1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‌নাম বদলে কি চাঙা হবে কলকাতা বন্দর?‌

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
১৪ জানুয়ারি ২০২০

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এবারের কলকাতা সফরের মূল উপলক্ষ্য ছিল ক্যালকাটা পোর্ট ট্রাস্টের ১৫০ বছর পূ্র্তি উদযাপন৷ কিন্তু কলকাতা বন্দরের হাল ফেরানোর কোনও উদ্যোগ কি নিলেন তিনি?

https://p.dw.com/p/3WB6G
Indien Kolkata Port Trust wird 150 Jahre alt
ছবি: DW/S. Bandopadhyay

ক্যালকাটা পোর্ট ট্রাস্টের ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে কলকাতায় এসে প্রধানমন্ত্রী কলকাতা বন্দরের একাধিক নতুন প্রকল্পের শিলান্যাস করে গেলেন৷ সেই সঙ্গে কলকাতা বন্দর, যা চলতি কথায় খিদিরপুর ডক নামে পরিচিত, তার নতুন নামকরণ করে গেলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের তাত্ত্বিক নেতা শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির নামে৷ শ্যামাপ্রসাদ এমন একজন নেতা, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন এবং দেশ ভাগের ক্ষেত্রে যাঁর ভূমিকা যথেষ্ট বিতর্কিত৷ যে কারণে বিজেপি-বিরোধী দলগুলো শ্যামাপ্রসাদকে রীতিমত এড়িয়েই চলে৷ সেখানে কলকাতা বন্দরের নতুন নামকরণ কেন শ্যামাপ্রসাদের নামে, সেই রাজনৈতিক বিতর্ক উঠছেই৷
কিন্তু তার থেকেও বড় হয়ে উঠছে আরও জরুরি একটা প্রসঙ্গ৷ হুগলি নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ার কারণে ধুঁকতে থাকা কলকাতা বন্দর কি এই নামবদলের কারণে কোনওভাবে উপকৃত হবে?‌বিশেষত যেখানে নাব্যতা বাড়াতে নদীর বুকে জমে থাকা পলি নিয়মিত পরিষ্কার করার দরকার, কিন্তু তা হয় না কেন্দ্রীয় বাজেট না থাকার কারণে৷ এই নিয়ে কেন্দ্র সরকার, কেন্দ্রের অধীনস্থ স্বশাসিত সংস্থা ক্যালকাটা পোর্ট ট্রাস্ট এবং রাজ্য সরকারের বিরোধ বহুদিনের৷ কিন্তু মোদ্দা কথা হল, টাকা থাকে না বলে নদীখাতের পলি সরানো, বা ড্রেজিং নিয়মিত হয় না৷ এমনকি ড্রেজিং কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়াও কলকাতা বন্দরের এই দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা নিয়ে উদাসীন৷

সুব্রত চৌধুরি


কলকাতা বন্দর দিয়ে যাতে আরও পণ্যবাহী জাহাজ যাতায়াত করতে পারে, বন্দরের যাতে আধুনিকীকরণ হয়, তার স্বার্থে সেই ১৯৭২ সাল থেকেই সরব ‘‌অ্যাসোসিয়েশন ফর শিপিং ইন্টারেস্ট ইন ক্যালকাটা'‌সংস্থা৷ তাদের সাধারণ সম্পাদক এবং জলপথে পণ্য পরিবহণের কাজে সরাসরি যুক্ত সুব্রত চৌধুরির সঙ্গে কথা বলে জানা গেল আরও দুটি গুরুতর সমস্যার কথা৷ এবং সেখানেও কেন্দ্র সরকারের ঔদাসিন্য প্রকট৷ ২০০৮ সালে এই সংস্থার পক্ষ থেকে ভারতীয় সংসদের পর্যটন ও পরিবহণ বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটিকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, সারা ভারত জুড়ে জাতীয় সড়কগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ যেমন এক মন্ত্রকের আওতায় আনা হয়েছে, জলপথকেও সেই একই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হোক৷ কিন্তু বিষয়টি নিয়ে সরকারের গড়িমসি ছাড়া প্রাপ্তি কিছু হয়নি৷
কলকাতা বন্দরের সঙ্গে উত্তর এবং উত্তর–পূর্ব ভারতের রেল যোগাযোগ ভাল করা, সুনির্দিষ্ট এক ‘‌ফ্রেইট করিডোর'‌ গড়ে তোলা, যা কেবল বন্দরের পণ্য পরিবহণের জন্যই ব্যবহৃত হবে— সে প্রস্তাবও সরকারের ঘরে দীর্ঘদিন পড়ে আছে৷ অথচ সরকার উদ্যোগী হলে বাংলাদেশ-ভূটান-ইন্ডিয়া-নেপাল যে বাণিজ্য অঞ্চল, তার উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারত কলকাতা বন্দর৷ বলছেন সুব্রত চৌধুরি৷
প্রশ্ন সেখানেই৷ যে কলকাতা বন্দরকে শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির নামে করে এইসব সমস্যার একটিরও কি সুরাহা করে গেলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী?‌