1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দক্ষিণ কোরিয়ায় কুকুরের মাংস নিষিদ্ধের প্রস্তাব

২৪ নভেম্বর ২০২১

কুকুরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধের আইন করতে চান দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট৷ পশু অধিকার কর্মীরা খুব খুশি৷ তবে এমন আইন প্রণয়নের বিরোধিতাও করছেন একটা পক্ষ৷

https://p.dw.com/p/43QCZ
Südkorea Protest gegen Handel mit Hundefleisch in Seoul | Animal Liberation Wave & Last Chance for Animals
ছবি: Getty Images/AFP/E. Jones

গত সেপ্টেম্বরে কুকুরের মাংস খাওয়া বন্ধের আইন প্রণয়নের আগ্রহ প্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন৷ পশুপ্রেমী প্রেসিডেন্টের প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছেন পশু অধিকার কর্মীরা৷ সমাজের বিভিন্ন অংশ থেকেই সমর্থনের আভাস পেয়েছেন মুন৷ সম্ভাব্য আইনটি নিয়ে তাই সংসদে দীর্ঘ আলোচনা হবে বৃহস্পতিবার ৷

পশুপ্রেমীরা আশাবাদী

প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন নতুন আইনের পক্ষে যুক্তি দেখাতে গিয়ে বলেছিলেন, কুকুরের মাংস খাওয়া আন্তর্জাতিক পরিসরে বেশ বিতর্কিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে, তাছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ায় অনেকেই আগের মতো আর কুকুরের মাংস খেতে চান না, তাই এখনই তা বন্ধ করা উচিত৷ পশুপ্রেমী এবং দক্ষিণ কোরিয়ার তরুণ প্রজন্মের একাংশ মনে করে, সরকার চাইলে এখন দেশে কুকুরের মাংস বিক্রি এবং খাওয়া বন্ধ করা সম্ভব৷

কুকুরের মাংসের জনপ্রিয়তা কমছে

১৯৮৮ সালের সৌল অলিম্পিকের সময় সৌলের সব রেস্তোরাঁয় কুকুরের মাংস বিক্রি বন্ধ রেখেছিল সরকার৷ দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্কৃতির বিষয়ে বিদেশি ক্রীড়াবিদ ও অন্য অতিথিদের মনে একটা ভুল ধারণা জন্ম নিতে পারে- এমন আশঙ্কা থেকেই আসর চলার সময়টায় কুকুরের মাংস খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলার সুযোগ সৌলের কেউ পাননি৷ তখন থেকেই দক্ষিণ কোরিয়ায় কুকুরের মাংসের জনপ্রিয়তা কমছে৷ কুকুরের মাংস বিক্রি হয় এমন রেস্তোরাঁর সংখ্যাও কমছে দ্রুত ৷ ২০১৯ সালে রাজধানী সৌলে এমন রেস্তোরাঁ ছিল একশটিরও কম৷ এক প্রতিবেদনে জানা যায়, দক্ষিণ কোরিয়ার কোনো কোনো শহরে বছরে শতকরা ৩০ ভাগ হারে কুকুরের মাংস খাওয়া কমছে৷

এছাড়া ২০২০ সালে হিউম্যান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল (এইচএসআই)-র এক সমীক্ষায় বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়ার খুব কম মানুষই এখন কুকুরের মাংস খায়৷ সমীক্ষা অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়ার ৮৪ ভাগ মানুষই এখন কুকুরের মাংস খান না৷ সমীক্ষায় অংশ নেয়া ৬০ ভাগ মানুষ জানান, তারা কুকুরের মাংস বিক্রি নিষিদ্ধ করার পক্ষে৷

পাল্টা যুক্তি

তবে এখনো অনেক বয়স্ক মানুষ ঐতিহ্য হিসেবে কুকুরের মাংস নিয়মিত খাওয়ার পক্ষে৷  শিক্ষিত তরুণদেরও ছোট একটা কুকুরের মাংস খাওয়ার ঐতিহ্য ধরে রাখতে চান৷ পাল্টা যুক্তিও দেখান তারা৷ সৌলের সাংমিউং বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর গ্লোবাল ক্রিয়েশন অ্যান্ড কোলাবোরেশন-এর অধ্যাপক ইয়ং-চায়ে সং মনে করেন, আইন করে কুকুরের মাংস খাওয়া বন্ধ করার কোনো দরকার নেই, কারণ, এমনিতেই মানুষের মধ্যে এই ধরনের মাংসের প্রতি আকর্ষণ অনেক কমে যাচ্ছে৷ এ কারণে কুকুরের মাংস পরিবেশন করা হয় এমন রেস্তোরাঁও আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন যা অবস্থা তাতে ধীরে ধীরে একদিন যে কুকুরের মাংস খাওয়া এমনিতেই প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই৷ তবে তিনি মনে করেন, কোনো প্রাণী পুষলেই যে সেই প্রাণীর মাংস খাওয়া যাবে না এ ধারণাটা ভুল৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার কাছে এখনো কুকুরের মাংস খাওয়া ঐতিহ্যের অংশ৷ আমার কোনো বন্ধু বা পরিবারের কেউ রেস্তোরাঁয় গিয়ে খেতে বললে আমি নিশ্চয়ই তাদের সঙ্গে কুকুরের মাংস খাবো৷ তাছাড়া কুকুর পোষা হয় বলে খাওয়া যাবে না এ কথাও ঠিক নয়৷ তাইওয়ানে দেখেছি, কতলোক তার পোষা শূকরটাকে পোশাক পরিয়ে, সাজিয়ে সঙ্গে নিয়ে হাঁটছে৷ কিন্তু তাইওয়ানের মানুষ তো শূকরের মাংস খায়৷''

ইউলিয়ান রিয়াল/ এসিবি