দুর্নীতি আর যুদ্ধাপরাধ ডুবিয়েছে চারদলীয় জোটকে
৩০ ডিসেম্বর ২০০৮অন্যদিকে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া জোট সরকারের সব প্রতাপশালী মন্ত্রী-এমপিরাই হেরেছেন৷ জামায়াতের আমীর মাওলানা নিজামীসহ ৩৮ জন প্রার্থীর সবাই হেরেছেন ১ জন ছাড়া৷ এমনকি বিএনপির দূর্গ বলে পরিচিত জেলাগুলোতেও মহাজোটের প্রর্থীরাই বিজয়ী হয়েছেন৷ ২০০১ সালের নির্বাচনে চারদলীয় জোটের বিজয়ের সময়ও এমন অবস্থা দেখা যায়নি৷
কিন্তু চারদলীয় জোটের এই ভরাডুবির পেছনের কারণ কি ? শুধুই কি দূর্নীতি আর দুঃশাসন ? বাংলাদেশে তো যে সরকার ক্ষমতায় আসে, ধীরে ধীরে সেই সরকারেই বাসা বাঁধে দূর্নীতি৷ সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি৷ পর্যবেক্ষক মহল বলছেন, যুদ্ধ অপরাধীদের ইস্যুটি এবারের নির্বাচনে অনেক বড় ব্যাপার হয়ে দেখা দিয়েছে৷
প্রথমেই আসা যাক দূর্নীতি আর দুঃশাসন প্রসঙ্গে৷ চারদলীয় জোট বা বিএনপির মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা স্ব স্ব ক্ষেত্রে নেতাদের দুঃশাসন নিয়ে এরই মধ্যে মুখ খুলতে শুরু করেছেন৷ তারা বলছেন, রাজনৈতিক নেতারা দলের স্বার্থে মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের সঙ্গে যে দুর্ব্যাবহার করেছেন, অবমূল্যায়ন করেছেন, দুঃশাসন চালিয়েছেন, তাতেই সাধারণ মানুষের মনে জন্ম দিয়েছে ক্ষোভ৷ তাদের কথায় মানুষ এবার পরিবর্তন দেখতে চেয়েছে৷
দ্বিতীয় আরেকটি কারণ হচ্ছে এবারের নির্বাচনে নতুন অনেক ভোটার তালিকাভুক্ত হয়েছেন এবং তাদের অনেকেই প্রথমবারের মত তালিকাভুক্ত হয়ে ভোট দিয়েছেন৷ তারা সত্যিকার অর্থেই দেশে পরিবর্তন দেখতে চেয়েছেন৷
যদিও নির্বাচনী প্রচারণায় খালেদা জিয়ার শ্লোগান ছিল 'দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও', কিন্তু জোট সরকারের আমলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস তুলেছিল৷
সবচেয়ে বড় ইস্যুটি হচ্ছে, চারদলীয় জোটে যুদ্ধ অপরাধীদের উপস্থিতি৷ এর আগে যুদ্ধ অপরাধীদের নিয়ে বার বারই কথা উঠেছে৷ কিন্তু তা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ৩ মাসের মেয়াদকালিন সময়ের মধ্যে৷
যুদ্ধ অপরাধীদের নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এবারের মত আলোচনা, নিন্দার ঝড় ছাড়াও শক্তিশালী অবস্থান থেকে শাস্তির দাবী আর কখোনো এভাবে করা হয়নি৷ এই বিষয়গুলো মানুষের সচেতনতাকে নাড়া দিয়েছে৷ মানুষ পরিবর্তন চেয়েছে৷
যে আশায় বাংলাদেশের মানুষ মহাজোটকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেছে, এখন তা ধরে রাখা এবং ১৪ কোটি মানুষের আকাঙ্খা পূরণের দায়িত্ব মহাজোটের৷