1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দিল্লি দাঙ্গা: উমর খালিদ গ্রেফতার

১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০

দিল্লি দাঙ্গার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে জেএনইউ-র সাবেক ছাত্রনেতা উমর খলিদকে গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশ। এ ছাড়াও সীতারাম ইয়েচুরি ও যোগেন্দ্র যাদবের নামে চার্জশিট দিয়েছে তারা।

https://p.dw.com/p/3iQsl
ছবি: Getty Images/AFP

গত ফেব্রুয়ারিতে উত্তর পূর্ব দিল্লির ভয়াবহ দাঙ্গায় জড়িত থাকার দায়ে জেএনইউ-র ছাত্রনেতা উমর খালিদকে গ্রেফতার করল দিল্লি পুলিশেরস্পেশ্যাল সেল। তাঁর মোবাইলও সিজ করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অত্যন্ত কঠোর আইন ইউএপিএ প্রয়োগ করা হয়েছে। এই আইনে জামিন পাওয়া খুবই মুশকিল।

দিল্লি পুলিশ দাঙ্গা নিয়ে একটি অতিরিক্ত চার্জশিটও পেশ করেছে। চার্জশিটে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ও স্বরাজ পার্টির নেতা যোগেন্দ্র যাদব, অর্থনীতিবিদ জয়তী ঘোষ, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অপূর্বানন্দ, চিত্রপরিচালক রাহুল রায়ের নাম চক্রান্তকারী হিসাবে রাখা হয়েছে। দিল্লি পুলিশের দাবি, এক অভিযুক্ত তাঁদের কাছে যে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, তার ভিত্তিতেই এই দুই রাজনৈতিক নেতা সহ বাকিদের নাম চার্জশিটে যোগ করা হয়েছে।  

দিল্লি দাঙ্গায় বিজেপি নেতাদের হেট স্পিচ দায়ী বলে অভিযোগ করেছিলেন বিরোধীরা। কপিল মিশ্র সহ বিভিন্ন নেতার হেট স্পিচের ভিডিও তুলে তাঁরা এই অভিযোগ করেছিলেন। দাঙ্গায় কপিল মিশ্রদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁরা। কিন্তু এখনো পর্যন্ত দিল্লি পুলিশ কোনো বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি। কারো নাম চার্জশিটে রাখা হয়নি। 

উমর খালিদের সংগঠন 'ইউনাইটেড এগেইনস্ট হেট' বিবৃতি দিয়ে বলেছে, তাঁকে পুলিশ ১১ ঘণ্টা ধরে জেরা করে। তারপর গল্প বানানো হয়েছে, খালিদ না কি প্রতিবাদের অপরাধকরণের পিছনে ছিলেন। এভাবেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

খালেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি দুই জায়গায় উত্তেজক ও উস্কানিমূলক ভাষণ দিয়েছেন এবং ডনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফরের সময় লোককে রাস্তা অবরোধের ডাক দিয়েছিলেন। তাছাড়া ক্রাইম ব্রাঞ্চের নারকোটিক্স শাখার সাব ইন্সপেক্টর অরবিন্দ কুমারের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, অরবিন্দ কুমারকে ইনফর্মাররা খবর দিয়েছিল যে, খালিদ, দানিশ বলে এক ব্যক্তি এবং আরো দুই জন মিলে দিল্লি দাঙ্গার পরিকল্পনা তৈরি করেছিলেন। চক্রান্তের অংশ হিসাবে আগ্নেয়াস্ত্র, পেট্রোল বোমা, পাথর সংগ্রহ করা হয়েছিল।

দিল্লি পুলিশের এই সিদ্ধান্তের প্রবল সমালোচনাও হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও স্বরাজ পার্টির নেতা  প্রশান্ত ভূষণ বলেছেন, ''সীতারাম ইয়েচুরি, যোগেন্দ্র যাদব, জয়তী ঘোষদের নাম চার্জশিটে রাখা থেকেই দিল্লি পুলিশের উদ্দেশ্য বোঝা যাচ্ছে। সব ভাষণের ভিডিও আছে। তা সত্ত্বেও কপিল মিশ্র অ্যান্ড কোম্পানিকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।''

যোগেন্দ্র যাদব বলেছেন, ''উমর খালিদের মতো তরুণ, চিন্তাবিদকে ইউএপিএ-তে গ্রেফতার করা হয়েছে দেখে আমি বিস্মিত। খালিদ সবসময়ই হিংসা ও সাম্প্রদায়িকতার নিন্দা করেছেন। তঁর মতো নেতাই ভারতের দরকার। দিল্লি পুলিশ ভারতের ভবিষ্যৎকে খুব বেশিদিন আটকে রাখতে পারবে না।''

সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি টুইট করে বলেছেন, ''দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে কাজ করে। দিল্লি পুলিশ যে অবৈধ, বেআইনি  কাজ করেছে, তাতে শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃত্বের চরিত্র বোঝা যাচ্ছে। বিরোধীরা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দেখিয়েছে এবং সরকারকে প্রশ্ন করেছে, তার জবাবে এই ভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করা হচ্ছে।'' সীতারাম বলেছেন, ''যাঁরা বিষাক্ত ভাষণ দিলেন, তাঁদের কাউকে ধরা হচ্ছে না। এটাই মোদীজির আসল চাল, চরিত্র ও চেহারা।''

সামাজিক মধ্যমে খালিদকে গ্রেফতার করার বিপক্ষে ও পক্ষে দুই ধরনের মতামতই অঢেল দেখা যাচ্ছে।

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)