1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মন মাতাচ্ছে প্রায় জীবন্ত গ্রাফিটি

২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১

রাজনৈতিক বার্তা থেকে গ্রাফিটি এখন শিল্পেরও রূপ নিয়েছে৷ এক ইটালীয় শিল্পী স্প্রে দিয়ে অত্যন্ত বাস্তবসম্মত ও প্রায় ত্রিমাত্রিক ছবি সৃষ্টি করে চলেছেন৷ কখনো পারিশ্রমিক ছাড়াই মানুষকে আনন্দ দিতেও তিনি সৃষ্টির কাজে মেতে উঠছেন৷

https://p.dw.com/p/410nl
DW Euromaxx | Sendung vom 31.07.2021 | 
ছবি: Cosimo Caiffa

প্রায় ফটোর মতো বাস্তব ও ত্রিমাত্রিক মনে হলেও ইটালির স্প্রে শিল্পী কসিমো কাইফা ওরফে ‘কেওনে'-র সৃষ্টিগুলি আসলে হাতে আঁকা ছবি৷ তিনি মিলান শহরের কাছে নিজের বাসস্থান ন্যারভিয়ানো শহরেই বেশিরভাগ ম্যুরাল বা দেওয়ালচিত্র সৃষ্টি করেন৷ সেখানকার দেওয়ালগুলি আদতে শিল্পীর ওপেন এয়ার গ্যালারি হয়ে উঠেছে৷ কসিমো বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে আমি এমন এফেক্ট দেবার চেষ্টা করেছি, যাতে মনে হবে প্রাচীরটি যেন কার্ডবোর্ড দিয়ে তৈরি৷ নারীর মুখচ্ছবি পেছনে আছে, তার হাতে গোল করে কাটা কার্ডবোর্ডের ফুল শোভা পাচ্ছে৷''

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তিনি পরিবেশের সঙ্গে একাত্ম হয়ে যাওয়া মানুষ ও প্রাণীর ছবি আঁকেন৷ তার সর্বশেষ সৃষ্টিকর্ম একটা কচ্ছপ৷ তিনি আগেই কম্পিউটারে সেটির খসড়া তৈরি করে নিয়েছেন৷ কসিমো বলেন, ‘‘বিশাল এই কচ্ছপ দেখলে মনে হবে থামের আড়ালে রয়েছে৷ এ ক্ষেত্রে আমি আকাশের সীমা রাখতে চাই নি৷ একদিকে গাছপালা দেখা যাবে৷ মনে হবে প্রাচীরটি যেন স্বচ্ছ৷''

মন মাতানো গ্রাফিটি ছবি

কসিমো কাইফা জার্মানিতে বড় হয়েছেন৷ কিশোর বয়সেই স্প্রে করে তিনি গ্রাফিটি সৃষ্টি করেছেন৷ ২০০১ সাল থেকে তিনি আবার ইটালিতে বসবাস করছেন৷ সেখানেই কসিমো থ্রিডি আর্টে হাত পাকিয়েছেন৷

৪২ বছরের এই শিল্পী নিজের ছেলের প্রতিকৃতিও সৃষ্টি করেছেন৷ দেখলে মনে হবে, সে বাসার কোণায় বসে আছে৷ কসিমো কাইফা বলেন, ‘‘যে সব স্প্রেয়ার হাইপার রিয়ালিজম সৃষ্টি করেন, তাদের থেকে আমি আলাদা হতে চেয়েছিলাম৷ আমার কাছে সেটা অত্যন্ত আকর্ষণীয়৷ আমি সব কময়ে কম্পোজিশনের মধ্যে প্রাচীর রাখার চেষ্টা করি৷''

অর্ডার অনুযায়ী শিল্পসৃষ্টি করে কসিমো কাইফা যথেষ্ট উপার্জন করছেন৷ কিছুদিন আগে তিনি মিলান শহরে এই প্রথম কোনো বাড়ির বাইরের গোটা দেওয়ালে শিল্প সৃষ্টি করেছেন৷ সেই দেওয়াল ছিল ২১ মিটার উঁচু৷ মিলানের এক বিখ্যাত কোম্পানি তাকে সেই কাজ দিয়েছিল৷ নিজের ইচ্ছামতো কাজের সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি৷

বার বার দূর থেকে তিনি অ্যাংগেল পরীক্ষা করেন৷ কসিমো বলেন, ‘‘এখানে আমি স্প্রে করার সময় নিজের প্রতিকৃতি তুলে ধরেছি৷ আমি ছবির মধ্যে তিনটি ভিন্ন স্তর ও মোটিফ ছাপিয়ে যাওয়া বর্ডারের মাধ্যমে ত্রিমাত্রিক মাত্রা দেবার চেষ্টা করেছি৷''

আসলে তিনি কাঠ দিয়ে আঙুল তৈরি করতে এবং সেই অংশ ছবির বর্ডারের বাইরে রাখতে চেয়েছিলেন৷ কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেই অনুমতি দেয় নি৷ তা সত্ত্বেও থ্রিডি এফেক্ট পাওয়া যাচ্ছে৷ কারণ কসিমো ভবনের প্রান্ত দীর্ঘায়িত করে আঙুলগুলিকে যেন জীবন্ত করে তুলেছেন৷

আবার ন্যারভিয়ানোয় ফেরা যাক৷ অতি বাস্তব কচ্ছপ সৃষ্টি করতে কসিমোর তিন দিন সময় লেগেছে৷ নির্দিষ্ট এক দৃষ্টিকোণ থেকে অপটিক্যাল ইলিউশন সবচেয়ে ভালো বোঝা যায়৷ কসিমো কোনো পারিশ্রমিক ছাড়াই নিছক অনুশীলনের স্বার্থে এই কচ্ছপ সৃষ্টি করেছেন৷  যেসব মানুষ প্রতিদিন কাজে যান, তাদের কিছুটা আনন্দ দিতে, তাদের জীবনে রংয়ের ছোঁয়া আনতেই তিনি এমনটা করেন৷

কারখানার দীর্ঘ প্রাচীরে কসিমো কাইফা নিত্যনতুন আইডিয়া ফুটিয়ে তোলেন৷ প্রাচীরটিকে তিনি ‘হল অফ ফেম' নাম দিয়েছেন৷

কাডেরাইট/গেসনার/এসবি