1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাংকারে চোখ ধাঁধানো শিল্পের পটভূমি

২০ আগস্ট ২০২০

নাৎসি যুগের অধিকৃত ফ্রান্সের কিছু চিহ্ন এখনো রয়ে গেছে৷ বোর্দো শহরে এমনই এক বিশাল স্থাপনাকে শৈল্পিক রূপ দিয়ে দুঃস্বপ্নমুক্ত করার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে৷ শহরের মানুষ নতুন করে জায়গাটি আবিষ্কারের সুযোগ পাচ্ছেন৷

https://p.dw.com/p/3hDjZ
BdTD Frankreich Kunstprojektion
ছবি: Getty Images/AFP/G. Gobet

পানি, আলো এবং সিমেন্ট – ফ্রান্সের বোর্দো শহরে ‘বাস্যাঁ দ্য লুমিয়ে’ বা আলোর জলাধারে এই তিন উপাদানের চোখ ধাঁধানো মিশ্রণ দেখা যায়৷ উদ্বোধনের সময় চিত্রকর গুস্তাভ ক্লিম্ট ও পোল ক্লে সম্পর্কে আলোর শো দেখানো হলো৷ এই মাল্টিমিডিয়া শো-র দর্শকরা দুই শিল্পীর চিত্রকর্মে কার্যত ডুব দিতে পারলেন৷

বোর্দো শহরের অনেক বাসিন্দার মনে সিমেন্টের এই নির্মাণকাজ শুধু খারাপ স্মৃতি বয়ে আনে৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে জার্মান বাহিনী এই বাংকার গড়ে তুলেছিল৷ ১৫টি বড় সাবমেরিন সেখানে নোঙর করা থাকতো৷ এখন সেই স্থাপনা সত্যি নতুন আকারে আত্মপ্রকাশ করেছে৷ পানির উপর প্রতিফলনের কারণে ১২,০০০ বর্গ মিটার এলাকার উপর এই স্থাপত্য যেন রূপকথার জগতের হালকা দুর্গের মতো দেখাচ্ছে৷

এই রূপান্তর ঘটাতে এক কোটি ৪০ লাখ ইউরো ব্যয় হয়েছে৷ প্রদর্শনীর কর্ণধার আগুস্ত্যাঁ দ্য কোঁয়াতেৎ দ্য ফিল্যাঁ বলেন, ‘‘প্রথমবার এই স্থাপনা দেখে বিশাল আকারের কারণে আমি বিহ্বল হয়ে পড়েছিলাম৷ এখানকার অনবদ্য পরিবেশ একইসঙ্গে কিছুটা ভয় জাগানো, রহস্যময় এবং কাব্যময়৷ ফলে সঙ্গে সঙ্গে আমরা সেখানে কিছু করার প্রেরণা পেয়েছিলাম৷ তবে এমন বিশাল এবং প্রায় বৈরি এক জায়গায় মনোমুদ্ধকর প্রদর্শনীর আয়োজন করা সত্যি এক চ্যালেঞ্জ ছিল৷’’

যুদ্ধের স্মৃতি ভোলাতে শৈল্পিক প্রদর্শনী

এই স্থাপনা গড়ে তুলতে ছয় লাখ ঘন মিটার সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছিল৷ পানির উপরিভাগই দশ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে৷ এমন জায়গায় জটিল অডিও-ভিশুয়াল প্রযুক্তি বসানো মোটেই সহজ কাজ ছিল না৷ অডিও-ভিশুয়াল ডায়রেক্টর সাব্রি সোলতানি বলেন, একশোটিরও বেশি ভিডিও প্রোজেক্টর রয়েছে৷ প্রত্যেকটি লোকচক্ষুর অন্তরালে বসানো হয়েছে৷ সেটা ছিল ভীষণ জটিল কাজ৷ বিভিন্ন উচ্চতায় এই সব ভারি যন্ত্রপাতি পানির মধ্যে লাগাতে হয়েছে৷

যুদ্ধ ও ধ্বংসলীলার সঙ্গে জড়িত ঐতিহাসিকভাবে কুখ্যাত একটি স্থাপনা আলো ও সংগীতের খেলার মাধ্যমে নতুন মাত্রা পেয়েছে৷ শিল্পকলাই এই রূপান্তর ঘটিয়েছে৷ মাটিও মার্সঁ দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে ডুবোজাহাজের এই বাংকার নিয়ে গবেষণা করেছেন৷ তিনি সেই ইতিহাসের মূল্যায়ন করে বলেন, ‘‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মানুষ এই বাংকারের কথা ভুলে গিয়েছিল৷ সেটি যেন বন্দর ও শহরের জন্য বিষাক্ত এক উপহার হয়ে উঠেছিল, যা আর কোনো কাজে লাগার কথা ছিল না৷ শহরের বাসিন্দা ও এই স্থাপনার মধ্যে এক ধরনের আপোশের জন্য সহস্রাব্দের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছিল৷ আজ বোর্দো শহরের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হিসেবে সেটি পরিচিতি পাচ্ছে৷’’

২০২১ সালের শুরু পর্যন্ত বর্তমান প্রদর্শনী চলার কথা৷ তারপর সেখানে অন্যান্য শিল্পীদের সৃষ্টিকর্ম তুলে ধরা হবে৷

এই উৎসব অনুভূতির মাধ্যমে পূর্ণতা পাচ্ছে৷ শিল্প যে কুখ্যাত কোনো জায়গাকে নতুন মাত্রা দেবার ক্ষমতা রাখে, সেই উপলব্ধিও হচ্ছে৷

ইয়েন্স লার্খার/এসবি