1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘দেশেই হচ্ছে আইএস জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ'

সমীর কুমার দে, ঢাকা২২ জুন ২০১৫

বাংলাদেশের গোয়েন্দারা ‘ইসলামিক স্টেট' (আইএস) জঙ্গিদের প্রশিক্ষণের একটি ভিডিও ফুটেজ হাতে পেয়েছেন৷ সেই প্রশিক্ষণ নাকি দেশেই হয়েছে এবং আইএস জঙ্গিদের ঐ প্রশিক্ষণ দিয়েছে বিদেশি প্রশিক্ষকরা৷ এ খবরে তোলপাড় সারা দেশ৷

https://p.dw.com/p/1Fl2O
Propagandabild IS-Kämpfer ARCHIV
ছবি: picture-alliance/abaca/Yaghobzadeh Rafael

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ১০ জন আইএস সদস্য অস্ত্র চালনা থেকে শুরু করে নানা শারীরিক কসরতের প্রশিক্ষণ নিচ্ছে৷ গোয়েন্দা পুলিশের দাবি, ঐ প্রশিক্ষণটি বাংলাদেশের কোনো গহিন এলাকায় হয়েছে, যেখান থেকে ভিডিও ধারণ করা হয়৷ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটির খোঁজে এখন অভিযান চলছে৷ এছাড়া জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস-এর প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের খোঁজ করা হচ্ছে পার্বত্য এলাকাতেও৷

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. শাহাজাহান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘সর্বশেষ আমরা বারিধারা ডিওএইচএস-এর নিজ বাসা থেকে আবদুল্লাহ আল গালিব নামে আইএস-এর এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছি৷ গালিব অবসরপ্রাপ্ত একজন সেনা কর্মকর্তার ছেলে৷ তার কম্পিউটার থেকে একটি ভিডিও উদ্ধার করা হয়েছে৷ সেখানে দেখা যাচ্ছে যে, ১০ জন আইএস সদস্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছে৷ জিজ্ঞাসাবাদে গালিব ঐ ভিডিওটি কোথায় ধারণ করা হয়েছে, সে ব্যাপারে কিছু বলেনি৷ তবে আমরা ধারণা করছি এটা দেশের মধ্যেই ধারণ করা হয়েছে৷''

গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, এর আগে গত ২৫শে মে ইসলামিক স্টেট-এর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আমিনুল ইসলাম (৩৮) ও সাকিব বিন কামাল (৩০) নামে দু'জনকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ রাজধানীর উত্তরা ও লালমাটিয়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল৷ এদের মধ্যে শাকিব বিন কামাল সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একজন নারী উপদেষ্টার ছেলে৷ এরা দু'জনও বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বলে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে৷

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার শেখ নাজমুল আলম ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি৷ দেশের বিভিন্নস্থানে আমাদের অভিযান চলছে৷ আশা করছি আরো বেশ কিছু জঙ্গি এ অভিযানে গ্রেপ্তার হবে৷''

তিনি জানান, গ্রেপ্তারকৃত আবদুল্লাহ আল গালিব নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সহ-সমন্বয়ক ছিল৷ তার আগে হিজবুত তাহরীরের সদস্য এবং বর্তমানে আইএস-এর বাংলাদেশ প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছিল গালিব৷ বারিধারায় নিজ বাসায় ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংগঠনের প্রচার, অর্থ ও কর্মী সংগ্রহ এবং তাদের আশ্রয় ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতো সে৷

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (গোয়েন্দা) মনিরুল ইসলাম ডয়চে ভলেকে বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আইএস সদস্যরা ইরাক ও সিরিয়ার মতো গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থাকে উৎখাতের মাধ্যমে আইএস নির্দেশিত খিলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য ইন্টারনেটে কর্মী সংগ্রহ করছিল৷

জিজ্ঞাসাবাদে আমিনুল ইসলাম জানায়, ইন্টারনেটের মাধ্যমে কর্মী সংগ্রহের কাজ করতো সে৷ সিরিয়ায় কথিত জিহাদে অংশ নেবে – এমন ২০ জন যুবক সংগ্রহ করেছিল আমিনুল৷ এছাড়া সে অর্থ, অস্ত্র ও বিস্ফোরক সংগ্রহ করে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করছিল৷ এ রকম কোনো হামলার আগেই অবশ্য তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে৷

গোয়েন্দা পুলিশের অপর একজন কর্মকর্তা জানান, গ্রেপ্তারকৃত গালিব দেশের আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থায় অবনতি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হত্যা করে খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করে আসছিল৷ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের অনেক সদস্য তৎপর রয়েছে বলে আটক হওয়ার পর জানিয়েছে গালিব৷ এই জঙ্গি সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হত্যা করে খেলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা৷ তাদের সংগঠনের নাম ‘জুনুদ আল তাওহীদ ওয়াল খিলাফাহ'৷ নতুন এ সংগঠনটি আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস-এর আদলে গঠিত বলে দাবি তার৷

উপ-কমিশনার শেখ নাজমুল আলম বলেন, আইএস-এ যোগ দিতে বাংলাদেশ থেকে এ পর্যন্ত ১১ জন মধ্যপ্রাচ্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল৷ এদের মধ্যে পাকিস্তানে বন্দুকযুদ্ধে দু'জন নিহত হয়৷ এরা হলো – সাখাওয়াতুল কবিরের ভায়রা শামীম আহম্মেদ ও বাতেনের ভগ্নিপতি মুহম্মদ সায়েম৷ গত ২৯শে জানুয়ারি ডিবি খিলক্ষেত ও যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে সাখাওয়াতুল কবির (৩৫), আনোয়ার হোসেন ওরফে বাতেন (৩৩), রবিউল ইসলাম (৩৫) ও নজরুল ইসলামকে (৩৩) গ্রেপ্তার করে৷ এদের মধ্যে কবির বাংলাদেশে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট-এর প্রধান সমন্বয়ক, বাকি তিনজন তার সহকারী৷ এই কবিরের সঙ্গে আমিনুল ও সাকিব-বিন-কামালের যোগাযোগ ছিল৷ প্রসঙ্গত, যারা আইএস-এ যুক্ত হচ্ছে তারা প্রত্যেকেই স্বচ্ছল পরিবার থেকে এসেছে, জানান উপ-কমিশনার৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান