1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দেখতে উদ্ভট হলেও শিল্প বটে!

১ নভেম্বর ২০১৮

বয়স ৮০ হলেও মনটা শিশুর মতো৷ সুইজারল্যান্ডের এক শিল্পী তাঁর শিশুসুলভ মনন নিয়ে দৈনন্দিন জীবনের নানা উপকরণ দিয়ে অদ্ভুত শিল্পসৃষ্টি করে চলেছেন৷ সেই শিল্পের মর্ম বুঝতেও সাহায্য করছেন তিনি৷

https://p.dw.com/p/37VEO
ছবি: NDR

সুইজারল্যান্ডের রোমান সিগনার শিল্পের ক্ষেত্রে কিছুটা নিঃসঙ্গ ও অদ্ভুত বলেই পরিচিত৷ তাঁর সৃষ্টিকর্ম দেখে অনেকে প্রশ্ন তোলেন, এর অর্থ কী? রকেট জুতো, রকেট টুপি কি শিল্প হতে পারে? এক স্বয়ংক্রিয় ঘাস কাটার যন্ত্র ও একটি ঘণ্টার মধ্যে কখনো কি সাক্ষাৎ ঘটবে?

তাঁর সৃষ্টিকর্মে ভাঙচুর ও তার শব্দের ছাপ পাওয়া যায়৷ নীল পিপা নিয়ে ধাক্কাধাক্কি চলে৷ বেশ ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড বটে! রোমান সিগনার নিজে বলেন, ‘‘ধ্বংসাত্মক আসলে কী? হয়তো ছাদ থেকে ঝরে পড়া বরফ৷ উপরের সেই পিপা পানিতে ভরা৷ প্রত্যেকটিতে ২০০ লিটার পানি রয়েছে৷ দড়ি দিয়ে বাঁধা রয়েছে৷ এক বিশেষজ্ঞ বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সেই দড়ি কেটে দিয়েছেন, এবার সে সব নীচের দিকে ধেয়ে আসছে৷ চাষি যে অনুমতি দিয়েছেন, তা অসাধারণ, তাই না?’’

Euromaxx Künstler Roman Signer
রোমান সিগনারের একটি শিল্পছবি: NDR

দৈনন্দিন জীবনের নানা বস্তু আর্ট ইনস্টলেশন হয়ে ওঠে৷ ফ্যান থেকে বাতাস বের হচ্ছে৷ এ নিয়ে খুব বেশি ভাবনাচিন্তার প্রয়োজন নেই৷ ব্যাখ্যা খোঁজার ক্ষেত্রে শিল্পী নিজেই সাহায্য করেন৷ রোমান বলেন, ‘‘ভালো আবহাওয়া, খারাপ আবহাওয়া আসলে কী? একবার আইসল্যান্ডে গিয়েছিলাম৷ সঙ্গে ছাতা ছিল৷ কিন্তু সে দেশের জন্য তা একেবারেই উপযুক্ত নয়৷ সেখানকার বাতাস ছাতাকে ঘৃণা করে৷ সব ভেঙে দেয়৷ সবাই বর্ষাতি, টুপি পরে – কখনো ছাতা খোলে না৷ কেনারই উপায় নেই৷’’

কবিতার মতোই কোমল ও হালকা তাঁর শিল্প৷ বালুর উপর ছড়ি দিয়ে আঁকিবুকি কাটা রয়েছে৷ আছে একটি বেলুন৷ রোমান সিগনার-এর এই শিল্পকর্ম চার্লি চ্যাপলিনের কথা মনে করিয়ে দেয়৷ তিনি তৈরি করেছেন পানি ছাড়াই এক কায়াক নৌকা৷ এটাই হলো সুইজারল্যান্ডের অরাজকতার নিদর্শন৷

আরেক সৃষ্টি সম্পর্কে রোমান সিগনার বলেন, ‘‘সামরিক সাজসরঞ্জামের মতোই সব হেলিকপ্টারও হুবহু একরকমভাবে প্রস্তুত করা হয়৷ সবকটি একসঙ্গে চালু হলে চরম অরাজকতার সৃষ্টি হয়৷ তারা একে অপরকে ধ্বংস করে মাটিতে পড়ে যায়৷’’

সবকিছুই দৈনন্দিন জীবনের বস্তু দিয়ে তৈরি৷ যেমন ঘাস কাটার স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র ও ঘণ্টার মধ্যে রোমিও ও জুলিয়েটের মতো রোমান্টিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে৷ অথবা অর্ধগোলাকার এক চিত্র৷ নিখুঁতভাবে অসম্পূর্ণ, সেইসঙ্গে ডিজিটাল প্রযুক্তির বিরোধী৷ সিগনার বলেন, ‘‘আজকের শিল্পীর চরিত্র ও সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আমি নিজেকে ঠিক খাপ খাওয়াতে পারি না৷ প্রকৃতির কোলে যেতে আমার সবচেয়ে ভালো লাগে৷ প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ করি৷ নদী, বাতাস দেখে মনে আইডিয়া আসে৷ সেটাই তো যথেষ্ট, তাই না?’’

রোমান সিগনার শিল্পকে উঁচু আসন থেকে টেনে নীচে নামিয়েছেন৷ তিনি পরীক্ষানিরীক্ষা করেন, খেলাও করেন, অর্থহীন কাণ্ড ঘটান৷ ৮০ বছর বয়সেও তিনি শিশু থেকে গেছেন৷ শিল্পী নিজে বলেন, ‘‘সেই অর্থে আমার কোনো বিকাশ ঘটেনি৷ শিশুরা যা মন চায় তাই করে, শিল্প নিয়ে ভাবে না৷ শিল্প মানে যা ভালোভাবে করা যায়, তাই না?’’

রাল্ফ ড্যোরভাং/এসবি