1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ধুলার অ্যালার্জি মোকাবিলার নানা উপায়

১৩ জুলাই ২০২১

অনেক মানুষ অ্যালার্জিতে ভোগেন, সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার পথ খুঁজে পান না৷ অথচ কম বয়সে অ্যালার্জি শনাক্ত হলে স্থায়ী সমাধান সম্ভব হতে পারে৷ বাসার পরিবেশে কিছু রদবদল করেও উপকার পাওয়া যায়৷

https://p.dw.com/p/3wOzn
Allergie in der Wohnung
ছবি: picture alliance/dpa/C. Klose

স্ট্রোমব্যার্গ শহরের স্যুস্কে ব্লাই ধুলার অ্যালার্জিতে ভুগছে৷ বছরখানেক আগে পাঁচ বছর বয়সি মেয়েটির এই রোগ ধরা পড়েছিল৷ তখন থেকেই সে আর তার তিন যমজ বোনের জীবন বদলে গেছে৷

অনুবীক্ষণ যন্ত্রে দেখা যায়, এমন এক ধরনের মাকড়সা সেই অ্যালার্জির উৎস৷ আমাদের বাসায় ধুলার মধ্যে লাখ লাখ এমন প্রাণী লুকিয়ে থাকে৷ বাসার ধুলার মধ্যে মাইট পোকার মলের কারণেও অনেক মানুষের অ্যালার্জি হয়৷ অদৃশ্য এই প্রাণী বিশেষ করে আমাদের বিছানায় বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে৷

অ্যালার্জি ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ড. স্টেফান শাইশার এর কারণ ব্যাখ্যা করলেন৷ তিনি বলেন, ‘‘হাউস ডাস্ট অ্যালার্জির জন্য বিছানা এত আকর্ষণীয়, কারণ আমরা সেখানে শুতে যাই বলে প্রথমত খোরাক হিসেবে ত্বকের ঝরে পড়া অংশ পাওয়া যায় এবং সেখানকার পরিবেশও মাইটের জন্য বড় মনোরম৷ বিছানা উষ্ণ থাকে, আমাদের ঘামের কারণে কিছুটা আর্দ্রতাও থাকে৷ ফলে মাইট খুবই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে৷’’

অন্যান্য অ্যালার্জির তুলনায় এ ক্ষেত্রে সারা বছরই উপসর্গ থেকে যায়৷ স্যুস্কের ক্ষেত্রেও সেটা ঘটেছিল৷ নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে স্যুস্কের মা সোনিয়া ব্লাই বলেন, ‘‘হাউস ডাস্ট অ্যালার্জির কারণে শুরুতে স্যুস্কের চোখ থেকে পানি বের হতো, তারপর চোখ শুকিয়ে যেতো৷ সর্দিকাশিও লেগে থাকতো৷ আমরা ভাবতাম ঠাণ্ডা লেগেছে৷ তারপর ইএনটি স্পেশালিস্টের কাছে গিয়ে রক্ত পরীক্ষা করিয়ে জানা গেল যে, সত্যি হাউস ডাস্ট অ্যালার্জি হয়েছে৷ আমার স্বামীরও অ্যালার্জি আছে৷’’

রক্তের সঙ্গে সঙ্গে সহজ অ্যালার্জি পরীক্ষা করালেও বিষয়টা স্পষ্ট হয়৷ রোগীর হাতের উপর  অ্যালার্জেনের বিন্দু ফেলে তার নীচের ত্বকে হালকা খোঁচা মারা হয়৷ জায়গাটা লাল হয়ে গেলে বোঝা যায় যে, অ্যালার্জি আছে৷ তখন যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা করা জরুরি৷ ড. শাইশার বলেন, ‘‘মাইটের কারণে হাউস ডাস্ট অ্যালার্জির সবচেয়ে খারাপ পরিণতি হলো অ্যাস্থমা বা হাঁপানি রোগ, কারণ ধীরে ধীরে অবস্থার অবনতি ঘটতে পারে৷ অর্থাৎ বন্ধ নাক ও হাঁচির কারণে কোনো এক সময়ে শ্বাসনালীর উপরও কুপ্রভাব পড়ে৷ নাকের মিউকাস মেমব্রেনের প্রদাহ ফুসফুসে চলে যায়৷’’

মেয়ের উপর মারাত্মক প্রভাব এড়াতে স্যুস্কের বাবা-মা বাসায় কিছু পরিবর্তন করেন৷ স্যুস্কের মা সোনিয়া ব্লাই বলেন, ‘‘ইএনটি বিশেষজ্ঞ শোবার ঘর সংস্কারের পরামর্শ দিয়েছিলেন৷ অর্থাৎ, তিনটি বিছানার তোষক, মাথার বালিশ, বিছানার চাদরে ‘এনকেসিং’ বা মোড়ক দিয়ে গোটা পরিবেশ মাইটের জন্য অনাকর্ষণীয় করে দিতে বলেছিলেন৷’’

এনকেসিং এমন এক মোড়ক, যার সাহায্যে মাইট অ্যালার্জি-সৃষ্টিকারী সূক্ষ্ম ধুলা আর বাইরে বের করতে পারে না৷ প্রত্যেক দুই-এক সপ্তাহ পর পর বিছানার চাদর বদলে ফেলতে হয় এবং কমপক্ষে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কাচতে হয়৷

ব্লাই পরিবারের বাসার পরিবেশ মাইটের জন্য বৈরি হয়ে ওঠার পর স্যুস্কের অ্যালার্জির উপসর্গের অনেক উন্নতি হয়েছে৷ তার পরেও সমস্যা হলে নোজ স্পে, চোখের ড্রপ ও অ্যান্টি অ্যালার্জি ওষুধ কাজে লাগে৷ এই সব ওষুধ সমস্যা কিছুটা কমাতে পারলেও অ্যালার্জি দূর করতে পারে না৷ ড. স্টেফান শাইশার মনে করেন, ‘‘তথাকথিত ডিসেন্সিটাইজেশনই হলো একমাত্র কার্যকর থেরাপি৷ আজকের ভাষায় আমরা সেটিকে সুনির্দিষ্ট ইমিউন থেরাপি বলবো৷ এর আওতায় শরীরে অ্যাালর্জেন ঢুকিয়ে অভ্যস্ত করে তোলা হয়, যাতে আর কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা না যায়৷ সেটাই হলো লক্ষ্য৷’’

যদি কেউ মাইটের কারণে হাউস ডাস্ট অ্যালার্জির শিকার হয়, তাকে বাসার পরিবেশ মাইটের জন্য বৈরি করে তুলতে হবে৷ সেই অ্যালার্জি যত দ্রুত শনাক্ত হবে, চিকিৎসায় তত ভালো কাজ হবে৷

ইয়ুলিয়া ইয়াকোবুস/এসবি