাতে৷ বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আফগান ন্যাশনাল সিকিউরিটি ফোর্সের সদস্যরা তালেবানের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন বলে জানিয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যম৷
এক সপ্তাহে নয়টি প্রদেশ
গত এক সপ্তাহে নিজেদের আক্রমণ আরো শাণিত করেছে তালেবান৷ এই এক সপ্তাহেই দেশটির নয়টি প্রদেশের রাজধানী দখল করেছে তারা৷ বুধবার তাজিকিস্তান সীমান্তবর্তী বাদাখশান প্রদেশের রাজধানী ফয়জাবাদ সিটির নিয়ন্ত্রণও নিয়েছে তারা৷
স্থানীয়রা সংকটে
তুমুল লড়াই ছড়িয়ে পড়ায় অনেক আফগান নিজেদের এলাকা ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটছেন৷ বেশিরভাগ এলাকা তালেবান আক্রান্ত হওয়ায় তাদের অনেকের শেষ ভরসা রাজধানী কাবুল৷
নিজ দেশে শরণার্থী
গত কয়েকদিনে আফগানিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ায় হাজার হাজার আফগান আশ্রয় নিয়েছেন কাবুলে৷ তাদের অনেককেই অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দেয়া হয়েছে কাবুলের বিভিন্ন পাবলিক পার্কে৷
মানবিক বিপর্যয়
ভিটেমাটি থেকে অনেকেই এক কাপড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন৷ পরিবারের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে অনেকে জীবনের সমস্ত সঞ্চয় পেছনে ফেলে এসেছেন৷ কেউ কেউ রাতে ঘুমানোর জন্য মাথাগোঁজার ঠাঁই হিসাবে ছোট তাঁবু পেলেও অনেক পরিবারের শিশু ও নারীদেরও রাত কাটাতে হচ্ছে খোলা আকাশের নীচে৷
খাদ্যসংকট
রাজধানীতে পুরো দেশ থেকে হাজার হাজার শরণার্থী জড়ো হওয়ায় আবাসন সংকটের পাশাপাশি খাবার সংকটও দেখা দিয়েছে৷ বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী ও প্রতিষ্ঠান এগিয়ে এলেও তাতে বিপুল পরিমাণ চাপ সামলানো সম্ভব হচ্ছে না৷
চিকিৎসা সেবা
সংঘর্ষ চলতে থাকা এলাকা থেকে পালিয়ে আসা অনেকেই আহত৷ বেশ কিছু শিশুও গোলা ও বোমার আঘাতে আহত অবস্থায় কাবুলে এসেছে৷ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান তাদের জন্য কাবুলের পার্কে অস্থায়ী হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করেছে৷
মাজার-ই-শরীফে গনি
তালেবানের হাতে যখন একের পর এক প্রদেশের পতন ঘটছে, তখনই উত্তরের বিভিন্ন প্রদেশের পরিস্থিতি দেখতে মাজার-ই-শরীফ সফরে গেছেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি৷ স্থানীয় বিমানবন্দরে নামার পর রাজনীতিবিদ ও আফগান সেনা কমান্ডাররা তাকে সবশেষ পরিস্থিতির বিষয়ে অবগত করেন৷
অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ
কবে শান্তি ফিরবে, কবে নিজের ঘরে ফিরতে পারবেন, কিছুই জানা নেই৷ অনিশ্চিত এক ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কোনো উপায়ও খোলা নেই তাদের সামনে৷ পরবর্তী প্রজন্মকে যুদ্ধের সহিংসতা থেকে রক্ষাই প্রথম উদ্দেশ্য৷