1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

থ্রিলার পেনাল্টি শুটে স্পেনকে হারিয়ে শেষ আটে মরক্কো

৬ ডিসেম্বর ২০২২

ইতিহাসে প্রথমবার কোন অফিসিয়াল ম্যাচে স্প্যানিশদের হারালো মরোক্কানরা৷ সেইসঙ্গে বিশ্বকাপে প্রথমবার নিশ্চিত করল কোয়ার্টার ফাইনাল৷ নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় গোলশূন্য থাকার পর পেনাল্টি শুটআউটে ৩-০ গোলে স্পেনকে হারায় তারা৷

https://p.dw.com/p/4KZBM
WM FIFA 2022 Achtelfinale Marokko vs Spanien | Elfmeterschießen
ছবি: Lee Smith/REUTERS

পেনাল্টি শুটআউটে প্রথম শটটি নেন মরক্কোর সাবিরি৷ তিনি স্প্যানিশ গোলরক্ষক সিমনকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে ফেলেন৷ কিন্তু ম্যাচের হিরো মরক্কো ও স্প্যানিশ ক্লাব সেভিয়ার গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনোকে ফাঁকি দিতে পারেননি স্পেনের সারাবিয়া৷ পরের শটেও মরোক্কোর জয়৷ সিমন ঠেকাতে পারেননি জিয়েককে৷ তবে বোনো ঠিকই ফেরান স্প্যানিশ খেলোয়াড় কার্লোস সোলারকেও৷ মাঠে তখন প্রচণ্ড উত্তেজনা৷ তবে সিমন মরোক্কোর তৃতীয় শটটি ফিরিয়ে লড়াইয়ে দলকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করেন৷ এরপর আসেন স্প্যানিশ অধিনায়ক সার্গিও বুস্কেটস৷ বোনোর হাতে ধরা পড়েন এই অভিজ্ঞ ডিফেন্ডারও৷ সেই সুযোগ কাজে লাগাতে একেবারেই ভুল করেননি মরোক্কান তারকা ডিফেন্ডার হাকিমি৷ সিমনকে সহজেই পরাস্ত করে দলকে টেনে নেন শেষ আটে ৷ ফলে কোয়ার্টার ফাইনালের আগেই বিদায় নিতে হয় স্পেনকে৷ 

এর আগে নির্ধারিত সময়ে কাতারের এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয় দুই দল৷ প্রতিবেশী হলেও দুই দেশ দুই মহাদেশে, মাঝে কেবল জিব্রালটার প্রণালী৷ আর ফুটবল খেলার যোগ্যতাতেও স্পেন অনেক এগিয়ে মরক্কোর চেয়ে৷ ফিফার চোখে স্পেনের অবস্থান যেখানে ৭, মরক্কোর সেখানে ২২৷ অতীত ইতিহাসও স্পেনকেই এগিয়ে রাখে, মুখোমুখি তিন খেলায় দুই জয় ও এক ড্র-তে৷ তবে ২-২ গোলের সেই ড্র ম্যাচটিই সবচেয়ে নিকট অতীত, গত বিশ্বকাপে, রাশিয়াতে৷ এমনকি এবারের আসরেও স্পেন যতটা ভুগে নকআউট পর্বে এল, মরক্কো এল ততটাই সাবলীলভাবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে৷

শেষ ম্যাচে জাপানের কাছে ২-১ গোলে হারের পর স্প্যানিশ কোচ লুই এনরিকে এবার অর্ধেক খেলোয়াড় বদলে দল মাঠে নামালেন৷ অন্যদিকে, মরক্কো দলে পরিবর্তন হল একজনের৷ তবে এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে অদম্য মরক্কোকে আটকাতে তাতেও ঘাম ঝরতে লাগল টিকিটাকাদের৷

