1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নতুন সাজে বার্লিনের লুপ্ত কেল্লা

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১

ধ্বংস হয়ে যাওয়া কোনো ঐতিহাসিক ভবন আধুনিক যুগের উপযোগী করে পুনর্নির্মাণ করা বড় চ্যালেঞ্জ৷ বার্লিনের বিলুপ্ত কেল্লা বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি কেন্দ্র হিসেবে নতুন করে আত্মপ্রকাশ করছে৷

https://p.dw.com/p/3pW7o
হুমবল্ট ফোরাম
ছবি: SHF/Giuliani | von Giese

আধুনিক স্থাপত্যের সঙ্গে বারোক শৈলির মেলবন্ধন ঘটছে বার্লিনে৷ শহরের প্রাচীন কেল্লা আবার নতুন করে মাথাচাড়া দিচ্ছে৷ প্রায় আট বছর নির্মাণের পর ঐতিহাসিক এই ভবনটি দর্শকদের জন্য প্রায় প্রস্তুত৷ ভিতরে-বাইরে নতুন ও পুরাতনের মিশ্রণ চোখে পড়বে৷

ভবিষ্যতে সেখানে ‘হুমবল্ট ফোরাম’ নামের সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান চর্চা কেন্দ্র কাজ করবে৷ ফোরামের হার্টমুট ডর্গারলো বলেন, ‘‘হুমবল্ট ফোরাম কোনো কেল্লা নয়৷ জার্মান সংসদের নিম্ন কক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই ফোরামের জন্য ব়্যাডিকাল ধারণার নতুন ভবন গড়ে তোলা হচ্ছে৷ সেটি বার্লিনের পুরানো কেল্লার কথা মনে করিয়ে দেবে৷ বাইরের তিন দিক ও মাঝের খোলা অংশ ঠিক আগের কেল্লার মতো হুবহু গড়ে তোলা হয়েছে৷’’

এমনকি পুরানো কেল্লার কিছু অংশ নতুন ভবনে স্থান পাচ্ছে৷ উদ্বোধনের আগে স্থাপত্যের বৈশিষ্ট্য সবার আগে চোখে পড়ে৷ সেই ভবন জার্মানির ইতিহাস তুলে ধরছে৷ বারোক শৈলি অনুযায়ী তৈরি ভবনের বাইরের অংশ অষ্টাদশ শতাব্দীর কেল্লার হুবহু নকল৷

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মারাত্মক ক্ষতির পর কমিউনিস্ট পূর্ব জার্মানির নেতৃত্ব ১৮৫০ সালে সেই কেল্লা ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়৷ সেই জায়গায় ‘প্রজাতন্ত্র প্রাসাদ’ গড়ে তোলা হয়৷ সেখানে সাবেক পূর্ব জার্মানির সংসদের অধিবেশন বসতো৷

বিলুপ্ত কেল্লায় বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি কেন্দ্র

১৯৮৯ সালে নাগরিক প্রতিরোধের ফলে পূর্ব জার্মানির সরকারের পতন ঘটে৷ অনেক বিতর্কের পর ২০০৬ সালে ‘প্রজাতন্ত্র প্রাসাদ’ ভেঙে দেওয়া হয়৷ ২০১২ সালে কেল্লার নতুন সংস্করণ নির্মাণের কাজ শুরু হয়৷ ৬৭ কোটি ৭০ লাখ ইউরো ব্যয়ভারের একটা অংশ চাঁদা হিসেবে সংগ্রহ করা হয়েছে৷

একাধিক প্রদর্শনীর মাধ্যমে সেই জায়গার ইতিহাস তুলে ধরার পরিকল্পনা রয়েছে৷ হার্টমুট ডর্গারলো বলেন, ‘‘নৃতাত্ত্বিক মিউজিয়ামের বিভিন্ন সংগ্রহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এখানে তুলে ধরবে, যেমন উপনিবেশবাদ, উপনিবেশ-মনস্কতা থেকে শুরু করে হুমবল্ট ভাইদের কার্যকলাপ ইত্যাদি৷ এই ভবনে আজকের বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের বিশ্লেষণ করা হবে৷’’

ইটালির উত্তরে ভিচেন্সা শহরে বার্লিনের কেল্লার নতুন রূপের স্থাপত্যের রূপরেখা উঠে এসেছিল৷ ২০০৮ সালে এক প্রতিযোগিতায় ইটালির স্থপতি ফ্রাংকো স্টেলা সেরা নক্সা পেশ করেছিলেন৷ তাঁর মতে, ‘‘বার্লিনের ঐতিহাসিক কেন্দ্রস্থলের পথঘাট, চত্ত্বর ও ভবনগুলি কেল্লার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গড়ে তোলা হয়েছিল৷ পুনর্গঠনের ফলে সেই সম্পর্ক আবার চাক্ষুষ হয়ে পড়বে৷’’

করোনা মহামারির ফলে ধুমধাম করে কেল্লার আংশিক উদ্বোধনে বিলম্ব ঘটছে৷ বার্লিনের মানুষ ও অতিথিরা অবশ্য এখনই ভবনের বাইরের অংশ উপভোগ করতে পারেন৷’’ হুমবল্ট ফোরামের মহাপরিচালক ডর্গারলো বলেন, ‘‘আমরা এখনই কাজ শুরু করতে পারি বটে, তবে সে ক্ষেত্রে দর্শক ছাড়াই আমাদের এই মাইলফলকের স্বাদ নিতে হবে৷ এই ভবন আমাদের সবার জন্য, বিশ্বের সব মানুষের জন্য৷ আশা করি অদূর ভবিষ্যতে মানুষ এখানে আসতে পারবেন৷ তাদের জন্যই তো আমাদের এই আয়োজন৷’’

বার্লিনের প্রাচীন কেল্লার বর্তমান রূপ ইতিহাসের সাক্ষী৷ বারোক শৈলির বাইরের অংশের পেছনে অনেক আধুনিক উপকরণ লুকিয়ে রয়েছে৷

ইয়েন্স ফন ল্যার্শার/এসবি