দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া বিখ্যাত ১১ জার্মান
নাৎসি বাহিনীর হাত থেকে প্রাণ বাঁচাতে জার্মানি ছেড়েছিলেন তারা৷ অনেকে আর ফেরেননি৷ ছবিঘরে জেনে নিন এমন ১১ জন নির্বাসিত জার্মানের কথা...
টমাস মান
সাহিত্যে নোবেলজয়ী এই লেখক ১৯৩০ সালেই নাৎসিবাদের উত্থানকে ‘উদ্ভট বর্বরতা’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন৷ ১৯৩৩ সালের বসন্তে সুইজারল্যান্ডে সপরিবারে ছুটি কাটাতে গিয় আর দেশে না ফেরার সিদ্ধান্ত নেন৷ সুইজারল্য্যান্ড থেকে প্রথমে ফ্রান্সে এবং তারপর ১৯৩৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান৷ লস এঞ্জেলেসে যে বাড়িতে ছিলেন সেটি এখন জার্মান সাংস্কৃতিক কেন্দ্র৷
হানা আরেন্ডট
১৯৩৩ সালে তার সাবেক প্রেমিক, চিন্তাবিদ মার্টিন হাইডেগার যখন নাৎসি বাহিনীতে যোগ দেন, তখন স্বামীকে নিয়ে প্যারিসে চলে যান দার্শনিক হানা আরেন্ডট৷ ফ্রান্সের রাজধানীতে গিয়ে ইহুদিদের ফিলিস্তিনে যেতে সহায়তা করেন৷ ১৯৪০ সালে মা এবং স্বামীকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে চলে যান৷
ক্লাউস মান
বাবা টমাস মানের মতো নোবেল না জিতলেও তার লেখাও খুব আলোচিত ছিল৷ নাৎসি সরকার নিষিদ্ধ করেছিল তার লেখা৷ জার্মানি ছেড় চলে গিয়েছিলেন আমস্টারডামে৷ সেখানে নাৎসিবিরোধী ম্যাগাজিন ‘ডি জামলুং’ প্রকাশ করেন৷ পরে সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান৷ নিজের দেশে আর ফেরেননি৷ ১৯৪৯ সালে ফ্রান্সে মারা যান তিনি৷
লটে লাসারস্টাইন
পূর্ব পুরুষরা ইহুদি ছিলেন বলে শিল্পী লটে লাসারস্টাইন জার্মানিতে থাকতে পারেননি৷১৯৩৭ সালে সুইডেনে চলে যেতে হয়৷ ১৯৯৩ সালে সুইডেনেই মারা যান তিনি৷
বার্টল্ট ব্রেশট
নাট্যকার, কবি ব্রেশট সপরিবারে প্রথমে প্যারিসে চলে যান ১৯৩৩ সালে, সেখান থেকে যান ডেনমার্কে৷ দেশ ছাড়ার পরই তার সব বই পুড়িয়ে দেয় নাৎসিরা৷১৯৪১ সালে ডেনমার্ক থেকে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে৷ ১৯৪৯ সালে তখনকার কমিউনিস্ট শাসিত পূর্ব জার্মানির বার্লিনে চলে আসেন৷ সেখানেই মারা যান ১৯৫৩ সালে৷
এলসে লাস্কার-শ্যুলার
১৯৩৩ সালে সুইজাল্যান্ডে চলে যান এই ইহুদি কবি৷ সেখানেও তার লেখালেখির ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল৷ ফিলিস্তিনে গিয়েছিলেন ঘুরতে৷ সুইস সরকার আর ফেরার অনুমতি দেয়নি৷ খুব অর্থকষ্টে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জেরুসালেমে বেঁচে ছিলেন তিনি৷
ভাল্টার গ্রোপিউস
স্থপতি ও বাউহাউসের প্রতিষ্ঠাতা ভাল্টার গ্রোপিউস স্ত্রীকে নিয়ে ব্যবসায়িক কাজে লন্ডনে গিয়েছিলেন৷ জার্মানিতে নাৎসিরা তখন তার প্রতিষ্ঠা করা বাউহাউস স্কুলকে ‘মার্ক্সবাদের গির্জা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে৷ ভয়ে আর দেশে ফেরেননি৷ যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে শুরু করেন শিক্ষকতা৷ হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক যুক্তরাষ্ট্রেই মারা যান ১৯৬৯ সালে৷
ইয়োসেফ আলবার্স এবং আনি আলবার্স
শিল্পি ইয়োসেফ এবং তার কারুশিল্পি স্ত্রী আনি যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে গিয়ে ব্ল্যাক মাউন্টেন কলেজ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখেন৷ ছবিতে ইয়োসেফ আলবার্স৷
বিলি ভিল্ডার
সাংবাদিকতা দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা বিলি জার্মানিতে পরিচিত হয়ে উঠছিলেন চলচ্চিত্রের স্ক্রিপ্ট লেখক হিসেবে৷ হিটলার ক্ষমতায় আসার পরই প্যারিস হয়ে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে৷ চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন সেখানে ৷
হিল্ডে ডোমিন
কবি হিল্ডে ১৯৩১ সালে পড়াশোনা করতে গিয়েছিলেন ইটালিতে৷ সেখান থেকে প্রথমে ইংল্যান্ডে এবং তারপর ডমিনিকান রিপাবলিকানে চলে যেতে হয় তাকে৷১৯৫৪ সালে জার্মানিতে ফিরে আসেন৷ ২০০৬ সালে হাইডেলবার্গ শহরে মারা যান তিনি৷