ধ্বংসস্তূপ থেকে রোনাল্ডোর শহরে
সুনামিতে পরিবারের সবাইকে হারানোর শোক আর দারিদ্র্যের কষাঘাতে জর্জরিত যখন, ছেলেটি তখনও গায়ে দিয়েছে পর্তুগালের জার্সি৷ ফুটবলপ্রেমিক সেই কিশোর বড় ফুটবলার হতে রোনাল্ডোর শহরেই শুরু করেছে নতুন জীবন৷
রোনাল্ডোর সঙ্গে দেখা...
২০০৪ সালের ডিসেম্বরে ‘প্রলয়’ নেমে এসেছিল এশিয়ার সাগর তীরের কিছু এলাকায়৷ শ্রীলঙ্কা, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া মিলিয়ে মারা গিয়েছিল দু’লক্ষেরও বেশি মানুষ৷ ইন্দোনেশিয়ার মার্তুনিসের ঘর-বাড়িও নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় সেই সময়৷ সুনামির পর পর্তুগাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের হয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়েছিলেন রোনাল্ডো৷ তখন ফুটবলভক্ত মার্তুনিসের পাশে দাঁড়াতেও ভোলেননি৷
পর্তুগালের ভক্ত যখন স্কোলারির পাশে
২০০৪ সালে যখন বাবা-মা-ভাই-বোন সবাইকে হারিয়ে সে যখন নিঃসঙ্গ, জীবনে নেমে এসেছে চরম দারিদ্র্য, সেই অবস্থাতেও পর্তুগালের জার্সি গায়ে ফুটবল খেলতে দেখা যায় তাঁকে৷ মিডিয়া লুফে নিয়েছিল বিষয়টি৷ ২০০৬ বিশ্বকাপের প্রস্তুতির এক ফাঁকে পর্তুগালের তখনকার ব্রাজিলিয়ান কোচ লুই ফেলিপ স্কোলারিও সময় কাটিয়েছিলেন মার্তুনিসের সঙ্গে৷
ইউসেবিও-র পাশে গর্বিত মার্তুনিস
খুব বড় মাপের ফুটবলার হওয়া মার্তুনিসের স্বপ্ন৷ এটা জানার পর তাকে পর্তুগলে নিয়ে যাওয়া হয়৷ সেই সুবাদে ইন্দোনেশীয় কিশোরের পর্তুগালের ফুটবল কিংবদন্তি ইউসেবিও-র সঙ্গেও দেখা হয়েছে৷
ইউসেবিও, ফিগো, রোনাল্ডোদের দেশে
প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষের জীবন কেড়ে নেয়া সুনামি নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র তৈরি করতে গিয়ে মার্তুনিসকে পর্তুগালের জার্সি পরা অবস্থায় দেখতে পেয়েছিল স্কাই টিভির কয়েকজন কর্মী৷ সেই থেকে মার্তুনিস বিশ্বের অনেক দেশেই পরিচিত৷ পরে পর্তুগালেই নিয়ে যাওয়া হয়৷ শুরু হয় নতুন জীবন৷ ছবিতে পর্তুগালের আরেক সাবেক ফুটবল গ্রেট লুই ফিগোর সঙ্গে মার্তুনিস৷
স্বপ্ন পূরণের পথে...
২০০৪ সালের ৬ বছরের সেই কিশোরের বয়স এখন ১৭৷ বড় হয়েছে ঠিক, কিন্তু মার্তুনিসের স্বপ্নটা কিন্তু বদলায়নি৷ এখনো বড় ফুটবলার হতে চায় সে৷ সম্প্রতি পর্তুগালের স্পোর্টিং লিসবন ক্লাব তাকে ফুটবলার হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্বও নিয়েছে৷ মার্তুনিস এখন স্পোর্টিং লিসবন ফুটবল অ্যাকাডেমির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ৷ ফুটবলার হওয়া এখন ঠেকায় কে!