1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ধমনীতে রক্তপিণ্ড দূর করছে বিশেষ প্রস্থেসিস

৫ মার্চ ২০১৮

চিকিৎসাবিদ্যার উন্নতির ফলে অনেক কঠিন রোগ-ব্যাধির নিরাময় সম্ভব হচ্ছে৷ তবে ধমনীর মধ্যে রক্তপিণ্ড দ্রুত মৃত্যুর কারণ হতে পারে৷ ডাক্তাররা এক প্রস্থেসিস বসিয়ে সেই বিপদ দূর করতে সক্ষম হয়েছেন৷

https://p.dw.com/p/2thFO
ছবি: picture-alliance/Bildagentur-online/Falkenstein

মানফ্রেড ইয়েগার-এর পেটে এক টাইম বোমা ছিল৷ কাকতালীয়ভাবে সেটা ধরা পড়ে৷ হাসপাতালে বিশেষজ্ঞরা কয়েকদিন আগেই তাঁর পেটে একটি বস্তু নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছেন৷ ডাক্তারি পরিভাষায় সেটির নাম অ্যাবডোমিনাল অ্যাওর্টিক অ্যানিউরিসম৷ সেটি আসলে এক রক্তপিণ্ড, যা ধমনীর মধ্যে সৃষ্টি হয়েছিল এবং তাঁর জীবন বিপন্ন করে তুলেছিল৷ জার্মানির বন শহরে পেট্রুস হসপিটালের চিকিৎসক ড. ইয়ুর্গেন রেমিগ বলেন, ‘‘আমরা জানি, বেশ কয়েক বছর ধরে সমস্যা দানা বাঁধছিল৷ অ্যাবডোমিনাল অ্যাওর্টিক অ্যানিউরিসম বন্ধ করে আমরা তাঁর আয়ু বাড়িয়ে দিয়েছি৷ তাঁকে কার্যত প্রাণে বাঁচিয়েছি৷''

অ্যানিউরিসম-এর আকার-আকৃতি এরকম দেখতে৷ ধমনীর মধ্যে রক্ত ফুলেফেঁপে ওঠে এবং বেলুনের মতো যে কোনো সময়ে ফেটে যেতে পারে৷ যেমন মানফ্রেড ইয়েগার-এর ক্ষেত্রে ধমনীর ব্যস দুই থেকে বেড়ে পাঁচ সেন্টিমিটার হয়ে উঠেছিল৷ মানফ্রেড ইয়েগার বলেন, ‘‘সত্যি, দেখলে মনে বিস্ময় জাগে৷ টেরও পাওয়া যায় না৷ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ সমস্যা শনাক্ত না করলে আজ আর আমি বেঁচে থাকতাম না৷ নিঃশ্বাস নিতে বা হাঁটাচলা করতে আমার কোনো কষ্ট ছিল না৷''

চিকিৎসক হিসেবে ড. রেমিগ বলেন, ‘‘ধমনী ফেটে গেলে এই রোগীরা রক্তক্ষরণের ফলে কয়েক মিনিটের মধ্যে মারা যায়৷ আমরা জানি, বাসায় এমনটা ঘটলে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ মানুষ হাসপাতাল পৌঁছনো পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারেন না৷''

এক বিশেষ প্রস্থেসিস লাগিয়ে ডাক্তাররা সম্ভবত মানফ্রেড ইয়েগার-এর জীবন বাঁচাতে পেরেছেন৷ পেটের ধমনীর মধ্য দিয়ে সেটি ঠেলে প্রবেশ করিয়ে তাঁরা রক্ত চলাচলের গতিপথ বদলে দিতে পেরেছেন৷

রোগীর জন্য এই অপারেশন অপেক্ষাকৃত আরামদায়ক হলেও ডাক্তারদের জন্য সেটি বড় এক চ্যালেঞ্জ৷ ড. রেমিগ বলেন, ‘‘সেই প্রস্থেসিস এমনভাবে স্থাপন করতে হয়, যাতে উপরে ও নীচে এক সুস্থ ধমনীর আবরণ থাকে৷ সেখানেই প্রস্থেসিস বসাতে হয়৷ তখন রক্তকে বাধ্য হয়ে প্রস্থেসিস-এর মধ্য দিয়ে চলাচল করতে হয় – অ্যানিউরিসম থলেতে আর জমা হতে পারে না৷ ফলে তখন তার উপর চাপ দূর হয়৷''

রক্ত যে দুটি সরু চ্যানেলের মাধ্যমে ঠিকমতো চলাচল করছে, আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষার মাধ্যমে তা শনাক্ত করা সম্ভব৷ মানফ্রেড ভেবার বিপদমুক্ত হয়েছেন৷ তবে ভবিষ্যতে তাঁকে নিয়মিত পরীক্ষা করাতে হবে, কারণ তাঁর শরীরে ভাসকিউলার ওয়াল বা ধমনীর আবরণ সার্বিকভাবে দুর্বল৷ ফলে শরীরের অন্য কোনো অংশে আবার রক্তপিণ্ড সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে৷

ডাক্তাররা তাঁর শরীরে অ্যানিউরিসম শনাক্ত করে দূর করায় মানফ্রেড ভেবার অত্যন্ত খুশি৷ মানফ্রেড বলেন, ‘‘সবকিছু ভালভাবেই হয়েছে৷ ফলে আমি বেশ নিশ্চিন্ত বোধ করছি৷ জীবনমরণের সমস্যা ছিল৷''

পেটের ধমনীর রুটিন পরীক্ষা করা হয় না৷ মানফ্রেড ইয়েগারকে অবশ্য ভবিষ্যতে নিয়মিতভাবে এই পরীক্ষা করাতে হবে৷

ডরোটে সিমন/এসবি