1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
স্বাস্থ্য

ধুঁকছে জার্মানির ওল্ড কেয়ার

১৭ জুলাই ২০১৮

জার্মানিতে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে৷ কিন্তু সেই হারে বাড়ছে না তাদের যত্ন নেয়ার সুযোগ-সুবিধা৷ চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল অবশ্য এই অবস্থার উন্নতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/31bWO
Paderborn Merkel besucht Altenheim
ছবি: Getty Images

পাডারবর্নে এক নার্সিং হোম পরিদর্শন করেছেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ তাঁর সঙ্গে যাঁরা দেখা করতে এসেছিলেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন ৯৩ বছরের ফ্রাউ শুল্টারও৷ শারীরিক সমস্যার কারণে নিজে থেকে নড়াচড়ার ক্ষমতা হারিয়েছেন তিনি৷

তিনি জানালেন, ‘‘আমি বরং এর চেয়ে বাসায় থাকলেই ভালো করতাম৷ এখানকার খাবার জঘন্য৷'' অবশ্য নার্সিং হোমের কর্মীদের নিয়ে তাঁর কোনো অসন্তোষ নেই৷ বরং শত কষ্টের মধ্যেও তাঁদের মুখের হাসির প্রশংসাই করলেন ফ্রাউ শুল্টার৷

দেশজুড়ে কর্মী সংকট

জার্মানিতে প্রায় ৩০ লক্ষ বয়স্ক লোক রাষ্ট্রের সেবা নিচ্ছেন৷ ২০৬০ সালের মধ্যে তা পৌঁছাবে ৪৫ লক্ষে৷

বয়স্কদের সংখ্যা বাড়তে থাকা এবং তাঁদের সেবাদাতার পরিমাণ কমতে থাকায় দ্রুতই এক দুর্যোগের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে জার্মানি৷ বিভিন্ন সেবাক্ষেত্রে এখন ৩৬ হাজার পদ খালি আছে, এর মধ্যে শুধু বয়স্কদের সেবাদানেই খালি ১৫ হাজার কর্মীর পদ৷

Deutschland Bundeskanzlerin besucht Altenheim in Paderborn
ছবি: DW/K. Brady

সেবাদান কর্মী ফের্ডি সেবি অবশ্য এই অবস্থার পরিবর্তনে আশাবাদী৷ তিনি তাকিয়ে আছেন বার্লিনের দিকেই৷ গত বছরের সেপ্টেম্বরে ম্যার্কেলের নির্বাচনী প্রচারণার এক বৈঠকে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমার জন্য এটা খুবই দুঃখের যে, কোনো রাজনীতিবিদই এই সমস্যার সমাধানে আগ্রহী না৷'' তিনি সেই সময় ম্যার্কেলকে একটি ওল্ড কেয়ার হোম পরিদর্শনের আহ্বানও জানান৷

ম্যার্কেল সে-কথা ভুলেননি৷ দশ মাস পর ঠিকই হাজির হয়েছেন সেবির বৃদ্ধাশ্রমে৷ সেবির সাথেই ঘুরে দেখেছেন কী পরিস্থিতিতে তাঁদের কাজ চালিয়ে যেতে হয়৷

নতুন সেবাকর্মী

তরুণ কর্মীদের এই খাতে আকৃষ্ট করাটা দিনদিন খুবই কঠিন হয়ে পড়ছে৷ ফলে হাজার হাজারবৃদ্ধাশ্রম ভুগছে কর্মীস্বল্পতায়৷ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদে জানা গেছে, এক তৃতীয়াংশ বৃদ্ধাশ্রম এখন পদ খালি হলেও আর বিজ্ঞপ্তি দেয় না৷ কারণ, সেসব পদের জন্য কেউ আবেদনই করেন না৷

গত বছর একটি পদে চাকরি দিতে গড়ে ১৭১ দিন সময় লেগেছে৷ জার্মানিতে শুধু ট্রেন চালক নিয়োগেই এর চেয়ে বেশি সময় লাগে৷

দেশজুড়ে এই অবস্থার অবশ্য কিছুটা তারতম্য আছে৷ গড়ে প্রতি ১০০ পদের জন্য মাত্র ২১ জন আবেদন করেন৷ স্যাক্সনি রাজ্যে অবশ্য এ সংখ্যা আরো কম, মাত্র ১৫ জন৷

বেতনের সাথে শ্রমের সামঞ্জস্য না থাকায় তরুণরা এই খাতে আকৃষ্ট হচ্ছেন কম৷ জার্মান ফেডারেল স্ট্যাটিসটিক্স অফিস ডেস্টাটিস বলছে, তিন বছরের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন কর্মী প্রতি ঘণ্টায় ১৮ ইউরো আয় করেন৷ অন্যখাতের কর্মীরা সেখানে আয় করেন ঘণ্টায় ২২ ইউরোর মতো৷

ম্যার্কেলও বুঝতে পেরেছেন এই সমস্যা৷ তিনি নিজেও এই বেতনবৈষম্যে আপত্তি জানিয়েছেন৷ বৃদ্ধাশ্রম পরিসর্শন শেষে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘যাঁরা সারাদিনই মানুষের সাথে কাজ করছেন, ব্যাংক বা মেশিনচালকদের চেয়ে বেশি বেতন না হোক, তাঁদের অন্তত সমান বেতন কেন পাবেন না?''

এই উদ্বেগ দূর করতে জার্মানির স্বাস্থ্য ও পরিবার এবং শ্রম মন্ত্রণালয় যৌথ উদ্যোগ নিয়েছে৷ প্রথম ধাক্কাতেই ১৩ হাজার খালি পদ পূর্ণ করার পরিকল্পনা তাঁদের৷ বৃদ্ধাশ্রমের কর্মীরা যাতে অন্তত ৩০০০ ইউরো মাসিক বেতন পান, সে উদ্দেশ্যেও কাজ করে যাচ্ছে সরকার৷ কিন্তু এই বিশাল পরিমাণ অর্থের জোগান আসবে কোত্থেকে, তা নিয়ে আছে প্রশ্ন৷

সেবিকা অবশ্য বেশ খুশি৷ ১০ মাস পরে হলেও ম্যার্কেল ঠিকই তাঁর কথা মনে রেখে বৃদ্ধাশ্রম পরিদর্শনে এসেছেন৷ তিনি মনে করেন, ম্যার্কেলের আন্তরিকতা এই ডুবন্ত খাতকে উদ্ধারে যথেষ্ট৷

কেট ব্র্যাডি/এডিকে

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য