1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দুই বছর পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবার স্বাভাবিক রুটিন

১৫ মার্চ ২০২২

‘‘এখন প্রতিদিনই ক্লাস হবে, খুব খুশি লাগছে৷ মনে হচ্ছে আবার আগের মতো সব স্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে,’’ বললো মিরপুরের এমডিসি মডেল ইনস্টিটিউটের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী রিফাত সুলতানা৷

https://p.dw.com/p/48V8E
প্রতীকী ছবিছবি: Mortuza Rashed/DW

ডয়চে ভেলের কনটেন্ট পার্টনার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানায়, মহামারির ধাক্কা সামলে ৭২৬ দিন পর মঙ্গলবার থেকে স্বাভাবিক রুটিনে ক্লাস নেওয়া শুরু করেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো৷ দীর্ঘ দুই বছর অপেক্ষার পর সশরীরে পূর্ণাঙ্গ শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হওয়ায় অভিভাবকদের মনেও ফিরেছে স্বস্তি৷ তাদের আশা, পুরোদমে ক্লাস শুরুর পর মহামারিকালের শিখন ঘাটতি কিছুটা হলেও কাটিয়ে ওঠা যাবে৷

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিদিন ক্লাস শুরু হয়েছিল ২ মার্চ থেকেই৷ তবে মাধ্যমিকে ক্লাস হচ্ছিল সীমিতভাবে; মঙ্গলবার তারাও পুরোদমে শ্রেণি কার্যক্রমে ফিরলো৷ আর প্রাক-প্রাথমিকের, অর্থাৎ নার্সারি-কেজির মত ছোট শ্রেণির ক্লাসগুলো শুরুই হল দীর্ঘ দুই বছর পর৷ করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন স্কুলে অনলাইনেই তাদের ক্লাস হলেও এসব স্কুলের অনেক শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার পর মঙ্গলবারই প্রথম ক্লাসে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে৷ এইচএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার্থীরা এতদিন চারটি বিষয়ে এবং দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা তিনটি বিষয়ে প্রতিদিন ক্লাস করে আসছিল৷ অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে সপ্তাহে দুইদিন তিন বিষয়ে এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে একদিন তিন বিষয়ের ক্লাস হচ্ছিল৷

মঙ্গলবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সকাল থেকে শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে৷ সব শ্রেণির ক্লাস এক সাথে শুরু হওয়ায় স্কুল এলাকাগুলোও ফিরে আসে চেনা চেহারায়৷ ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে৷ পরে ব্যাপক বিধিনিষেধের মধ্যে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেয় সরকার৷ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে না আসায় দেড় বছর দফায় দফায় ছুটি বাড়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়৷ করোনা  পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর সীমিত শ্রেণি কার্যক্রমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়৷

তবে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের দাপটে গত ২১ জানুয়ারি থেকে এক মাস বন্ধ থাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান৷  ২২ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললেও পুরোদমে ক্লাস শুরু করতে শিক্ষার্থীদের আরো অপেক্ষা করতে হয়৷ দুই বছর পর মঙ্গলবার শ্রেণিকক্ষে ফিরে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হলো শিক্ষার্থীদের৷

প্রতিদিন ক্লাস শুরু হওয়ায় মিরপুর ১২ নম্বরের রশীদ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাওহিদা ইসলামও খুব খুশি৷

তাওহিদা বলে, ‘‘আমাদের সপ্তাহে দুইদিন ক্লাস ছিল৷ বাসায় তো সেভাবে পড়াশোনা করতে ভালো লাগে না৷ স্কুলে বন্ধুবান্ধব, টিচারদের সাথে দেখা হয়৷ সরাসরি ক্লাসের আনন্দটাই অন্যরকম৷’’

প্রতিদিন শ্রেণিকক্ষে ক্লাস শুরু হওয়ায় শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা আবার স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে প্রত্যাশা এ স্কুলেই ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীর মা তাসলিমা আক্তারের৷

তিনি বলেন, ‘‘একদিন সরাসরি ক্লাস করে আসলে ওদের খুব একটা লাভ হয়নি৷ কারণ বাসায় তো নিজেরা পড়তে চায় না৷ যখন পরীক্ষার চাপ থাকে, ক্লাসের পড়ার চাপ থাকে, তখনই পড়া হয়৷ এখন প্রতিদিন ক্লাস দেয়ায় খুবই ভালো হয়েছে৷’’

প্রতিদিন ক্লাস না থাকায় তার বাচ্চা পড়াশোনায় অমনোযোগী হয়ে পড়েছে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান ঢাকা আইডিয়াল প্রিপারেটরি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রের মা৷ তিনি বলেন, ‘‘স্কুল খোলার পর থেকে বেশ কিছুদিন স্কুলে আসবে বলে সে আসেনি৷ বাইরে গেমস খেলেছে৷ আমাকে টিচাররা জানানোর পর আমি একদিন প্রমাণ পেয়েছি৷ স্কুল টাইমে বাইরে ঘুরে পরে সে বাসায় চলে আসে৷ স্কুল পুরাপুরি না খোলার কারণে অনেক বাচ্চার ক্ষতি হয়ে গেছে৷ স্কুলে যাওয়ার অভ্যাস নষ্ট হয়ে গেছে৷ সরকার প্রতিদিন স্কুল খুলে দেওয়ায় খুবই ভালো হয়েছে, এখন ওরা পড়ালেখায় মনোযোগী হবে৷’’

নিয়মিত ক্লাস শুরু হওয়ায় শিক্ষার্থীরাও বেশ উৎসাহী হয়ে ক্লাসে এসেছে বলে জানালেন শিক্ষকরা৷

‘‘আমাদের প্রতিটি ক্লাসই আজ এসেছে৷ মহামারির আগের মতই শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করতে পেরেছি৷ বাচ্চারাও খুব উৎসাহী৷ আমরা যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস নেওয়ার চেষ্টা করছি৷’’ বললেন ঢাকা গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ ভূঁইয়া৷

এনএস/এসিবি (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম) 

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান