1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দেশের স্বার্থে ‘পরীক্ষায়’ প্রস্তুত টলিউড

পায়েল সামন্ত কলকাতা
২৩ জুলাই ২০২০

করোনা প্রতিষেধক নিয়ে গবেষণা চলছে দেশে দেশে৷ এই প্রতিষেধকের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য মানবদেহে প্রয়োগ করা প্রয়োজন৷ টলিউডের অভিনেতারা প্রস্তুত এই পরীক্ষায় যোগ দিতে৷

https://p.dw.com/p/3foLc
UK Uni Oxford meldet Durchbruch bei Corona-Impfstoff
প্রতীকী ছবিছবি: picture-alliance/AP Photo/J. Cairns

করোনায় মৃত্যু ক্রমশ বাড়ছে ভারতে৷ রোজই বাড়ছে সংক্রামিত মানুষের সংখ্যা৷ এর মধ্যে নিয়মিত খবর আসছে প্রতিষেধক নিয়ে গবেষণার৷ প্রাথমিকভাবে প্রতিষেধক তৈরির পর তার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য মানবদেহে প্রয়োগ করা জরুরি৷ আবিষ্কৃত প্রতিষেধক কারো দেহে প্রয়োগের পর কী প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে, তার ভিত্তিতে চূড়ান্ত রূপ নেয় গবেষণা৷ এই পরীক্ষার পর প্রতিষেধক বাজারে ছাড়া হয়৷ সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে আওয়াজ উঠেছে, তারা প্রতিষেধক প্রয়োগের পরীক্ষায় সামিল হতে ইচ্ছুক৷ এর মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের চলচ্চিত্র মহলও৷

ডয়চে ভেলে কথা বলেছে টলিপাড়ার অভিনেতা, অভিনেত্রী, পরিচালকদের সঙ্গে৷ অভিনয়শিল্পীদের বক্তব্য, দেশের জন্য প্রয়োজন হলে তারা নিজেদের শরীরে করোনার প্রতিষেধকের প্রয়োগ করতে প্রস্তুত৷ অভিনেতা ও সাংসদ দেব থেকে বিদীপ্তা চক্রবর্তী, বাদশা মৈত্র, মনামী ঘোষ থেকে পরিচালক রাজ চক্রবর্তী, প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য, শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়রা এ ব্যাপারে একমত৷

অভিনেত্রী বিদীপ্তা চক্রবর্তী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা বিখ্যাত বা অখ্যাত মানুষের ব্যাপার নয়৷ এটা সকলেরই প্রয়োজন৷ যদি সব শর্ত আমি পূরণ করতে পারি, তাহলে কোনো আপত্তি নেই ট্রায়ালে অংশ নিতে৷''

সম্প্রতি টলিউডে হানা দিয়েছে কোভিড-১৯৷ ছোটপর্দার পরিচিত মুখ, অভিনেতা সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়  শুটিংয়ে অংশ নেওয়ার পর ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন৷ করোনায় আক্রান্ত তাঁর  স্ত্রী ও কন্যাও৷ তবে তাতে ভীত নয় টলিউড৷ বিদীপ্তা বলেন, ‘‘ভয় করে লাভ নেই৷ ঝুঁকি নিয়ে যখন শুটিং করছি, তখন ভ্যাকসিন পরীক্ষাতেও অংশ নিতে পারবো৷ করোনাকে নিয়েই চলতে হবে, কাজ করতে হবে৷''

সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়

ইতিমধ্যে বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন অভিনেতা বাদশা মৈত্র৷ তাঁর ভাষায়, ‘‘আমি বাইরে বেরোচ্ছি নিয়মিত৷ সকলের যতটা প্রয়োজনে লাগতে পারি, তার চেষ্টা করছি৷ শর্ত পূরণ করতে পারলে আমিও ট্রায়ালে রাজি৷ তবে যে কাজ আমি নিয়মিত করছি, সেটা যেন ব্যাহত না হয়৷'' যদিও প্রতিষেধক পরীক্ষার পদ্ধতি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে৷ বাদশা বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টা এখনো স্পষ্ট নয়৷ আমি কতটা কাজে লাগবো, সেটাও জানি না৷ যদি তা দেশের কাজে লাগে, তাহলে আমি প্রস্তুত৷’’

অক্সফোর্ডে প্রতিষেধক নিয়ে গবেষণা অনেকটা এগিয়েছে৷ যদি দেশের সরকারের অনুমতি থাকে, তাহলে যে কোনো গবেষণার পরীক্ষায় অংশ নিতে চান অভিনেতা বিশ্বনাথ বসু৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সরকার যদি পরীক্ষায় স্বীকৃতি দেয়, তাহলে অবশ্যই রাজি৷ একইসঙ্গে জনসচেতনতা বাড়ানো খুব দরকার৷ শুধু মাস্ক পরা বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখলে চলবে না৷ করোনা হলে কাউকে আমরা ব্রাত্য করে দিচ্ছি, এই মানসিকতায় বদল দরকার৷'' জাতীয় পুরস্কারজয়ী চলচ্চিত্র পরিচালক প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য আশাবাদী, তৃতীয় বিশ্বের মানুষকে প্রতিষেধক পরীক্ষার নামে গিনিপিগ করা হবে না৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘যে দেশেই ভ্যাকসিন তৈরি হোক না কেন, ভারতে তার পরীক্ষা করতে গেলে সরকারের অনুমতি লাগবে৷ তাছাড়া এই ভ্যাকসিন বিভিন্ন এলাকার জলবায়ুতে আলাদা আলাদাভাবে কাজ করে৷ তাই ইংল্যান্ডের যে প্রতিষেধক তৈরি হচ্ছে, তা ভারতে পরীক্ষা করলে সুফল ওই দেশ পাবে না৷ তাই গিনিপিগ হওয়ার ভয় নেই৷’’

ভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরির ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের চলচ্চিত্র মহলের অংশগ্রহণের ইচ্ছাকে কিছুটা চমক বলেই মনে করছেন লেখক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, ‘‘দেশের কাজে এভাবে এগিয়ে আসার কথা যদি বলরাজ সাহানি, সলিল চৌধুরী বা যৌবনের রাজকাপুর বলতেন, তাহলে বিশ্বাস করতাম৷ এটা আইপিটিএ-র সময়ও নয়৷ এখনকার তথাকথিত সেলিব্রিটিরা নিজেদের অনুষ্ঠান পাওয়ার জন্য রাজনীতির ছাতা খোঁজেন৷ ফলে তাঁদের পক্ষে দেশের কাজ করা সম্ভব নয়৷’’