1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দুর্বল শরীরে মায়োকার্ডাইটিসের আশঙ্কা

২ নভেম্বর ২০২১

শুধু বে-লাগাম জীবনযাত্রার কারণেই হৃদযন্ত্রের ক্ষতি হয় না, সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষও অসাবধনতার কারণে এমন বিপদ ডেকে আনতে পারে৷ বিশেষ করে ভাইরাল ইনফেকশন পুরোপুরি সেরে ওঠা পর্যন্ত অপেক্ষা না করলে এমনটা ঘটতে পারে৷

https://p.dw.com/p/42Skr
Rheinland-Pfalz | Ärzteversorgung
ছবি: Frank May/dpa/picture alliance

ট্রিয়ার শহরের ফ্রাংক ক্নট দৌড়াতে খুব ভালোবাসেন৷ কিন্তু আরেকটু হলেই সেই শখ পুরোপুরি  ত্যাগ করতে হতো৷ গত বছর বাসায় তিনি আচমকা প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন৷ সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সত্যি আচমকা কার্ডিয়াক অ্যারিথমিয়াস দেখা দিলো৷ চোখে অন্ধকার দেখতে লাগলাম৷ তারপর জ্ঞান হারালাম৷ সৌভাগ্যবশত তখন আমার স্ত্রী ও মেয়ে বাসায় ছিল৷ হাসপাতালে জ্ঞান ফিরলো৷ প্রথমবার টের পেলাম কী ঘটেছে৷''

তখন ডাক্তারদের প্রাথমিক ধারণা হয়েছিল যে, তিনি মায়োকার্ডাইটিসে ভুগছেন৷ তাকে এক সপ্তাহ হাসপাতালের কার্ডিয়াক বিভাগে থাকতে হয়েছিল৷

পরীক্ষায় দেখা গেল, তার আসলে ‘সিক সাইনাস সিন্ড্রোম' হয়েছে৷ অর্থাৎ হৃদযন্ত্রের পেশিতে ইনফ্লেমেশন বা প্রদাহের সম্ভাবনা রয়েছে৷ সেই সমস্যার ফলে নানা রকমের গোলযোগ দেখা দিতে পারে৷ ট্রিয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ ডা. ফ্রাংক শ্মিট বলেন, ‘‘এর ফলে হৃদযন্ত্রের পাম্প ফাংশন সীমিত হয়ে যেতে পারে৷ ফলে হৃদযন্ত্র দুর্বল হতে পারে৷ কার্ডিয়াক অ্যারিথমিয়াসও দেখা দিতে পারে৷ কিছু রোগীর বুকে ব্যথা হয় এবং হার্ট অ্যাটাকের মতো লক্ষণও টের পাওয়া যায়৷''

বাস্তবে যে কোনো মানুষেরই মায়োকার্ডাইটিস হতে পারে৷ ফ্রাংক ক্নট আজও ঠিক জানেন না, কেন তাঁর এমন দশা হলো৷ তবে তার মনে একটি সন্দেহ রয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার মতে, আমি স্বাস্থ্যকর খাদ্য খাই৷ ধূমপান করি না, কালেভদ্রে অ্যালকোহল পান করি৷ তবে গত বছর জানুয়ারি মাসে প্রচণ্ড সর্দিকাশি হয়েছিল৷ সেটা ছিল ফ্লুর মতো সংক্রমণ৷ কয়েক সপ্তাহ ভোগার পরেও আমি পুরোপুরি সেরে উঠিনি৷ অপেক্ষা না করেই আবার খেলাধুলা শুরু করে দিয়েছিলাম, দৌড়ানোর ট্রেনিং করছিলাম৷ হয়তো দুইয়ের মধ্যে সংযোগ ছিল৷''

         মায়োকার্ডাইটিসের উৎস খোঁজা ডাক্তারদের জন্য সত্যি বেশ কঠিন৷ ডা. ফ্রাংক শ্মিট বলেন, ‘‘সাধারণ সর্দিকাশির কারণে মায়োকার্ডাইটিস দেখা দেয় না৷ কিন্তু সমস্যা হলো, সাধারণ সর্দিকাশি না ভাইরাল সংক্রমণ ঘটেছে, সেটা সহজে বোঝা কঠিন৷ ভাইরাল সংক্রমণের ক্ষেত্রে হৃদযন্ত্রের পেশিরও ক্ষতি হতে পারে৷ তাই সেরে ওঠা পর্যন্ত সাবধান থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়৷''

ডাক্তার হিসেবে তিনি মনে করেন, সম্পূর্ণ সুস্থ মানুষেরও এমন ইনফ্লেমেশন হতে পারে৷

ফ্রাংক ক্নট খেলাধুলা চালিয়ে গেছেন বটে, কিন্তু তিনি দ্বিতীয়বার জ্ঞান হারিয়েছেন৷ তারপর তার হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানো হয়েছে৷ ফলে বেশ কয়েক মাস খেলাধুলা পুরোপুরি বন্ধ রাখতে হয়েছিল৷ ফ্রাংক বলেন, ‘‘আমি মোটেই শয্যাশায়ী ছিলাম না৷ অল্পস্বল্প হাঁটাহাঁটি করার অনুমতি ছিল৷ একদিকে খুব আরাম পাচ্ছিলাম বটে, অন্যদিকে অবস্থা অবশ্যই কঠিন লাগছিল, কারণ পথে অনেক জগারদের দেখে মনে হচ্ছিল, ইচ্ছা থাকলেও আমি তো দৌড়তে পারছি না৷ সে এক অদ্ভুত অনুভূতি৷''

ধীরে ধীরে তিনি পুরানো ফর্মে ফিরে যেতে পেরেছিলেন৷ এখন ফ্রাংক বেশ সুস্থ বোধ করছেন৷ বছরে দুই বার তাকে কার্ডিয়াক পরীক্ষা করাতে হয়৷ সেখানে ডাক্তাররা নিয়মিত তাঁর পেসমেকার পরীক্ষা করেন৷

সম্ভব হলে ফ্রাংক এমন অবস্থা প্রতিরোধ করতেন৷ তবে মায়োকার্ডাইটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়৷ সতর্ক থাকলে এমন অবস্থা এড়িয়ে চলা যেতে পারে৷ ডা. শ্মিট মনে করেন, ‘‘কোনো মানুষ নতুন করে খেলাধুলা শুরু করার আগে ডাক্তারের কাছে পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত৷ বিশেষ করে অনেকদিন কিছু না করে থাকলে বা আরও শারীরিক চাপ সামলানোর তাগিদ দেখা দিলে এমন পরীক্ষা করিয়ে নিলে ভালো হয়৷''

মায়োকার্ডাইটিস গুরুতর এক রোগ, যা যে কোনো মানুষের হতে পারে৷ বেশি করে খেলাধুলা করার ইচ্ছা জাগলে আগেই শরীর পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত৷ সর্দিকাশি হলে সে সব সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা উচিত৷

ভল্ফগাং ভেবার/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য