প্রথমার্ধে লালসবুজের অ্যাটলাস লায়নেরা কিছুটা ট্যাকলিং কৌশল নিয়ে স্পেন শিবিরকে ব্যতিব্যস্ত রাখলেন৷ স্প্যানিশ ফরোয়ার্ডরাও টুকটাক অর্ধেক সুযোগ নিয়ে ঢুকে পড়ছিলেন মরোক্কান ডিফেন্সে৷ কিন্তু তা পূর্ণ সুযোগে পরিণত হচ্ছিল না৷ ১১ মিনিটে স্প্যানিশ ডি বক্সের ঠিক বাইরে স্পটকিক পায় মরক্কো৷ পিএসজি ডিফেন্ডার হাকিমি অবশ্য তা প্রতিপক্ষের গোলপোস্টের ওপরে মারেন৷ ২৫ মিনিটে প্রথমাার্ধের সেরা সুযোগ আসে স্পেনের সামনে৷ কিন্তু গাভি ক্রসবারে হিট করেন৷ পরের মিনিটে আসেনসিও মারেন সাইডনেটে৷ ৩৩ মিনিটে মরোক্কান ফরোয়ার্ড জারোউরির দূর থেকে শট ঠেলে দিয়ে জাল বাঁচান স্প্যানিশ গোলরক্ষক সিমন৷ পুরো প্রথমার্ধ জুড়ে আক্রমণের সুযোগ তৈরির চেষ্টায় ছিল দু'দলই৷ কিন্তু প্রতিপক্ষের সীমানায় মরক্কোকে যতটা ভয়ঙ্কর মনে হচ্ছিল, স্প্যানিশদের ততটা নয়, যদিও বলের দখল বেশি ছিল টিকিটাকাদের কাছেই৷

প্রথমার্ধে প্রতিপক্ষের গোলের দিকে মাত্র একটি শট করা স্পেন দ্বিতীয়ার্ধে চাপিয়ে খেলার চেষ্টা করে শুরু থেকেই৷ কিন্তু মরক্কোর প্রতিরক্ষার দেয়াল ভেদ করা কঠিন হয়ে পড়ছিল৷ প্রথামার্ধের ধারাবাহিকতাই যেন চলছিল৷ ৫৪ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে বাম পাশ থেকে ফ্রি কিকের সুযোগ স্পেনের সামনে৷ আসেনসিওর ছুঁয়ে দেয়া পাস থেকে কড়া শট নেন অলমো৷ কিন্তু অ্যাটলাস লায়ন্স গোলরক্ষক বোনো তা ঘুরিয়ে দেন৷ কোন বিপদ হয় না তাদের৷ ৮৬ মিনিটে এবার মরোক্কানদের সামনে সুযোগ৷ হাকিমির চমৎকার ক্রস৷ কিন্তু বদলি খেলোয়াড় চেদিরা পায়ে ঠিকমত লাগাতে পারেননি৷ অতিরিক্ত সময়ের পঞ্চম ও শেষ মিনিটে মরোক্কান ডিবক্সের বাইরে বাঁ পাশ থেকে আবারো স্পটকিকের সুযোগ স্প্যানিশদের পক্ষে৷ আবারো অলমো৷ তার শটটি বিপদজনক হয়ে সোজা চলে আসে গোলরক্ষক বোনোর সামনে৷ ফেরত দিয়ে জাল বাঁচান তিনি৷

নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলায় ফল না আসায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে৷

অতিরিক্ত সময়ের পঞ্চম মিনিটে পরিষ্কার সুযোগ হাতছাড়া করেন মরোক্কান ফরোয়ার্ড চেদিরা৷ সিমনকে ওয়ান টু ওয়ান পেয়েও ঠিকমত শট নিতে পারেননি তিনি৷ এদিকে, স্পেনের ভাগ্য তখনও বদলায়নি৷ লুই এনরিকে বদলে চলেছেন খেলোয়াড়৷ কিন্তু সেই একই ধরনের ফলহীন আক্রমণ৷ সেই সুযোগে পালটা আক্রমণে ১০৩ মিনিটে সেরা সুযোগটি আসে চেদিরার সামনে৷ অ্যাটলেটিকো বিলবাও গোলরক্ষক সিমন অসাধারণ দক্ষতায় সেটিকেও আটকে দেন৷ অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধেও সমানতালে চেষ্টা করে দুই দল৷ স্পেনের পক্ষে সেরা সুযোগটি আসে অতিরিক্ত সময়ের ১২৩ মিনিটে৷ বাঁ পাশ থেকে আসা ক্রসকে সারাবিয়া পায়ে লাগাতে পারলেও তা দূরের পোস্টকেই শুধু ছুঁয়ে যায়৷ শেষ পর্যন্ত দুই শিবিরের রক্ষণভাগের দক্ষতা ও ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতায় গোলের দেখা পায়নি কোন দলই৷ ফলে পেনাল্টি শুটআউটে নির্ধারিত হয় ম্যাচের ভাগ্য৷