1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নতুন আন্তর্জাতিক প্রণালীর ডাক দিলেন জার্মান চ্যান্সেলর

২৭ মে ২০২২

জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস ডাভোসে তার ভাষণে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিশ্বায়নের নতুন রূপের আহ্বান জানিয়েছেন৷ তবে তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে সমালোচনা বেড়ে চলেছে৷

https://p.dw.com/p/4BvQc
ছবি: Fabrice Coffrini/AFP

শামুকের পিঠে লাগানো একটি বুলেট – বেশ কয়েকদিন ধরে এমন একটি ছবি টুইটারে দেখা যাচ্ছে৷ জার্মানি ইউক্রেনকে যে গতিতে অস্ত্র ও সামরিক সাহায্য দিচ্ছে, তার প্রতি ব্যঙ্গ হিসেবে ছবিটি শেয়ার করেছেন বার্লিনে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত আন্দ্রি মেলনিক৷ অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও বাস্তবে জার্মানির সামরিক সহায়তা যুদ্ধক্ষেত্রে কার্যত পৌঁছাচ্ছেই না বলে ইউক্রেন বার বার ক্ষোভ প্রকাশ করছে৷ ফলে ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে পড়ছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস৷

বৃহস্পতিবার ডাভোসে বিশ্ব অর্থনীতি ফোরামে ভাষণ দিতে গিয়ে শলৎস বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিন ইউক্রেন যুদ্ধে কখনোই জয়ী হবেন না৷ শলৎসের মতে, পুটিন ইতোমধ্যেই তাঁর সব কৌশলগত লক্ষ্য পূরণ করতে বিফল হয়েছেন৷ যুদ্ধের সূচনার সময়ে রাশিয়া গোটা ইউক্রেন জবরদখল করার যে লক্ষ্য স্থির করেছিল, আজ তা দূর অস্ত৷ বরং ইউক্রেন ভবিষ্যতে ইউরোপের মধ্যে নিজস্ব স্থান আরও পাকাপোক্ত করেছে৷ রাশিয়ার যুদ্ধের নৃশংসতা ইউক্রেনকে আরও ঐক্যবদ্ধ করে তুলেছে বলে জার্মান চ্যান্সেলর মনে করেন৷ সেইসঙ্গে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন ন্যাটোয় যোগ দেবার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন৷ শুধু ন্যাটো নয়, পুটিন জি-সেভেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঐক্য ও শক্তিও আন্দাজ করতে পারেননি বলে শলৎস মনে করেন৷

ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার প্রেক্ষাপটে জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস বিশ্বায়নের নতুন রূপের আহ্বান জানিয়েছেন৷ তাঁর মতে, শুধু রাষ্ট্র হিসেবে ইউক্রেনের অস্তিত্ব বিপন্ন হয় নি, আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রণালীও প্রশ্নের মুখে পড়েছে৷ এই অবস্থায় এমন এক প্রণালীর প্রয়োজন, যা ক্ষমতাকে আইনের অধীনে সীমাবদ্ধ রাখবে, হিংসা নিষিদ্ধ করবে এবং স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির গ্যারেন্টি দেবে৷  

ডাভোসে শলৎসের ভাষণ সম্পর্কে হতাশা প্রকাশ করেছেন বার্লিনে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত মেলনিক৷ জার্মানির ‘বিল্ড’ সংবাদপত্রকে তিনি বলেন, জার্মান সরকার ইউক্রেনকে যুদ্ধ জয়ের জন্য সহায়তা করতে ঠিক কোন স্পষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, কিয়েভ শলৎসের ভাষণে সে কথা শোনার আশা করছিল৷ বিশেষ করে অবিলম্বে ভারি অস্ত্র সরবরাহের কোনো উল্লেখ করেন নি জার্মান চ্যান্সেলর৷ মেলনিক সরাসরি শলৎসের নেতৃত্বের ক্ষমতা ও সাহস নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন৷ তিনি বলেন, এমনকি শলৎস ইইউ-র প্রার্থী হিসেবেও ইউক্রেনকে স্পষ্ট সমর্থন জানান নি৷

শুধু ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত নয়, জার্মানিতে বিভিন্ন মহলে ইউক্রেনের সহায়তার ক্ষেত্রে জার্মান সরকারের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা বেড়ে চলেছে৷ বিরোধী ইউনিয়ন শিবিরের নেতা ফ্রিডরিশ ম্যারৎস বলেন, ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তার প্রশ্নে সরকার পোল্যান্ডের সঙ্গে বোঝাপড়ার শর্ত লঙ্ঘন করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ জার্মান সরকার কেন প্রতিশ্রুতি পালন করতে পারছে না, অবিলম্বে তা স্পষ্ট করা উচিত বলে তিনি মনে করেন৷ জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টিনে লামব্রেশট-ও কড়া সমালোচনার মুখে পড়ছেন৷ এমনকি সরকারের শরিক সবুজ দলও পোল্যান্ডের সঙ্গে বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে অস্পষ্টতার জন্য তাঁর সমালোচনা করেছে৷ তাছাড়া ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের প্রশ্নে সরকারের মধ্যে এখনো কোনো সমন্বয়ক না থাকায় সমালোচনা করেছে শরিক দল এফডিপি-র এক নেতা৷

এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)