1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

শিশুশ্রম প্রশ্নে সরকারের অস্বস্তি

গৌতম হোড় নতুন দিল্লি
৩ ডিসেম্বর ২০১৯

বলিউড, টলিউডের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সম্পর্কে বলা হয়, তাঁরা একটা স্বনির্মিত জগতের মধ্যে থাকেন৷ কিন্তু রিল লাইফ ও রিয়েল লাইফের ফারাকটা ঘুচিয়ে দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের অভিনেতা-সাংসদ দেব৷

https://p.dw.com/p/3U8DM
দেবছবি: Creative Commons

উদ্বিগ্ন হয়ে শ্রমমন্ত্রীর কাছে দেব জানতে চাইলেন, ভারতে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা কত? মন্ত্রীর জবাব থোকে বেরিয়ে এলো রুঢ় বাস্তবের ছবিটা৷ শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ৪৩ লাখেরও বেশি!

মুম্বই, কলকাতা, দেশের অন্য বড় শহর বা নিজের নির্বাচনকেন্দ্র ঘাটালে প্রায়শই দেব-এর চোখে পড়ে শিশু শ্রমিকদের দুরবস্থা৷ কেউ চায়ের দোকানে, কেউ ধাবায়, কেউ বা অন্য কোনো দোকানে, ক্ষেতে কাজ করছে৷ চোখে পড়ে তাঁদের কষ্ট, মনে হয়, এই সময়টা তো বাচ্চাদের স্কুলে থাকার কথা৷ হাসি-খেলায়, পড়াশুনোয় শৈশব কাটানোর কথা৷ সেটা না করে বাচ্চাদের কাজ করে যেতে হচ্ছে, যা আইনত নিষিদ্ধ৷ তাই এবার লোকসভায় প্রথম সুযোগেই লিখিত প্রশ্ন করলেন এই শিশু শ্রমিকদের নিয়ে৷ তাঁর উদ্বেগের দুটো জায়গা ছিল৷ একটা হলো, শিশু শ্রমিকদের সংখ্যা জানাটা জরুরি৷ তার সঙ্গে বাচ্চা মেয়েদের সংখ্যাটা কত সেটাও জানা কম জরুরি নয়, কারণ, মেয়েদের সুরক্ষা নিয়ে এখন পুরো দেশ চিন্তিত৷ দেবের প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ কুমার গঙ্গোয়ার জানিয়েছেন, ভারতে এখন পাঁচ থেকে চোদ্দ বছর বয়স পর্যন্ত শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ৪৩ লাখ ৫৩ হাজার ২৪৭ জন৷ ডয়চে ভেলেকে দেব জানিয়েছেন, শিশু শ্রমিকদের নিয়ে তাঁর চিন্তার কথা৷ এবং ভবিষ্যতে তিনি যে এ নিয়ে কাজ করতে চান সে কথাও৷

ভবিষ্যতে শিশুশ্রম নিয়ে কাজ করতে চাই: দেব

গাঙ্গোয়ারের জবাব একটা বিষয় পরিস্কার করে দিয়েছে যে, ২০১৯-এ এসেও ভারতে শিশু শ্রমিকের সংখ্যাা রীতিমতো লজ্জাজনক জায়গায় রয়েছে৷ অথচ, কেন্দ্রীয় সরকারের আইন অনুসারে শিশুশ্রমিক নিয়োগ করাটা অপরাধ৷ ২০০৯ সালে শিক্ষার অধিকার আইন অনুসারে ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সিদের শিক্ষা পাওয়ার অধিকার মৌলিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃত হয়েছে৷ তাদের অবৈতনিক শিক্ষা দেওয়াটা বাধ্যতামূলকও৷ এই মাপদণ্ডে ওই ৪৩ লাখ শিশুকে ফেলা যাচ্ছে না৷ প্রশ্ন হলো, এখনও এত বেশি শিশু শ্রমিক থাকার কারণটা কি মূলত অর্থনৈতিক? রাজ্যসভার নির্দল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় তাই মনে করেন৷ ডয়চে ভেলেকে তিনি বলেন, ভারতের আর্থিক অবস্থা সম্প্রতি চাপের মধ্যে রয়েছে৷ জিডিপি-র হার নেমে এসেছে ৪ দশমিক ৫ শতাংশে৷ ফলে শিশু শ্রমিকদের সংখ্যা এখন আরো বাড়বে বলে তাঁর ধারণা৷

শ্রমমন্ত্রী এখানে চৌদ্দ বছর বয়সি শিশুশ্রমিকদের সংখ্যা দিয়েছেন৷ কিন্তু শিশু নীতি অনুসারে ১৮ বছর বযসের নীচে কর্মরত সকলেই শিশুশ্রমিক৷ সেই হিসাব ধরলে তো সংখ্য়াটা কোটির কাছে পৌঁছে যাবে বা তা ছাড়িযেও যেতে পারে৷ কারণ, যাঁরা শিশু শ্রমিকদের নিযে কাজ করেন, তাঁদের দাবি, চৌদ্দ থেকে আঠারো বছর বয়সি শিশুশ্রমিকের সংখ্যা সবথেকে বেশি৷ বেসরকারি সংস্থা ক্রাই-এর প্রাক্তন প্রধান সত্যগোপাল দে ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘সরকার যে স্বীকার করেছে, এখনও দেশে শিশুশ্রমিকের সংখ্য়া তেতাল্লিশ লাখের বেশি, সেটাই যথেষ্ট লজ্জার৷ সরকার এত কড়া আইন করছে, তারপরেও তো কিছু হচ্ছে না৷’’

সন্তোষ গাঙ্গোয়ারও জবাব দিতে গিয়ে একই দাবি করেছেন৷ তিনি বলেছেন, শিশুশ্রমিক রোধ আইন ১৯৮৬ সংশোধন করে আরো অনেক বেশি কড়া করেছে সরকার৷ ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের কাজ করানো আইনত নিষিদ্ধ৷ ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সিদের কোনো বিপজ্জনক কাজে নিয়োগ করা যায় না৷ কেউ করলে, তাঁকে শাস্তি পেতেই হবে৷ তবে কতজন এরকম শাস্তি পেয়েছে তার কোনো পরিসংখ্যান তিনি দেননি৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য